আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এরপরই দেশগুলোর বিরুদ্ধে একে একে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের দেশ। তবে আফ্রিকার দেশগুলোর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপের বিষয়ে মুখ খুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের জের ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও এর প্রতিবেশীদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। একইসঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। সিরিল রামাফোসার ভাষায়, নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের জের ধরে আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ‘বৈজ্ঞানিকভাবে অযৌক্তিক’। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা। গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বতসোয়ানা, বেলজিয়াম, হংকং ও ইসরায়েল, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্কেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
এরপরই দক্ষিণ আফ্রিকাসহ এর আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিশ্বের বহু দেশ। এছাড়া ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ঘিরে বিশ্বজুড়ে প্রচ- হইচই শুরু হয়েছে। দেশে দেশে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক দেশই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করে দেয়।
একজন বিশেষজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ওমিক্রন’ নাম দিয়েছে।
গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনার নতুন প্রজাতিকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। সংস্থাটি বলেছে, করোনার নতুন ধরনটির স্পাইক প্রোটিনে ৩২ বার রূপ বদল ঘটেছে। সাধারণত ভাইরাসের এ ধরনের বারবার রূপ বদল সেটিকে আরও বেশি সংক্রামক এবং বিপজ্জনক করে তোলে। গত রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী সকল দেশকে তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহরের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত বুধবার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পর রোববারই প্রথম এ বিষয়ে কথা বলেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার দেশগুলোর ওপরে আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কেবল এই দেশগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে। এছাড়া মহামারি মোকাবিলা এবং কাটিয়ে উঠতে আমাদের সক্ষমতাকেও এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে খাটো করা হয়েছে।’
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক, এখনই প্রত্যাহার করতে হবে : দ. আফ্রিকা
ট্যাগস :
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক
জনপ্রিয় সংবাদ