প্রযুক্তি ডেস্ক: মঙ্গলে মানুষের বসবাসকে বাস্তবে রূপ দিতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। লাল গ্রহটিতে মানুষ পাঠানোর ক্ষেত্রে মাস্ক ও নাসার সামনে কিছু চ্যালেঞ্জিং বিষয় রয়েছে। কিন্তু কী সেগুলো?
মাস্ক বলেছেন, তার কোম্পানি স্পেসএক্স ২০২৯ সালেই মানুষকে মঙ্গলে পাঠাতে পারবে। অন্যদিকে, নাসার কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০৪০ সালের মধ্যেও মানুষকে মঙ্গলে পাঠানোর বিষয়টি এক “দুঃসাহসী” লক্ষ্য হবে।
চীনও পিছিয়ে নেই, ২০৩৮ সালের মধ্যে মঙ্গলে স্বয়ংক্রিয় এক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। মাস্কের দৃষ্টিতে মঙ্গলে যাওয়া মানে হচ্ছে মানবজাতিকে টিকিয়ে রাখা এবং পৃথিবীর ওপর বাড়তে থাকা হুমকি যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধ থেকে রক্ষা পাওয়া। অন্যদিকে বিজ্ঞানীদের কাছে মঙ্গল যাওয়ার বিষয়টি এক ধরনের উত্তর খোঁজার জায়গা। তাদের অনুমান, বিশেষ করে মহাবিশ্বে প্রাণের বিস্তার ও বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে মঙ্গল।
অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘মার্স সোসাইটি’র প্রেসিডেন্ট রবার্ট জুব্রিন বলেছেন, “প্রাথমিক অবস্থায় পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহ দুটি ছিল যমজের মতো। দুটোই ছিল পাথুরে গ্রহ, যেখানে তরল পানি ও বায়ুমণ্ডলে ছিল প্রধানত কার্বন ডাইঅক্সাইড। ‘এ তত্ত্ব যদি সত্যি হয় যে ঠিকমতো ভৌত ও রাসায়নিক পরিবেশ পেলে প্রাণ নিজের থেকেই তৈরি হতে পারে তাহলে মঙ্গলেও কোনো সময় প্রাণের অস্তিত্ব থাকা উচিত।’
তবে মঙ্গলে মানুষ পাঠানো ও সেখানে বসতি গড়ার মানে হচ্ছে এমন অনেক কঠিন প্রযুক্তিগত সমস্যা ও ঝুঁকি মোকাবিলা করা, যা আগে কখনো মানুষের সামনে আসেনি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র ‘মুন টু মার্স প্রোগ্রাম’-এর ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অমিত ক্ষত্রিয় বলেছেন, “মঙ্গলে নামার বিষয়টা জটিল। সেখানে যাওয়ার পথটাই অনেক বেশি জটিল। আপনি জানেন, সেখানে রেডিয়েশন বা বিকিরণের পরিবেশ খুবই ভয়ানক। জীবনধারণের ব্যবস্থাও একটা বড় সমস্যা। এসব কিছুর নির্ভরযোগ্যতা খুবই বেশি হওয়া দরকার।
‘যেসব প্রযুক্তি আমাদের দরকার যেমন রকেট চালনার সক্ষমতা– এ সবকিছুতেই আমাদের আরো ভালো করতে হবে।’
মঙ্গলে পৌঁছানোর জন্য মাস্কের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির মূল অংশ হলো এখন পর্যন্ত তৈরি হওয়া সবচেয়ে উঁচু ও শক্তিশালী রকেট ‘স্টারশিপ’। মার্চে স্টারশিপ রকেটের অষ্টমবারের মতো পরীক্ষামূলক ফ্লাইট চালায় মাস্কের মহাকাশ কোম্পানি স্পেসএক্স। সেই ফ্লাইটে সুপার হেভি বুস্টার সফলভাবে ফেরত আনা গেলেও, স্টারশিপ যানটি বিস্ফোরিত হয়। ফলে অনেক ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে ও বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ব্যাঘাত ঘটে।
স্পেসএক্স শিগগিরই স্টারশিপের পরবর্তী পরীক্ষামূলক ফ্লাইট চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিএনবিসি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত ‘মার্স ডেজার্ট রিসার্চ স্টেশন’-এ মঙ্গলে বসবাস কেমন হতে পারে, তার অনুকরণে গবেষণা কাজ চলছে।