নিজস্ব প্রতিবেদক : পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণের বিষয়ে নি¤œতম মজুরি বোর্ডে লিখিত আপত্তিপত্র দিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান শ্রমিকনেতা তাসলিমা আখ্তারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মজুরি বোর্ডের কাছে আপত্তিপত্র জমা দেয়। এরপর মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবি ও শ্রমিকনেতা বাবুল হোসেনের মুক্তির দাবিতে মজুরি বোর্ড থেকে একটি মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। সরকারের ঘোষিত মজুরিকে প্রত্যাখ্যান করে নেতৃবৃন্দ আপত্তিপত্রে উল্লেখ করেন, এই ঘোষণা ৪০ লাখ শ্রমিককে হতাশ করেছে, তারা মেনেও নেয়নি। অধিকাংশ শ্রমিক সংগঠনও মজুরি বোর্ডের মজুরিকে মানেনি। নেতৃবৃন্দ আপত্তিপত্রে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, মজুরি বোর্ড বর্তমান বাজারের অবস্থা এবং শ্রমিকদের ইনক্রিমেন্ট ও মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় নেয়নি। যদিও তারা দাবি করছে, গতবারের চেয়ে এবার ৫৬.৬০% মোট মজুরি বাড়িয়েছে। একবারেই ভুল ও মিথ্যা দাবি। ২০১৮ সালের ঘোষিত মজুরি ৮০০০ টাকা, যা ডলারে ছিল প্রায় ৯৫ ডলার ৩৫ সেন্ট (তৎকালীন এক ডলার বাংলাদেশি টাকায় ৮৩.৯০ টাকা ছিল)। একইসাথে গতবারের ৮০০০ টাকা ২০২৩ সালে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং টাকার মান কমে যাওয়ায় পরিণত হয়েছে মাত্র ৭২ ডলারে। শ্রমিকনেতারা বলেন, নতুন ঘোষিত মজুরি ডলার ও ইনক্রিমেন্টের হিসাবে শতকরা ৫৬.২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে, তথ্যটি সঠিক নয়। কেবল ডলার ও ইনক্রিমেন্ট সমন্বয় করে যৎসামান্য লামসাম যুক্ত করে নতুন ঘোষণা দিলেই সেটি মজুরি বৃদ্ধি হয় না। ফলে বর্তমানে ডলারের দাম এবং বাজারদরের সঙ্গে ৪ জনের একটি পরিবারে চলার সঙ্গতি রেখে মজুরি বৃদ্ধি জরুরি। কাজেই আমরা ১২,৫০০ টাকা প্রত্যাহার করছি। আপত্তিপত্রে আমরা মজুরি পুনঃনির্ধারণ করার জোর দাবি হাজির করছি। ন্যূনতম মজুরির দিতে হবে ২৫,০০০ টাকা। এ দিন বিকেলে গ্রেপ্তার শ্রমিকনেতা ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনের বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ‘অবগতকরণ চিঠি’ দিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। চিঠিতে বলা হয়, বাবুল হোসেনকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ও মামলায় হাজারো অজ্ঞাতনামাদের সঙ্গে তাকেও যুক্ত দেখানো হচ্ছে, কিন্তু তিনি সেদিন অন্য একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন। অন্যদিকে যেখানে সংগঠন করা, মজুরি বৃদ্ধিতে আন্দোলন করাও- একজনের সাংবিধানিক অধিকার; সেখানে বাবুল হোসেনদের গ্রেপ্তার করে জেলে ঢুকানো নাগরিক অধিকারহরণ ও অন্যায় বলে আমরা মনে করি। আপত্তিপত্র জমাদান ও অবগতকরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, সহ-সাধারণ সম্পাদক দীপক রায়, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল ইসলামসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
মজুরি বোর্ডে আপত্তিপত্র দিল গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি
জনপ্রিয় সংবাদ