আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে বিমান হামলার নির্দেশ দেওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজ দলের মধ্যেই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন।
গত ২৭ জুন ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালায়। ওই হামলায় ইরান-সমর্থিত অন্তত পাঁচজন মিলিশিয়া নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানা বলেছে, হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে তিনজন।
বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর গত ফেব্রুয়ারিতে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছিল। সেই হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হন।
মার্কিন জনগণকে ‘নিরাপদ’ রাখার জন্য প্রেসিডেন্টকে সংবিধানে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা ব্যবহার করেই বাইডেন মধ্যপ্রাচ্যে বিমান হামলার নির্দেশ দেন।
কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা এমন হামলার নির্দেশ আগেও দিয়েছেন। পরিণতিতে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে।
এমন যুদ্ধের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়ার কথা মার্কিন সংবিধানে বলা আছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সংবিধানের আর্টিকেল ২-এর ক্ষমতাবলে বিদেশের মাটিতে এমন হামলার নির্দেশ দিয়ে আসছেন। বাইডেনও একই কাজ করলেন।
কংগ্রেসের অনুমতি না নিয়ে এমন হামলার নির্দেশ প্রদানের জন্য বাইডেনের ওপর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট সদস্য ক্রিস মারফি বলেছেন, ভোটারদের কোনো অনুমোদন ছাড়াই এমন হামলার নির্দেশের পরিণামে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। কংগ্রেসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হলে এমন হামলা বা যুদ্ধ নিয়ে ভোটারদের মতামত প্রতিফলিত হওয়ার সুযোগ থাকে।
বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক সিনেট কমিটির অপর ডেমোক্র্যাট সদস্য বব ম্যানেনডেজ বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এমন ক্ষমতার আইনগত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইচ্ছুক। সংবিধানের আর্টিকেল-২-এ প্রেসিডেন্টের এমন ক্ষমতার বিষয়টি রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় প্রশাসনেই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে গত সোমবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে শুনানি গ্রহণ করবে।
চলতি সপ্তাহে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে মার্কিন বিমান হামলার পর বাগদাদ বিবৃতি দিয়েছে। তারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। ইরাক বলেছে, এমন হামলার মাধ্যমে তাদের দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করা হয়েছে।
বাগদাদের মার্কিন-সমর্থক সরকারের এমন বিবৃতি পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। বাগদাদের এমন অবস্থানে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের হামলার নির্দেশের সমালোচকেরা এ নিয়ে কথা বলার বাড়তি সুযোগ পেয়েছেন।
মার্কিন বিমান হামলার পর ইরাকে অবস্থানরত আমেরিকানদের লক্ষ্য করে রকেট ছুড়েছে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা। মার্কিন বিমান হামলা বা পাল্টা রকেট হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য অবশ্য পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যে বিমান হামলার নির্দেশ দিয়ে প্রশ্নের মুখে বাইডেন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ