অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: ভ্যাটের ব্যাপারে চাপ আছে, ভ্যাট কমাতে বলা হয়। সব ভ্যাট যদি কমিয়ে দেন সরকারের আয় কোথায়—এমন প্রশ্ন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্সের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ প্রশ্ন করেন। বিএআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব।
বাজেটের মাধ্যমে ভ্যাট না বাড়িয়ে বছরের শুরুতে বিভিন্ন পণ্যের ভ্যাট বাড়ানোর কারণ হিসেবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভ্যাটের ব্যাপারে চাপ আছে। ভ্যাট কমাতে বলা হয়। সব ভ্যাট যদি কমিয়ে দেন সরকারের আয় কোথায়? আমরা ধার করছি। আবার বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বলছে—কোনো ক্রমেই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ কমাবেন না। তিনি বলেন, ভ্যাট বাড়িয়েছি, সেটা নিয়ে বহু কথাবার্তা হচ্ছে। এখনো হচ্ছে। কিছু কিছু ভুল তো হয়। কিছু কিছু আড়ালে চলে যায়। তখন আপনারা বলেন, আমরা চেষ্টা করি সেটা করার জন্য।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, একটা জিনিস মনে রাখবেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সব সময় পপুলার ডিমান্ডে করা যায় না। এটা আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আমাকে এখন অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন, সব ট্যাক্স কমিয়ে দেন, ভ্যাট কমিয়ে দেন। রাজস্ব বাড়ান। তারা বলেন, আমরা এতগুলো কথাবার্তা বললাম, বাস্তবায়ন তো কিছু হচ্ছে না। বাস্তবায়ন যে হচ্ছে না, তা নয়।
এই মুর্হূতে ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক থেকে অর্থ আনতে অর্থনীতির কতগুলো শর্ত মানতে হবে। আমরা কখনো শর্তে ফেইল করিনি। এই বিষয়ে তাদের সাথে অনেক আলোচনা হয়েছে। তারা বলেন-ভ্যাট বাড়াও। ভ্যাট বাড়িয়ে নানারকম বিপত্তি হয়েছে। এগুলো খুব সেনসিটিভ, এক দুই টাকা বাড়ানো মানে প্রবাসীদের জন্য না, আমাদের এখানে আমদানিকারক আছে, নানারকম অবলিগেশন আছে। যত কিছু আমদানি করছে, সেগুলোর দাম বেড়ে যাবে। ভ্যাট বাড়ানোর পর চপ্পলের দাম বেড়েছে, সেটা নিয়ে কিছু মেয়ে প্রতিবাদ করেছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভ্যাটের একটা হুমকি থাকে, সেখানে সস্তা চপ্পলে যদি ভ্যাট থাকে, সেটা আমি রিভিউ করব।
যেমন ২০০ টাকা দামের উপরে বিস্কুটে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এইচএস কোড থাকে, সেখানে অনেকগুলো পণ্য থাকে। সেখানে যদি চপ্পল থাকে তাহলে একটু সমস্যা। অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি যে এত টাকা-পয়সা আনছি, এডিবি ডিসেম্বর ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেবে, জুনে বিশ্বব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন দেবে এবং আইএমএফ মার্চে না হয় জুনে ২ বিলিয়ন ডলার দেবে। তাদের কতগুলো শর্ত আছে। যেমন ট্যাক্স, ভ্যাট বাড়ানোর। সেখানে আমি যৌক্তিকভাবে দেখলাম যে, আয়কর বাড়ালে সংসদে যেতে হবে। আর যদি ভ্যাট ট্যাক্স বাড়াই তাহলে একটি এসআরও দিয়ে আমি করতে পারব। এখানে কিন্তু বেশি টাকা না। মাত্র ১২ হাজার কোটি টাকা। এতে কিছু প্রভাব পড়েছে ঠিক।