নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘যেদিন মনোনয়ন দাখিল করেছে সেদিনই তো নির্বাচন হয়ে গেছে। তাই বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনো গুরুত্ব বহন করে না।’
গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের আয়োজনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে তোপখানা রোডসহ আশপাশের এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হয়। ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন বর্জন করেছে, কারণ এদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। জনগণের ইচ্ছার কোনো প্রতিফলন হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য কীভাবে দিনের ভোট রাতে করবে অথবা ভুয়া সাজানো একটি নির্বাচন করবে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ভুয়া একটি ফলাফল তৈরি করে তাদের ইচ্ছামত একটি সরকার গঠন করবে। একদলীয় বাকশাল সরকার গঠন করবে, সেই উদ্দেশ্যেই তারা এই নির্বাচনের নামে একটা নাটক তৈরি করছে। ইতোমধ্যেই, প্রত্যেকটা দেশ বলে দিয়েছে বাংলাদেশের যে নির্বাচন হচ্ছে, এটা কোনো নির্বাচন নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়। তারা ক্ষমতার মাধ্যমে মেগা দুর্নীতি করে অবৈধ সংসদ গঠন করবে। বিগত ১৫ বছরে এই সরকার ঋণের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের উন্নীত করেছে। এই দায়-দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের ট্যাক্সের ওপর। এই টাকা তারা লোপাট করে বিদেশে পাচার করে বেগমপাড়া তৈরি করেছে। তারা এই টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে। বাংলাদেশের মানুষ আজ থেকে ৫২ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছিল। আমরা বলেছিলাম একটি স্বাধীন দেশ চাই, যে দেশে থাকবে গণতন্ত্র গরিব মানুষের স্বাধীনতা।’
মঈন খান বলেন, ‘পাকিস্তানের ২২টি পরিবার সমস্ত সম্পদ কুক্ষিগত করে নিয়েছিল। আজ এই আওয়ামী বাকশালী সরকার তাই করছে। সেই ২২ পরিবারের পরিবর্তে তাদের আত্মীয়স্বজন মিলে ২২০টি পরিবার তৈরি করেছে। এজন্যই বাংলাদেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত এক বছর ধরে প্রতিবাদ করেছি। শুধু একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এ দেশের পরিবর্তন আনার জন্য। আমরা সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা চাই বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশের পরিবর্তন আনবে। এই সরকার দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন বলেন, ‘এখন এই সরকারের স্লোগান হলো আমার ভোট আমি দেব, দিনের ভোট রাতে দেব। এই সরকারকে বুঝতে হবে ২০২৪ সাল কিন্তু ২০১৪ সাল নয়। এই ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে নেবে, এ চিন্তা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে মোকাবেলা করব কিন্তু শান্তি ভঙ্গ করব না। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব, ইনশাল্লাহ।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সহ-সভাপতি খলিলুর রহমানের (ভিপি ইব্রাহিম) নেতৃত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সহ-সভাপতি আবুল বাশার আকন, জামাল উদ্দিন খান মিলন, যুগ্ম সম্পাদক ফেরদাউস পাটোয়ারী, কৃষিবিদ মিজানুর রহমান লিটু, ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকি, শাহ মনিরুর রহমান, কৃষিবিদ শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হারুন অর রশিদ, অ্যাডভোকেট রবিউল হোসেন রবি, কৃষিবিদ আনিসুজ্জামান আনিস, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, সম্পাদক শাওন, আব্দুর রাজি, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন বেপারী, আব্দুল্লাহ আল নাঈম, প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, একরামুল হক, অ্যাডভোকেট রেহেনা পারভীন, অ্যাডভোকেট দিল আফরোজ রোশন, রহিমা ইসলাম, মিলিমা ইসলাম মিলি, মহানগর উত্তর কৃষক দলের সদস্য সচিব শফিকুর রহমান মিঠু, দক্ষিণের সদস্য সচিব মির হাসান কামাল তাপস প্রমুখ।