ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু বলেছেন, আমরা মনে করেছিলাম, শেখ হাসিনার পতন হয়তো আর দেখে যেতে পারব না। আল্লাহ ছাড় দেয়। কিন্তু ছ্যাইড়া দেয় না। গতকাল মঙ্গলবার ঝিনাইদহ জেলার ঘোড়শাল ইউনিয়ন বিএনপির এক জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কামাল আজাদ বলেন, শেখ হাসিনা জবর-দখল পাথরের মতো বাংলার মাটিতে আপনাদের বুকের ওপর চেপে বসে ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা ছিল না, সার্বভৌমত্ব ছিল না। অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থা। তার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন আপনারা। আমরা সংগ্রাম করে শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে পারিনি। আমরা মনে করেছিলাম হাসিনার পতন হয়তো আমরা আর দেখে যেতে পারব না। কিন্তু আল্লাহ ছাড় দেয়, ছ্যাইড়া দেয় না। আল্লাহ ছেড়ে দেয় নাই। ছাত্র জনতার মাত্র এক মাসের আন্দোলনের ফসল শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। শেখ হাসিনার আসল দেশ হচ্ছে ইন্ডিয়া। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দাদার বাড়ি ইন্ডিয়া, বাবার বাড়ি ইন্ডিয়া। এ কারণে আজ শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া পালিয়ে গেছেন। ইন্ডিয়া গিয়েও তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে জ্বালাচ্ছেন। তিনি সাপের মতো একটি প্রাণী; যে মরলেও পেছনে নড়ে। মরে গেছেন কর্মী, তিনি রাস্তায় রেখে চলে গেছে। আর ওইখানে গিয়ে তিনি নতুন নতুন গুটি চালছেন।
আমেরিকার ক্ষমতা পরিবর্তনে বাংলাদেশে ছড়ানো গুজব প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি পান্নু বলেন, ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছে। আমেরিকার অবস্থা খুপ খারাপ। ইউক্রেনে রাশিয়া যুদ্ধের কারনে সারা বিশ্বের আবস্থাই খারাপ। ট্রাম্প তার নিজের দেশ সামলানো নিয়েই ব্যস্ত। ট্রাম কি শেখ হাসিনাকে ইন্ডিয়া থেকে এনে বাংলাদেশ বসিয়ে দেয়ার জন্য বসে রয়েছেন! তিনি হঠাৎ করে ট্রাম্পের ছবি নিয়ে বাংলাদেশে মিছিল করবেন। ছাত্র ভাইদের নামিয়ে দিলাম, শুনলাম লীগের খবর নেই। এই যে একেক সময় এসব করেই তিনি বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা করতে চান। আমার জীবদ্দশায় বা আপনাদের জীবদ্দশায় আওয়ামী লীগ আর বাংলার মাটিতে আসতে পারবে না। কারণ ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার জন্য মামলা করা হয়েছে। এক সময় জামায়াতকে নিষিদ্ধ দল বলা হতো। এক সময় আমাদের নিষিদ্ধ দল বলা হতো। এখন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ দল হিসেবে পরিচিত হয়েছে। পাতি আওয়ামী লীগ থেকে বড় আওয়ামী লীগ একটাও প্রকাশ্যে নেই। এই আন্দোলনে ছাত্র নেমেছেন, বাপ-মা সবাই নেমেছেন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে চিরস্থায়ীভাবে বিতাড়িত করা হয়েছে।
দ্রব্যমুল্য প্রসঙ্গে উপজেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট পান্নু বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম ঢাকার ১৩ জয়াগায় নাজ্যমুল্যে ডিম বিক্রি হবে। গরিব মানুষ যে ডিম কিনে খাবে, শেখ হাসিনা সে টাকাও ছেলের কাছে, মেয়ের কাছে পাচার করে দিয়েছে। আপনি জমি বিক্রি করে ব্যংকে টাকা রেখেছেন অথচ ব্যাংকে টাকা পাচ্ছেন না। ওই টাকা গেল কোথায়? এই টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। এত আকাম কুকাম করে রেখে গেছেন। মেগা প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছেন। এই দেশ ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগবে।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ