ঢাকা ০৫:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

ভোটে ব্যয় ২৩শ কোটি টাকা

  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২৩শ কোটি টাকা। এ নির্বাচনে আসনপ্রতি ৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশাল এ বাজেটের বেশির ভাগ অর্থই ভোটের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে ব্যয় হবে বলে জানা গেছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৫৪ কোটি ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এই ব্যয়ের তিন ভাগের দুই ভাগই রাখা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবারের নির্বাচনে ৩ হাজারের মতো ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা ও মোতায়েনের সময় বাড়ায় ব্যয় বেড়েছে। ইসির নির্দেশে সশস্ত্র বাহিনী গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে ভোটের মাঠে নেমে গেছেন। তবে ভোটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বুধবার থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এবার সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন বাহিনীর ৮ লাখের মতো লোকবল দায়িত্বে নিয়োজিত থাকছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ১ হাজার ২২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ১ হাজার ৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এতে আসনপ্রতি ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৭ কোটি টাকার বেশি। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, অতিরিক্ত ব্যয়ের চাহিদা অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা বরাদ্দ দেওয়াও শুরু করেছে। সংসদ নির্বাচনে ব্যয় বরাদ্দের বিষয়ে অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, একটা জিনিস নিশ্চিত করেছি আমরা- নির্বাচনী ব্যয়, যেন পর্যাপ্ত ব্যয় বরাদ্দ হয়। এবার ইসির নির্দেশনায় ডিউটির সংখ্যা বেড়েছে, সময় বেড়েছে, এ কারণে ব্যয়ও বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ইসির জন্য ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি, সময় বাড়ানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদি কারণে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। জেনেছি, দুই হাজার কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ লাগবে। ইতোমধ্যে ইসি সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ৭০২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। বাকিটাও দেব। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
টিকে রইলেন ১৯৭০ প্রার্থী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে টিকে আছেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের পর সারাদেশে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বৈধ প্রার্থী ছিলেন ১৮৯৬ জন। কিন্তু পরে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে হাইকোর্টে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান। যাদের মধ্যে থেকে বুধবার পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৭৫ জন। সবশেষ হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পান। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৯৭০ জন টিকে রইলেন। ইসি জানায়, সর্বশেষ হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৬ জন। এছাড়া জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির রয়েছে ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রয়েছে ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের ৫৬ জনসহ ২৮টি রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৪ জন। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে ৪৩৬ জন। মোট প্রার্থীর মধ্যে ৭৫ জন প্রার্থী হাইকোর্ট থেকে আপিলের মাধ্যমে তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। যেসব রাজনৈতিক দল দ্বাদশ সংসদ ভোটে অংশগ্রহণ করছে- ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পাটি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পাটি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), গণতন্ত্রী পার্টি। তফসিল ঘোষণার পর গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হয়। এরপর থেকেই প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হবে। অর্থাৎ, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে। ৭ জানুয়ারি সকাল ৮ থেকে ভোটগ্রহণ হবে।
বিদেশি পর্যবেক্ষক দুই শতাধিক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
গতকাল বুধবার বিকাল পর্যন্ত ১৮৬ জন পর্যবেক্ষক-সাংবাদিককে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, যাদের মধ্যে ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আর ৫৯ জন গণমাধ্যমকর্মী। আরো কিছু বিদেশি পর্যবেক্ষকের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে অশোক কুমার বলেন, “সব মিলিয়ে ২০০ এর বেশি হবে।”
ইসির জনসংযোগ শাখা থেকে অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষকদের যে তালিকা পাওয়া গেছে তাতে রয়েছেন- ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার, যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই এবং এনডিআইর ১২, সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের (এসএডিএফ) ছয়, দক্ষিণ কোরিয়ার এইচএল গ্রুপের এক, এসএনএএস আফ্রিকার দুই, মুসলিম কমিশন নেপালের দুই, যুক্তরাষ্ট্রের বিরনি ল পিএলএলসির এক, আফ্রিকা হাউজ লন্ডনের দুই, বি স্ট্রাটেজিক পার্টনারের (ব্রিটিশ) এক, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (জাপান) এক, মুতাশ ক্রিয়েট রিসার্চের (জাপান) এক, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ভারত) এক, শ্রীংলকার মেম্বার অব পার্লামেন্টের এক জন এবং অস্ট্রেলিয়ার এক জন গবেষক রিসার্চার ও ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এছাড়াও জাপানের এক নাগরিক, মালদ্বীপের অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল লিং-এর তিন জন, ব্রিটিশ হাই কমিশন-ঢাকার ১০ জন, ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেটিক কো-অপারেটিভ অরগানাইজেশনের (থাইল্যান্ড) একজন, ভিটেম ফাউন্ডেশন পোল্যান্ড’র একজন, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন, ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারিয়ানস কংগ্রেসে’র দুই জন, আমেনিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটিজিস’র একজন, আমেরিকার এক জন ব্যবসায়ী, অ্যাম্বাসি অব জাপানের ১৭ জন, আফ্রিকান ইলেকটোরাল অ্যালাইয়েন্সের ১২ জন, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের দুই জন, ভারতের এক নাগরিক, এসএনএএস আফ্রিকা’র একজন, নেপাল সরকার ও বিভিন্ন দলের পাঁচ জন, নেপালের দীপেন্দ্র কন্ডেল ইনিশিয়েটিভ’র তিন জন, মালয়েশিয়ার তিন বিশিষ্ট জন, দি গোল্ড ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি’র তিন আমেরিকান, ইআরপি ট্রেডি লিমিটেড’র নরওয়ের এক জন, অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যানিটি’র এক জন ইরাকি, এক জন কানাডিয়ান নাগরিক ও জিবিপি ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির একজনও সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। ৫৯ জন সংবাদিকদের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রের এক জন, ইইউ রিপোর্টার এক জন, জার্মানির জুঙ্গে ফ্রেইহেট’র একজন, দিল্লি টেলিভিশন লিমিটেডের দুই জন, জাপানের দি ইয়োমিরি সিমবানের এক জন, ভারতের আজকালের এক জন, জাপানের কিওডু নিউজের এক জন, ভারতের দ্য অ্যাসোসিয়েট প্রেসের তিন জন, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার দুই জন, জার্মানির এআরডি জার্মান রেডিওর দুই জন ও ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক জন। এছাড়াও জাপানের নাইকিই আইএনসি, জিজি প্রেস ও এনএইচকে (জাপান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন) এর পাঁচ জন; নেপালের কেন্দ্রবিন্দু অনলাইন পিটিবি লিমিটেড’র এক জন; ভারতের ডিএসটিভি দার্জিলিং-এর এক জন, উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এর এক জন, দি টেলিগ্রাফ’র এক জন, এএনআই’র এক জন, এবিপি নিউজ’র দুই জন, আজকাল প্বালিশার্স লিমিটেডে’র একজন, এবিপি নেটওয়ার্ক’র দুই জন, এএনএম নিউজ প্রাইভেট লিমিটেড’র এক জন ও জি মিডিয়া’র দুই জন; বিবিসি নিউজ (ভারতীয় ও আমেরিকান) চার জন; এরাইজ নিউজ’র এক বিট্রিশ; ফ্রান্সের প্যারিস লা মন্ডে’র এক জন; সুইডিশ রেডিও-এর এক জন; অ্যাজেন্সি ফ্রান্স প্রেস’র (এএফপি) সাত জন; রয়টার্সের দুই ভারতীয়; আল জাজিরার এক ব্রিটিশ; অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের এক জন; চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কে দুই ভারতীয়; এআরডি জার্মান টিভি’র এক ভারতীয়; কলকাতার সংবাদ প্রতিদিন’র একজন; দি ওয়াল কলকাতা’র এক জন; ব্রিটিশ এক ফ্রিল্যান্সার ও বেলজিয়ান এক জন সাংবাদিকদের ভোট দেখার অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখতে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষককেও অনুমোদন দিয়েছে ইসি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি সংস্থার ২০২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। আগামী ৬ জানুয়ারি দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন নিয়ে ব্রিফ করবে নির্বাচন কমিশন।
৬ জেলায় নৌবাহিনী, থাকছে ৬ যুদ্ধজাহাজ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ৬ জেলায় ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত নৌবাহিনীর ৬টি যুদ্ধজাহাজ ১৯টি উপজেলায় দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (৩ জানুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আইএসপিআর জানায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-উপলক্ষে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে উপকূলীয় এলাকার ৬টি জেলার ১১টি আসনে মোতায়েন করা হয়েছে। সংসদীয় আসনগুলো হলো-ভোলা ১, ২, ৩ ও ৪, কক্সবাজার ২ ও ৪, চট্টগ্রাম ৩, নোয়াখালী ৬, বরগুনা ১ ও ২ এবংবাগেরহাট-৩। আইএসপিআর আরও জানায়, নির্বাচন উপলক্ষে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তিন হাজারের বেশি নৌ সদস্য এবং ৬টি যুদ্ধজাহাজ ১৯টি উপজেলায় ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো-ভোলা জেলার ভোলা সদর, বোরহান উদ্দিন, দৌলতখান, তজুমুদ্দিন, লালমোহন, চর ফ্যাশন, মনপুরা, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, বরগুনা জেলার বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী, বামনা, বেতাগী, পাথরঘাটা এবং বাগেরহাট জেলারমোংলা উপজেলা। নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী নৌবাহিনী উপকূলীয় অঞ্চলসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য নিয়োজিত রয়েছে।
সহিংসতা রোধে বিজিবিকে তৎপর থাকার নির্দেশ: নির্বাচনী সহিংসতা রোধে বিজিবিকে তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো সহিংসতা ও নাশকতা রোধে সদা তৎপর থাকতে হবে।
গতকাল বুধবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা জেলা সেক্টরের শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলায় বিজিবির নির্বাচনী বেজ ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি একথা বলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ভোটাররা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে তার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনকালীন দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবিকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। নির্বাচনকালীন যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও নাশকতা রোধে বিজিবির প্রতিটি সদস্যকে সদা তৎপর থাকতে নির্দেশ দেন বিজিবি মহাপরিচালক। মহাপরিচালকের পরিদর্শনকালীন বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিজিবির ঢাকা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে বুধবার ভোর থেকে মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় নিয়োজিত হয়েছে জানিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫ উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় ৪টি উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। উপকূলীয় দুটি জেলাসহ (ভোলা ও বরগুনা) সর্বমোট ১৯টি উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও আনসার বাহিনী এবং প্রায় পৌনে ২ লাখ পুলিশ-র‌্যাব, কোস্ট গার্ড নির্বাচনকালীন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভোটে ব্যয় ২৩শ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২৩শ কোটি টাকা। এ নির্বাচনে আসনপ্রতি ৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশাল এ বাজেটের বেশির ভাগ অর্থই ভোটের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে ব্যয় হবে বলে জানা গেছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাজেট বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৫৪ কোটি ৪৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এই ব্যয়ের তিন ভাগের দুই ভাগই রাখা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবারের নির্বাচনে ৩ হাজারের মতো ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা ও মোতায়েনের সময় বাড়ায় ব্যয় বেড়েছে। ইসির নির্দেশে সশস্ত্র বাহিনী গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে ভোটের মাঠে নেমে গেছেন। তবে ভোটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বুধবার থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এবার সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন বাহিনীর ৮ লাখের মতো লোকবল দায়িত্বে নিয়োজিত থাকছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ১ হাজার ২২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ১ হাজার ৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এতে আসনপ্রতি ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৭ কোটি টাকার বেশি। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, অতিরিক্ত ব্যয়ের চাহিদা অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা বরাদ্দ দেওয়াও শুরু করেছে। সংসদ নির্বাচনে ব্যয় বরাদ্দের বিষয়ে অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, একটা জিনিস নিশ্চিত করেছি আমরা- নির্বাচনী ব্যয়, যেন পর্যাপ্ত ব্যয় বরাদ্দ হয়। এবার ইসির নির্দেশনায় ডিউটির সংখ্যা বেড়েছে, সময় বেড়েছে, এ কারণে ব্যয়ও বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ইসির জন্য ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি, সময় বাড়ানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদি কারণে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। জেনেছি, দুই হাজার কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ লাগবে। ইতোমধ্যে ইসি সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ৭০২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। বাকিটাও দেব। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
টিকে রইলেন ১৯৭০ প্রার্থী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে টিকে আছেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের পর সারাদেশে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বৈধ প্রার্থী ছিলেন ১৮৯৬ জন। কিন্তু পরে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে হাইকোর্টে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান। যাদের মধ্যে থেকে বুধবার পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৭৫ জন। সবশেষ হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পান। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৯৭০ জন টিকে রইলেন। ইসি জানায়, সর্বশেষ হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৬ জন। এছাড়া জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির রয়েছে ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রয়েছে ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের ৫৬ জনসহ ২৮টি রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৪ জন। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে ৪৩৬ জন। মোট প্রার্থীর মধ্যে ৭৫ জন প্রার্থী হাইকোর্ট থেকে আপিলের মাধ্যমে তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। যেসব রাজনৈতিক দল দ্বাদশ সংসদ ভোটে অংশগ্রহণ করছে- ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পাটি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পাটি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), গণতন্ত্রী পার্টি। তফসিল ঘোষণার পর গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হয়। এরপর থেকেই প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হবে। অর্থাৎ, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে। ৭ জানুয়ারি সকাল ৮ থেকে ভোটগ্রহণ হবে।
বিদেশি পর্যবেক্ষক দুই শতাধিক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
গতকাল বুধবার বিকাল পর্যন্ত ১৮৬ জন পর্যবেক্ষক-সাংবাদিককে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, যাদের মধ্যে ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আর ৫৯ জন গণমাধ্যমকর্মী। আরো কিছু বিদেশি পর্যবেক্ষকের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে অশোক কুমার বলেন, “সব মিলিয়ে ২০০ এর বেশি হবে।”
ইসির জনসংযোগ শাখা থেকে অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষকদের যে তালিকা পাওয়া গেছে তাতে রয়েছেন- ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার, যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই এবং এনডিআইর ১২, সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের (এসএডিএফ) ছয়, দক্ষিণ কোরিয়ার এইচএল গ্রুপের এক, এসএনএএস আফ্রিকার দুই, মুসলিম কমিশন নেপালের দুই, যুক্তরাষ্ট্রের বিরনি ল পিএলএলসির এক, আফ্রিকা হাউজ লন্ডনের দুই, বি স্ট্রাটেজিক পার্টনারের (ব্রিটিশ) এক, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (জাপান) এক, মুতাশ ক্রিয়েট রিসার্চের (জাপান) এক, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ভারত) এক, শ্রীংলকার মেম্বার অব পার্লামেন্টের এক জন এবং অস্ট্রেলিয়ার এক জন গবেষক রিসার্চার ও ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এছাড়াও জাপানের এক নাগরিক, মালদ্বীপের অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল লিং-এর তিন জন, ব্রিটিশ হাই কমিশন-ঢাকার ১০ জন, ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেটিক কো-অপারেটিভ অরগানাইজেশনের (থাইল্যান্ড) একজন, ভিটেম ফাউন্ডেশন পোল্যান্ড’র একজন, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন, ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারিয়ানস কংগ্রেসে’র দুই জন, আমেনিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটিজিস’র একজন, আমেরিকার এক জন ব্যবসায়ী, অ্যাম্বাসি অব জাপানের ১৭ জন, আফ্রিকান ইলেকটোরাল অ্যালাইয়েন্সের ১২ জন, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের দুই জন, ভারতের এক নাগরিক, এসএনএএস আফ্রিকা’র একজন, নেপাল সরকার ও বিভিন্ন দলের পাঁচ জন, নেপালের দীপেন্দ্র কন্ডেল ইনিশিয়েটিভ’র তিন জন, মালয়েশিয়ার তিন বিশিষ্ট জন, দি গোল্ড ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি’র তিন আমেরিকান, ইআরপি ট্রেডি লিমিটেড’র নরওয়ের এক জন, অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যানিটি’র এক জন ইরাকি, এক জন কানাডিয়ান নাগরিক ও জিবিপি ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির একজনও সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। ৫৯ জন সংবাদিকদের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রের এক জন, ইইউ রিপোর্টার এক জন, জার্মানির জুঙ্গে ফ্রেইহেট’র একজন, দিল্লি টেলিভিশন লিমিটেডের দুই জন, জাপানের দি ইয়োমিরি সিমবানের এক জন, ভারতের আজকালের এক জন, জাপানের কিওডু নিউজের এক জন, ভারতের দ্য অ্যাসোসিয়েট প্রেসের তিন জন, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার দুই জন, জার্মানির এআরডি জার্মান রেডিওর দুই জন ও ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক জন। এছাড়াও জাপানের নাইকিই আইএনসি, জিজি প্রেস ও এনএইচকে (জাপান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন) এর পাঁচ জন; নেপালের কেন্দ্রবিন্দু অনলাইন পিটিবি লিমিটেড’র এক জন; ভারতের ডিএসটিভি দার্জিলিং-এর এক জন, উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এর এক জন, দি টেলিগ্রাফ’র এক জন, এএনআই’র এক জন, এবিপি নিউজ’র দুই জন, আজকাল প্বালিশার্স লিমিটেডে’র একজন, এবিপি নেটওয়ার্ক’র দুই জন, এএনএম নিউজ প্রাইভেট লিমিটেড’র এক জন ও জি মিডিয়া’র দুই জন; বিবিসি নিউজ (ভারতীয় ও আমেরিকান) চার জন; এরাইজ নিউজ’র এক বিট্রিশ; ফ্রান্সের প্যারিস লা মন্ডে’র এক জন; সুইডিশ রেডিও-এর এক জন; অ্যাজেন্সি ফ্রান্স প্রেস’র (এএফপি) সাত জন; রয়টার্সের দুই ভারতীয়; আল জাজিরার এক ব্রিটিশ; অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের এক জন; চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কে দুই ভারতীয়; এআরডি জার্মান টিভি’র এক ভারতীয়; কলকাতার সংবাদ প্রতিদিন’র একজন; দি ওয়াল কলকাতা’র এক জন; ব্রিটিশ এক ফ্রিল্যান্সার ও বেলজিয়ান এক জন সাংবাদিকদের ভোট দেখার অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখতে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষককেও অনুমোদন দিয়েছে ইসি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি সংস্থার ২০২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। আগামী ৬ জানুয়ারি দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন নিয়ে ব্রিফ করবে নির্বাচন কমিশন।
৬ জেলায় নৌবাহিনী, থাকছে ৬ যুদ্ধজাহাজ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ৬ জেলায় ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত নৌবাহিনীর ৬টি যুদ্ধজাহাজ ১৯টি উপজেলায় দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (৩ জানুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আইএসপিআর জানায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-উপলক্ষে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে উপকূলীয় এলাকার ৬টি জেলার ১১টি আসনে মোতায়েন করা হয়েছে। সংসদীয় আসনগুলো হলো-ভোলা ১, ২, ৩ ও ৪, কক্সবাজার ২ ও ৪, চট্টগ্রাম ৩, নোয়াখালী ৬, বরগুনা ১ ও ২ এবংবাগেরহাট-৩। আইএসপিআর আরও জানায়, নির্বাচন উপলক্ষে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তিন হাজারের বেশি নৌ সদস্য এবং ৬টি যুদ্ধজাহাজ ১৯টি উপজেলায় ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো-ভোলা জেলার ভোলা সদর, বোরহান উদ্দিন, দৌলতখান, তজুমুদ্দিন, লালমোহন, চর ফ্যাশন, মনপুরা, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, বরগুনা জেলার বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী, বামনা, বেতাগী, পাথরঘাটা এবং বাগেরহাট জেলারমোংলা উপজেলা। নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী নৌবাহিনী উপকূলীয় অঞ্চলসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য নিয়োজিত রয়েছে।
সহিংসতা রোধে বিজিবিকে তৎপর থাকার নির্দেশ: নির্বাচনী সহিংসতা রোধে বিজিবিকে তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো সহিংসতা ও নাশকতা রোধে সদা তৎপর থাকতে হবে।
গতকাল বুধবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা জেলা সেক্টরের শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলায় বিজিবির নির্বাচনী বেজ ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি একথা বলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ভোটাররা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে তার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনকালীন দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবিকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। নির্বাচনকালীন যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও নাশকতা রোধে বিজিবির প্রতিটি সদস্যকে সদা তৎপর থাকতে নির্দেশ দেন বিজিবি মহাপরিচালক। মহাপরিচালকের পরিদর্শনকালীন বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিজিবির ঢাকা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে বুধবার ভোর থেকে মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় নিয়োজিত হয়েছে জানিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫ উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় ৪টি উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। উপকূলীয় দুটি জেলাসহ (ভোলা ও বরগুনা) সর্বমোট ১৯টি উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও আনসার বাহিনী এবং প্রায় পৌনে ২ লাখ পুলিশ-র‌্যাব, কোস্ট গার্ড নির্বাচনকালীন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।