ঢাকা ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

ভয়ংকর মাদক অক্সি-মরফোনে ঝুঁকছে যুব সমাজ

  • আপডেট সময় : ০১:৪২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ওষুধের আড়ালে ভয়ংকর মাদক অক্সি-মরফোনের ব্যবহার বাড়ছে যুব সমাজের মধ্যে। তীব্র ব্যথানাশক এই ওষুধটি মূলত মাদকসেবীদের মস্তিষ্কে অল্প সময়ের জন্য আনন্দ অনুভূতির সৃষ্টি করে। এটি নিতে না পারলে মাদকসেবীরা অস্থির হয়ে ওঠে। যেকোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত করতেও পিছপা হয় না।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর (ডিএমপি ডিবি) গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এর আগে রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই মাদক চোরাকারবারিকে আটক করে ডিএমপির ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতওয়ালী জোনাল টিম। আটক দুজন হলেন আলমগীর সরকার ও জাহিদুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৩ হাজার পিস অক্সি-মরফোন উদ্ধার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, অক্স-মরফোন হলো মরফিনের একটি এনালগ, যা এনালজেসিক ড্রাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি ইনজেকশন থেকে ওরাল ফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে। অক্সি-মরফোন মানব মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় নার্ভাস সিস্টেমে কাজ করে। তীব্র ব্যথানাশক হিসেবে ক্যানসার, হার্টসহ দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী রোগীদের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। মরফিন একটি ইউফোররিক ড্রাগ। যা মানব মস্তিষ্কে প্রচ- আনন্দ অনুভূতি তৈরি করে। শরীরে সাময়িকভাবে দুঃখ-ব্যথা ভুলিয়ে দেয়। ব্যথার সিগনাল গিয়ে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করতে পারে না। মস্তিষ্ক বোধহীন অসাড় হয়ে যায়। এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মূলত মাদকসেবীরা অক্সি-মরফোন গুঁড়া করে যেকোনো সিরাপ বা পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খায়। যুবসমাজ বিশেষ করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এর ব্যবহার গোয়েন্দা নজরে এসেছে। আটককৃতদের বরাত দিয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, তারা ভয়ংকর এই ড্রাগ সংগ্রহ করে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল। এই ওষুধটি জিসকো ফার্মা তৈরির অনুমোদন করে থাকে। তারা বছরে পাঁচ মাসে পাঁচ লাখ তৈরি করে নির্দিষ্ট ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করে। এর দাম প্যাকেটের গায়ে লেখা রয়েছে ৪০০ টাকা। তবে এই ওষুধটি বাজারে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সারাদেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাদের লাইসেন্স দেওয়ার অনিয়ম হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, লাইসেন্স বেশি দেওয়ার কথা ঢাকায়। কিন্তু বরিশাল ও খুলনাতে বেশি পরিমাণ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। কেন দেওয়া হয়েছে সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ফারুক হোসেন, ডিবি লালবাগের উপকমিশার রাজিব আল মাসুদ, অতিরিক্ত উপকমিশনার হাফিজ আল আসাদ এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভয়ংকর মাদক অক্সি-মরফোনে ঝুঁকছে যুব সমাজ

আপডেট সময় : ০১:৪২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ওষুধের আড়ালে ভয়ংকর মাদক অক্সি-মরফোনের ব্যবহার বাড়ছে যুব সমাজের মধ্যে। তীব্র ব্যথানাশক এই ওষুধটি মূলত মাদকসেবীদের মস্তিষ্কে অল্প সময়ের জন্য আনন্দ অনুভূতির সৃষ্টি করে। এটি নিতে না পারলে মাদকসেবীরা অস্থির হয়ে ওঠে। যেকোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত করতেও পিছপা হয় না।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর (ডিএমপি ডিবি) গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এর আগে রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই মাদক চোরাকারবারিকে আটক করে ডিএমপির ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতওয়ালী জোনাল টিম। আটক দুজন হলেন আলমগীর সরকার ও জাহিদুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৩ হাজার পিস অক্সি-মরফোন উদ্ধার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, অক্স-মরফোন হলো মরফিনের একটি এনালগ, যা এনালজেসিক ড্রাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি ইনজেকশন থেকে ওরাল ফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে। অক্সি-মরফোন মানব মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় নার্ভাস সিস্টেমে কাজ করে। তীব্র ব্যথানাশক হিসেবে ক্যানসার, হার্টসহ দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী রোগীদের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। মরফিন একটি ইউফোররিক ড্রাগ। যা মানব মস্তিষ্কে প্রচ- আনন্দ অনুভূতি তৈরি করে। শরীরে সাময়িকভাবে দুঃখ-ব্যথা ভুলিয়ে দেয়। ব্যথার সিগনাল গিয়ে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করতে পারে না। মস্তিষ্ক বোধহীন অসাড় হয়ে যায়। এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মূলত মাদকসেবীরা অক্সি-মরফোন গুঁড়া করে যেকোনো সিরাপ বা পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খায়। যুবসমাজ বিশেষ করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এর ব্যবহার গোয়েন্দা নজরে এসেছে। আটককৃতদের বরাত দিয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, তারা ভয়ংকর এই ড্রাগ সংগ্রহ করে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল। এই ওষুধটি জিসকো ফার্মা তৈরির অনুমোদন করে থাকে। তারা বছরে পাঁচ মাসে পাঁচ লাখ তৈরি করে নির্দিষ্ট ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করে। এর দাম প্যাকেটের গায়ে লেখা রয়েছে ৪০০ টাকা। তবে এই ওষুধটি বাজারে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সারাদেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাদের লাইসেন্স দেওয়ার অনিয়ম হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, লাইসেন্স বেশি দেওয়ার কথা ঢাকায়। কিন্তু বরিশাল ও খুলনাতে বেশি পরিমাণ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। কেন দেওয়া হয়েছে সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ফারুক হোসেন, ডিবি লালবাগের উপকমিশার রাজিব আল মাসুদ, অতিরিক্ত উপকমিশনার হাফিজ আল আসাদ এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ উপস্থিত ছিলেন।