ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

ভোটের মাঠে সেনা মোতায়েনে রাষ্ট্রপতির ‘নীতিগত সম্মতি’

  • আপডেট সময় : ০১:৫০:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ‘নীতিগত সম্মতি’ দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল রোববার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে ভোটের মাঠে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে অনুরোধ জানান। বৈঠকে রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে সম্মতি দেন বলে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম পরে সাংবাদিকদের জানান। ভোটের মাঠে সেনা মোতায়েন নিয়ে রোববার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বৈঠক শেষে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিবকে সঙ্গে নিয়ে বেলা পৌনে ১১টায় বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন সিইসি। বেলা ১১টায় শুরু হয় বৈঠক। আধা ঘণ্টা পর বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মো. জাহাংগীর। তিনি বলেন, “সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কমিশন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের’ আওতায় বেসমারিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সামরিক বাহিনী নিযুক্ত করার জন্য অনুরোধ যাচনা করেছেন।
“মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিষয়টি শ্রবণ করেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আলাপ করে অতি শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। তিনি নীতিগতভাবে সামরিক বাহিনী প্রদানে সম্মত হয়েছেন।” এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, রাষ্ট্রপতি এখন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মতি দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। এরপর পরিপত্র জারি করে কর্মপরিধি নির্ধারণ এবং কবে কখন মোতায়েন হবে, তা জানানো হবে।
“এটা মূলত সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আমরা আলোচনা করে পৃথক পত্র প্রেরণ করব। তার আলোকে সেখানে সময়, কখন কীভাবে তা নির্ধারণ হবে। সেটা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে পত্রালাপের মাধ্যমে চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন।”
৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ ঘিরে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনা মোতায়েনের ইচ্ছার কথা এর আগে জানিয়েছিল ইসি। গত ১১ ডিসেম্বর সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন ইসি সচিব জাহাংগীর আলম। সেদিন তিনি বলেন, “এটা পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সভা। নীতিগতভাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে এ বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সশস্ত্র বাহিনীকে নির্বাচনি কাজে দায়িত্ব দিলে কমিশন যেভাবে চাইবে সেভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহলে পরবর্তীতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।”
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিনের আগে-পরে মিলিয়ে ১০ দিন বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। গত ১১ ডিসেম্বর বৈঠকের পর সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছিলেন, “২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি-১৩ দিন সেনা মোতায়েনের জন্য ইসির চাহিদা রয়েছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের জন্য কাজ করছে ইসি। গতবার ৩৫ হাজারের মতো মোতায়েন ছিল। এবার বেশি প্রয়োজন হলে সেভাবে মোতায়েন হবে। সব প্রস্তুতি রয়েছে।” দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সার্বিক দিক অবহিত করতে তফসিল ঘোষণার আগে পাঁচ সদস্যের কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একদফা সাক্ষাৎ করেছিলেন। ভোটের যাত্রা শুরু হয়ে যাওয়ার পর আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েনের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আরেক দফা বৈঠক করলেন সিইসি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮টি নিবন্ধিত দলের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বৈধ প্রার্থী রয়েছে ২,২৬০ জন। রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হচ্ছে। সোমবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং অফিসার।
পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রায় সাড়ে সাত লাখ সদস্য এবার ভোটের মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। এর মধ্যে ৫ লাখ ১৬ হাজার জন আনসার সদস্য, পুলিশ ও র‌্যাবের এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ডের দুই হাজার ৩৫০ জন, বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন দাত্বি পালন করবেন।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভোটের মাঠে সেনা মোতায়েনে রাষ্ট্রপতির ‘নীতিগত সম্মতি’

আপডেট সময় : ০১:৫০:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ‘নীতিগত সম্মতি’ দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল রোববার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে ভোটের মাঠে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে অনুরোধ জানান। বৈঠকে রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে সম্মতি দেন বলে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম পরে সাংবাদিকদের জানান। ভোটের মাঠে সেনা মোতায়েন নিয়ে রোববার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বৈঠক শেষে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিবকে সঙ্গে নিয়ে বেলা পৌনে ১১টায় বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন সিইসি। বেলা ১১টায় শুরু হয় বৈঠক। আধা ঘণ্টা পর বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মো. জাহাংগীর। তিনি বলেন, “সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কমিশন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের’ আওতায় বেসমারিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সামরিক বাহিনী নিযুক্ত করার জন্য অনুরোধ যাচনা করেছেন।
“মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিষয়টি শ্রবণ করেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আলাপ করে অতি শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। তিনি নীতিগতভাবে সামরিক বাহিনী প্রদানে সম্মত হয়েছেন।” এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, রাষ্ট্রপতি এখন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মতি দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। এরপর পরিপত্র জারি করে কর্মপরিধি নির্ধারণ এবং কবে কখন মোতায়েন হবে, তা জানানো হবে।
“এটা মূলত সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আমরা আলোচনা করে পৃথক পত্র প্রেরণ করব। তার আলোকে সেখানে সময়, কখন কীভাবে তা নির্ধারণ হবে। সেটা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে পত্রালাপের মাধ্যমে চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন।”
৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ ঘিরে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনা মোতায়েনের ইচ্ছার কথা এর আগে জানিয়েছিল ইসি। গত ১১ ডিসেম্বর সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন ইসি সচিব জাহাংগীর আলম। সেদিন তিনি বলেন, “এটা পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সভা। নীতিগতভাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে এ বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সশস্ত্র বাহিনীকে নির্বাচনি কাজে দায়িত্ব দিলে কমিশন যেভাবে চাইবে সেভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহলে পরবর্তীতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।”
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিনের আগে-পরে মিলিয়ে ১০ দিন বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। গত ১১ ডিসেম্বর বৈঠকের পর সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছিলেন, “২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি-১৩ দিন সেনা মোতায়েনের জন্য ইসির চাহিদা রয়েছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের জন্য কাজ করছে ইসি। গতবার ৩৫ হাজারের মতো মোতায়েন ছিল। এবার বেশি প্রয়োজন হলে সেভাবে মোতায়েন হবে। সব প্রস্তুতি রয়েছে।” দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সার্বিক দিক অবহিত করতে তফসিল ঘোষণার আগে পাঁচ সদস্যের কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একদফা সাক্ষাৎ করেছিলেন। ভোটের যাত্রা শুরু হয়ে যাওয়ার পর আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েনের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আরেক দফা বৈঠক করলেন সিইসি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮টি নিবন্ধিত দলের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বৈধ প্রার্থী রয়েছে ২,২৬০ জন। রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হচ্ছে। সোমবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং অফিসার।
পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রায় সাড়ে সাত লাখ সদস্য এবার ভোটের মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। এর মধ্যে ৫ লাখ ১৬ হাজার জন আনসার সদস্য, পুলিশ ও র‌্যাবের এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ডের দুই হাজার ৩৫০ জন, বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন দাত্বি পালন করবেন।