ঢাকা ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫

ভোটে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়: তারেক রহমান

  • আপডেট সময় : ১০:০০:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বিরাট সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

যতক্ষণ না জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ ও সরকার গঠিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয় বলেও মনে করেন তিনি।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন তারেক রহমান।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত বছরের ৫ অগাস্ট ‘কংসরূপী নৃশংস গণহত্যাকারী স্বৈরাচার’ বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। অন্তর্র্বতী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের যে দোসর, এরা নানা কৌশলে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠার অপচেষ্টায় প্রতিনিয়ত লিপ্ত।

তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ সংসদ ও সরকার যতক্ষণ না গঠিত হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়।

তারেক রহমান বলেন, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু একটি দেশের জনসংখ্যার চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য একটি শব্দমাত্র, এরচেয়ে বেশি কিছু নয়। এ বাংলাদেশে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে, বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী কিংবা সংশয়বাদী, দেশের প্রতিটি নাগরিকের গর্বিত পরিচয়- আমরা বাংলাদেশি।’

বাংলাদেশ সবার- এ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সকল নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবে- এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত, ধর্ম, দর্শন যার যার, রাষ্ট্র কিন্তু সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। সুতরাং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবার সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন একটি বিরাট বড় সুযোগ।

সনাতনী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য লন্ডনে থাকা তারেক রহমান বলেন, বিতাড়িত পলাতক স্বৈরাচারের সময় গত দেড় দশকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, কিংবা তাদের ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, হাতেগোনা দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘুকেন্দ্রিক অধিকাংশ হামলার ঘটনা কিন্তু কোন ধর্মীয় কারণে হয়নি।

ঘটনাগুলো যাচাই বাছাই করলে দেখা যাবে এসবের নেপথ্যে ছিল অবৈধ লোভ-লাভের জন্য দুর্বলের ওপর সবলের হামলা। কিংবা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সেজন্যই আপনাদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে। সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।

তিনি বলেন, গত ১৭ বছর আপনাদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এ গভীর সত্যিটি যদি সনাতন ধর্মের অনুসারীরা বুঝতে পেরে থাকেন, অবশ্যই এটি আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি।

মানবিক ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে সনাতনীদের এই উপলব্ধি আগামী দিনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, সকলেরই জেনে রাখা প্রয়োজন, রাষ্ট্র এবং সমাজে নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করতে কোনো দলীয় পরিচয়ে আবদ্ধ থাকা কারো জন্য জরুরি নয়। কে সংখ্যাগুরু, কে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সদস্য, শুধুমাত্র এ পরিচয়ে রাষ্ট্র ও সমাজে একজন নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গ্যারান্টি কিন্তু হতে পারে না।

পলাতক যে স্বৈরাচারের শাসন আমল ছিল, সে শাসনামলে মাসের পর মাস বছরের পর বছর যাদেরকে আয়নাঘরের নির্জন অন্ধকারে প্রতিনিয়ত মৃত্যু আতংকে কাটাতে হয়েছে তাদের সবাই কিন্তু কথিত সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর সদস্য। কিন্তু তাদের এ পরিচয় তাদের সম্মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

একটি রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র ন্যায় বিচার, আইনের শাসন রয়েছে কিনা সেটিই সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রে যদি আইনের শাসন না থাকে আপনি আমি আমরা তাহলে কেউ নিরাপদ নই। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনোই বিকল্প নেই। একমাত্র আইনের শাসনই যেকোনো মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চিয়তা দিতে পারে। চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হল মাঠে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রদীপ চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন মঠ মন্দিরের সাধু সন্ন্যাসীরা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোটে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়: তারেক রহমান

ভোটে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়: তারেক রহমান

আপডেট সময় : ১০:০০:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বিরাট সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

যতক্ষণ না জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ ও সরকার গঠিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয় বলেও মনে করেন তিনি।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন তারেক রহমান।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত বছরের ৫ অগাস্ট ‘কংসরূপী নৃশংস গণহত্যাকারী স্বৈরাচার’ বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। অন্তর্র্বতী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের যে দোসর, এরা নানা কৌশলে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠার অপচেষ্টায় প্রতিনিয়ত লিপ্ত।

তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ সংসদ ও সরকার যতক্ষণ না গঠিত হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়।

তারেক রহমান বলেন, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু একটি দেশের জনসংখ্যার চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য একটি শব্দমাত্র, এরচেয়ে বেশি কিছু নয়। এ বাংলাদেশে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে, বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী কিংবা সংশয়বাদী, দেশের প্রতিটি নাগরিকের গর্বিত পরিচয়- আমরা বাংলাদেশি।’

বাংলাদেশ সবার- এ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সকল নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবে- এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত, ধর্ম, দর্শন যার যার, রাষ্ট্র কিন্তু সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। সুতরাং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবার সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন একটি বিরাট বড় সুযোগ।

সনাতনী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য লন্ডনে থাকা তারেক রহমান বলেন, বিতাড়িত পলাতক স্বৈরাচারের সময় গত দেড় দশকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, কিংবা তাদের ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, হাতেগোনা দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘুকেন্দ্রিক অধিকাংশ হামলার ঘটনা কিন্তু কোন ধর্মীয় কারণে হয়নি।

ঘটনাগুলো যাচাই বাছাই করলে দেখা যাবে এসবের নেপথ্যে ছিল অবৈধ লোভ-লাভের জন্য দুর্বলের ওপর সবলের হামলা। কিংবা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সেজন্যই আপনাদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে। সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।

তিনি বলেন, গত ১৭ বছর আপনাদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এ গভীর সত্যিটি যদি সনাতন ধর্মের অনুসারীরা বুঝতে পেরে থাকেন, অবশ্যই এটি আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি।

মানবিক ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে সনাতনীদের এই উপলব্ধি আগামী দিনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, সকলেরই জেনে রাখা প্রয়োজন, রাষ্ট্র এবং সমাজে নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত করতে কোনো দলীয় পরিচয়ে আবদ্ধ থাকা কারো জন্য জরুরি নয়। কে সংখ্যাগুরু, কে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সদস্য, শুধুমাত্র এ পরিচয়ে রাষ্ট্র ও সমাজে একজন নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গ্যারান্টি কিন্তু হতে পারে না।

পলাতক যে স্বৈরাচারের শাসন আমল ছিল, সে শাসনামলে মাসের পর মাস বছরের পর বছর যাদেরকে আয়নাঘরের নির্জন অন্ধকারে প্রতিনিয়ত মৃত্যু আতংকে কাটাতে হয়েছে তাদের সবাই কিন্তু কথিত সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর সদস্য। কিন্তু তাদের এ পরিচয় তাদের সম্মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

একটি রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র ন্যায় বিচার, আইনের শাসন রয়েছে কিনা সেটিই সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রে যদি আইনের শাসন না থাকে আপনি আমি আমরা তাহলে কেউ নিরাপদ নই। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনোই বিকল্প নেই। একমাত্র আইনের শাসনই যেকোনো মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চিয়তা দিতে পারে। চট্টগ্রাম নগরীর জে এম সেন হল মাঠে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রদীপ চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন মঠ মন্দিরের সাধু সন্ন্যাসীরা।