ঢাকা ০৮:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

মগবাজারে বিস্ফোরণস্থলের বাতাসে ‘হাইড্রোকার্বন গ্যাস’

  • আপডেট সময় : ০১:৪১:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাতাসে ‘হাইড্রোকার্বন’ গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ।
গতকাল সোমবার দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, “আমরা গ্যাস ডিটেকটর নিয়ে গিয়েছিলাম। এখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের আলামত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করেছি- এটা হাইড্রেকার্বন ডিটেক্ট করে। এখানে হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।” এর আগে ফায়ার সার্ভিস বলেছিল, মগবাজার আড়ংয়ের উল্টো দিকে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিনতলা ওই ভবনে গ্যাস জমেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছে।
তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে রাজি হননি ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সাজ্জাদ হোসাইন। প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদও বলেছেন, বিস্ফোরণে উৎস সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলার ‘সুযোগ নেই’।
“সেখানে বাতাসে গ্যাস পাওয়া গেছে, কিন্তু গ্যাস থেকেই যে বিস্ফোরণ হয়েছে- এমনটা এখনই বলা যায় না। দুর্ঘটনাস্থলে গ্যাসের লাইনে লিকেজ হতে পারে, এটাই যে অন্যতম কারণ হতে হবে, তা নয়।”
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “উৎসটা কী এখন পর্যন্ত বলা যাবে না। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তা নিশ্চিতের সুযোগও নেই।ৃ একটার কারণে আরেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইলেকট্রিক সার্কিটের কারণে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে আগুন লাগলে আশপাশে সিলিন্ডার বা ন্যাচারাল গ্যাসের লাইন থাকুক- তাহলে এসবও এর আওতায় চলে আসে।” ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ধ্বংস্তূপের মধ্যে ঢুকে কোথাও মুভ করব, এমন সুযোগ ছিল না। ছাদও ভাঙা। দুয়েক জায়গায় গ্যাস ডিটেক্টর নিয়ে কাজ করা হয়েছে।”
প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক জানান, মগবাজারের ঘটনায় বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে, সেখানেও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি থাকবেন। “তবে এ ক্ষেত্রে আলাদা প্রতিবেদন দেওয়া হবে না; পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনেই আমাদের বিষয়টি যুক্ত হয়ে যাবে।”
গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে মগবাজার ওয়্যারলেস গেইট এলাকা কেঁপে ওঠে। পড়ে দেখা যায়, তিন তলা ভবনটির ধসে পড়ার মত দশা হয়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় রাস্তার উল্টো দিকে আড়ং, বিশাল সেন্টার, রাশমনো হাসনপাতালসহ আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তায় থাকা দুটি বাস। তিন তলা ওই ভবনের দোতলায় সিঙ্গারের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল। বিস্ফোরণে দেয়াল ভেঙে পণ্যের কার্টন বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়।
নিচতলায় খাবারের দোকান শরমা হাউজ ও বেঙ্গল মিটের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল, যা মোটামুটি মিশে গেছে। লোহার গ্রিল, আসবাবপত্র, ভবনের বিভিন্ন অংশ ছিটকে এসেছে রাস্তায়।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, বোমা হামলা মনে করে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সব বিষয় মাথায় রেখেই তারা তদন্ত করবেন। “এটা স্পষ্ট হওয়ার জন্য আমরা দুয়েকদিন অপেক্ষা করি। বিস্ফোরণের লক্ষ্য ছিল- এদিকটা (বাড়ির উত্তর) এবং এটি একমুখী ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। সাধারণত এটা যদি বিস্ফোরক হত, তাহলে বহু দিকে মানে, তিন চার দিকে যেত। আর এই ঘটনায় গ্লাসের ভাঙা টুকরা ছাড়া আমরা অন্য কিছু খুঁজে পাইনি।” তবু বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে পুলিশের ‘বম ডিসপোজাল ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে বেনজীর জানান।
বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে ৪ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন : রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত সাতজনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চারজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল সোমবার ঢামেক হাসপাতাল মর্গে এসে স্বজন ও পরিচিতরা এই চারজনের লাশ শনাক্ত করেন। বাকি তিনজনের মরদেহ আগেই স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মো. রুহুল আমিন ম-ল (৩৩), আবুল কাশেম মোল্লা (৪৫), মুস্তাফিজুর রহমান (২৫) ও স্বপন মিয়া। নিহত রুহুল আমিনের ভগ্নিপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমরা গত রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের খবরের মাধ্যমে এ দুর্ঘটনার কথা জানতে পারি। পরে খোঁজ করে সকাল ৮টার দিকে মর্গে এসে লাশ শনাক্ত করি।’ তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানায়। নিহত রুহুল আমিন ওই গ্রামের খবির ম-লের ছেলে। তিনি বর্তমানে শান্তিবাগ পানির ট্যাংকি এলাকায় থাকতেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক।
নিহত আবুল কাশেমের ভায়রা জামাল উদ্দিন জানান, কাশেমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক। নিহত মুস্তাফিজুর রহমানকে শনাক্তকারী আইয়ুব আলী জানান, মুস্তাফিজ কবি নজরুল কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনি মগবাজার এলাকায় ওষুধ কেনার জন্য গিয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হন। নিহতের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানায়। তার বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক। বর্তমানে তিনি যাত্রাবাড়ী এলাকায় থাকতেন। নিহত স্বপন মিয়ার মরদেহ শনাক্তকারী নুরুল ইসলাম জানান, স্বপন মিয়া পেশায় প্রাইভেটকারচালক। তার বাসা ৩০০/১ উত্তর নয়াটোলা হাতিরঝিল এলাকায়। স্বপন দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসিন সরদার বলেন, মরদেহ চারটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। একজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের স্বজনরা এলে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এদিকে মগবাজারের বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে পাঁচজন এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি। তারা হলেন- নূরনবী (৩৫), ইমরান (২৫), রাসেল (২৭) জাফর ও কালু মিয়া (৩৩)। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। অন্যদিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন ও ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন ভর্তি রয়েছেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঢামেক হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে সুবাস (৩২) ও শামীম (৩০) এবং ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে কামাল (৪২) ও হৃদয় (২৮) ভর্তি রয়েছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মগবাজারে বিস্ফোরণস্থলের বাতাসে ‘হাইড্রোকার্বন গ্যাস’

আপডেট সময় : ০১:৪১:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাতাসে ‘হাইড্রোকার্বন’ গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ।
গতকাল সোমবার দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, “আমরা গ্যাস ডিটেকটর নিয়ে গিয়েছিলাম। এখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের আলামত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করেছি- এটা হাইড্রেকার্বন ডিটেক্ট করে। এখানে হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।” এর আগে ফায়ার সার্ভিস বলেছিল, মগবাজার আড়ংয়ের উল্টো দিকে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিনতলা ওই ভবনে গ্যাস জমেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছে।
তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে রাজি হননি ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সাজ্জাদ হোসাইন। প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদও বলেছেন, বিস্ফোরণে উৎস সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলার ‘সুযোগ নেই’।
“সেখানে বাতাসে গ্যাস পাওয়া গেছে, কিন্তু গ্যাস থেকেই যে বিস্ফোরণ হয়েছে- এমনটা এখনই বলা যায় না। দুর্ঘটনাস্থলে গ্যাসের লাইনে লিকেজ হতে পারে, এটাই যে অন্যতম কারণ হতে হবে, তা নয়।”
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “উৎসটা কী এখন পর্যন্ত বলা যাবে না। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তা নিশ্চিতের সুযোগও নেই।ৃ একটার কারণে আরেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইলেকট্রিক সার্কিটের কারণে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে আগুন লাগলে আশপাশে সিলিন্ডার বা ন্যাচারাল গ্যাসের লাইন থাকুক- তাহলে এসবও এর আওতায় চলে আসে।” ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ধ্বংস্তূপের মধ্যে ঢুকে কোথাও মুভ করব, এমন সুযোগ ছিল না। ছাদও ভাঙা। দুয়েক জায়গায় গ্যাস ডিটেক্টর নিয়ে কাজ করা হয়েছে।”
প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক জানান, মগবাজারের ঘটনায় বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে, সেখানেও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি থাকবেন। “তবে এ ক্ষেত্রে আলাদা প্রতিবেদন দেওয়া হবে না; পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনেই আমাদের বিষয়টি যুক্ত হয়ে যাবে।”
গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে মগবাজার ওয়্যারলেস গেইট এলাকা কেঁপে ওঠে। পড়ে দেখা যায়, তিন তলা ভবনটির ধসে পড়ার মত দশা হয়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় রাস্তার উল্টো দিকে আড়ং, বিশাল সেন্টার, রাশমনো হাসনপাতালসহ আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তায় থাকা দুটি বাস। তিন তলা ওই ভবনের দোতলায় সিঙ্গারের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল। বিস্ফোরণে দেয়াল ভেঙে পণ্যের কার্টন বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়।
নিচতলায় খাবারের দোকান শরমা হাউজ ও বেঙ্গল মিটের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল, যা মোটামুটি মিশে গেছে। লোহার গ্রিল, আসবাবপত্র, ভবনের বিভিন্ন অংশ ছিটকে এসেছে রাস্তায়।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, বোমা হামলা মনে করে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সব বিষয় মাথায় রেখেই তারা তদন্ত করবেন। “এটা স্পষ্ট হওয়ার জন্য আমরা দুয়েকদিন অপেক্ষা করি। বিস্ফোরণের লক্ষ্য ছিল- এদিকটা (বাড়ির উত্তর) এবং এটি একমুখী ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। সাধারণত এটা যদি বিস্ফোরক হত, তাহলে বহু দিকে মানে, তিন চার দিকে যেত। আর এই ঘটনায় গ্লাসের ভাঙা টুকরা ছাড়া আমরা অন্য কিছু খুঁজে পাইনি।” তবু বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে পুলিশের ‘বম ডিসপোজাল ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে বেনজীর জানান।
বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে ৪ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন : রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত সাতজনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চারজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল সোমবার ঢামেক হাসপাতাল মর্গে এসে স্বজন ও পরিচিতরা এই চারজনের লাশ শনাক্ত করেন। বাকি তিনজনের মরদেহ আগেই স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মো. রুহুল আমিন ম-ল (৩৩), আবুল কাশেম মোল্লা (৪৫), মুস্তাফিজুর রহমান (২৫) ও স্বপন মিয়া। নিহত রুহুল আমিনের ভগ্নিপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমরা গত রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের খবরের মাধ্যমে এ দুর্ঘটনার কথা জানতে পারি। পরে খোঁজ করে সকাল ৮টার দিকে মর্গে এসে লাশ শনাক্ত করি।’ তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানায়। নিহত রুহুল আমিন ওই গ্রামের খবির ম-লের ছেলে। তিনি বর্তমানে শান্তিবাগ পানির ট্যাংকি এলাকায় থাকতেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক।
নিহত আবুল কাশেমের ভায়রা জামাল উদ্দিন জানান, কাশেমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক। নিহত মুস্তাফিজুর রহমানকে শনাক্তকারী আইয়ুব আলী জানান, মুস্তাফিজ কবি নজরুল কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনি মগবাজার এলাকায় ওষুধ কেনার জন্য গিয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হন। নিহতের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানায়। তার বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক। বর্তমানে তিনি যাত্রাবাড়ী এলাকায় থাকতেন। নিহত স্বপন মিয়ার মরদেহ শনাক্তকারী নুরুল ইসলাম জানান, স্বপন মিয়া পেশায় প্রাইভেটকারচালক। তার বাসা ৩০০/১ উত্তর নয়াটোলা হাতিরঝিল এলাকায়। স্বপন দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসিন সরদার বলেন, মরদেহ চারটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। একজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের স্বজনরা এলে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এদিকে মগবাজারের বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে পাঁচজন এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি। তারা হলেন- নূরনবী (৩৫), ইমরান (২৫), রাসেল (২৭) জাফর ও কালু মিয়া (৩৩)। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। অন্যদিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন ও ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন ভর্তি রয়েছেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঢামেক হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে সুবাস (৩২) ও শামীম (৩০) এবং ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে কামাল (৪২) ও হৃদয় (২৮) ভর্তি রয়েছেন।