নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আর ‘ভোট কারচুপির মনোবৃত্তি নেই’ বলে বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। নির্বাচনে এখন আর ‘আগের মতো সহিংসতা হয় না’ বলেও জানিয়েছেন তিনি। সফরের তৃতীয় দিন গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের দলটি সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা প্রতিনিধিরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দলকে বলেছেন, ভোটে কারচুপির করে এখন পার পাওয়ার সুযোগ নেই। এই দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মিডিয়া স্বাধীন। তারা যে কোনো সংবাদ যে কোনো সময় ছাপিয়ে দেয়। আমরা কারো কণ্ঠরোধ করি না। আমাদের তিন হাজারেরও বেশি দৈনিক সংবাদপত্র রয়েছে।
“এরপর রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। সেখানে তো নানা ধরনের সংবাদ দিয়ে থাকে। কাজেই এখানে দুর্নীতি করে কিংবা ভোট কারচুপি করে কেউ পার পাবে বলে আমার মনে হয় না, আমার বিশ্বাসও হয় না।” মন্ত্রী বলেন, “সেই ধরনের (কারচুপি) মনোবৃত্তি আমাদের রাজনৈতিক দলের এখন আর নেই। কারণ, এরা সবাই মনে করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দেবে।” আমাদের দেশের লোক সবসময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায় মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কোনো রকম মারামারি দেশের মানুষ পছন্দ করে না। এখানে ভায়োলেন্স হবে বলে আমরা মনে করি না। “আগে যে রকম সহিংসতা হতো, এখন সেই সহিংসতামুক্ত বলতে চাই।ৃসহিংসতা হবে না। আমরা মনে করি আমাদের উপমহাদেশে নির্বাচন আসলেই উৎসবমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।”
নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এই নির্বাচন আয়োজন করতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সক্ষমতা আছে কিনা, তারা তা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা তাদের বিস্তারিত বলে দিয়েছি।” এই নির্বাচন কমিশন ৫ হাজার ৩০০টি নির্বাচন করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।
“পুলিশ যথেষ্ট প্রশিক্ষিত, কীভাবে নির্বাচন ফেইস করতে হয় সেই জ্ঞান তাদের রয়েছে। একই রকমভাবে বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার নির্বাচনে ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনে ছয় লাখের উপর আনসার পুলিশের পাশাপাশি মূল ভূমিকা পালন করবে। প্রয়োজনমতো নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীও সহযোগিতা নেয়, আমরা তাদের সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছি।” নির্বাচনে যারা অংশ নেবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে কিনা এবং বিরোধী দল নির্বাচনে এলে সঠিকভাবে প্রচারণা চালাতে পারবে কি না, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সেই প্রশ্ন করেন। জবাবে মন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনের সময় রিটার্নিং অফিসার হচ্ছেন সর্বময় ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তার নেতৃত্বে তার এলাকার নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময় পুলিশ বাহিনী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়। ৯৯৯ ফোন করলে পুলিশ বাহিনী তৎপর থাকে। “আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রশিক্ষিত, এখানে কোনো অসুবিধা হবে বলে আমরা মনে করি না। আশি-নব্বইয়ের দশকে সহিংসতা হতো, এখন আর হয় এগুলো হয় না।” বিএনপি নির্বাচনে না এলে সহিংসতা হবে কি না, এ প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আমি তো মনে করি তারা নির্বাচনে আসবে। আমি মনে করি বাংলাদেশে সরকার বদল করতে হলে ইলেকশনে আসতে হবে। ইলেকশন ছাড়া বাংলাদেশে সরকার বদল করার কোনো উপায় নেই। ইলেকশনে তাদের আসতেই হবে, আমরা এটি মনে করি।”
ভোটে কারচুপি করে কেউ পার পাবে না: যুক্তরাষ্ট্রকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জনপ্রিয় সংবাদ

























