ঢাকা ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

ভোটারদের বিশ্বাসে যেন চিড় না ধরে: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:৩৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জুলাই ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটাররা যে বিশ্বাস নিয়ে ভোট দিয়েছেন, তাতে যেন চিড় না ধরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের সেভাবেই দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়নে গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র, ২৭ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলররা শপথ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে বিশ্বাস নিয়ে আপনার ভোটার আপনাকে ভোট দিয়েছে সেই বিশ্বাসে যেন কখনো চিড় না ধরে, সে বিশ্বাস যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়ৃ সেদিকে আপনারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।”
জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি এটা চাই, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের প্রতি আপনার কর্তব্য, জনগণের প্রতি দায়িত্বটা যথাযথভাবে আপনারা পালন করবেন। যেন মানুষের আস্থা, বিশ্বাসটা আপনাদের উপর থাকে।”
গত ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত জয়ী হন। নির্বাচনের ২০ দিনের মাথায় তিনি শপথ নিলেন। মেয়র হিসেবে আরফানুল হক রিফাতকে শপথ পড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং তার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে উল্লেখ করে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হয় বলে অনুষ্ঠানে জানান সরকার প্রধান। ‘ধার করে আমরা ঘি খেতে যাই না’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অতীতে আমি দেখেছি যারা ক্ষমতায়, নিজের দেশের অর্থ অন্যের হাতে তুলে দিয়ে আবার তাদের থেকে কমিশন খেয়ে নিয়ে আসাৃ “এই অর্থ তো দেশের মানুষেরৃ সেখান থেকে কমিশন খেতে যাব কেন? সেটা যেন না হয়”
কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়ার আগে মানুষ কীভাবে তার সুফল পাবে সেটা বিবেচনায় রাখা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি অবকাঠামো কেবল গড়ে তোলার জন্যেই গড়ে তোলা যাবে না। “জনগণের লাভ, আর্থিক উন্নয়নে সেটির ভূমিকা এবং এলাকার উন্নয়নে প্রভাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে।”
নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের কারও যেন ‘কমিশনের’ চিন্তা না থাকে সে বিষয়ে সতর্ক করেন শেখ হাসিনা। “আপনারা কিন্তু সব সময় এই বিষয়টা লক্ষ্য রাখবেন যে, কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করতে হলে মোটা অংকের কমিশন পাওয়া যাবে, ওই চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। “চিন্তা থাকবে এই উন্নয়ন প্রকল্পটা হাতে নিলে তার বাস্তবায়নের সুফল মানুষ কতটুকু ভোগ করবে, কতটুকু মানুষের কাজে লাগানো যাবে, সেটাই মাথায় রাখবেন।”
কুমিল্লা সিটি কর্পোরশনের নির্বাচনে মানুষ শুধু ‘স্বতস্ফূর্তভাবে’ অংশগ্রহণই করেনি অত্যন্ত ‘প্রতিযোগিতামূলক’ একটা নির্বাচন হয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
“এই যে চমৎকার প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনটা হয়েছে, এখানে যে মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পেরেছে, ভোটের মাধ্যমে তারা তাদের মনোনীত প্রার্থীকে জয়ী করেছে, আমি মনে করি যে, নির্বাচনের ইতিহাসে এটা একটা দৃষ্টান্ত।”
নির্বাচনের ক্ষেত্রে জনগণ যেন ভোট দেওয়ার অধিকার ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে যা কিছু করার আওয়ামী লীগ সরকার করে যাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। “কারণ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিতই হয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে,”- বলেন শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কাজেই বিজয়ী জাতি আমরা। “কাজেই এদেশের মানুষ তার সকল রকম অধিকার ভোগ করবে। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।”
‘গণতান্ত্রিক’ পরিবেশের মাধ্যমেই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই উন্নতিটাই আমাদের মূল লক্ষ্য এবং আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।” বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বসবাসের প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, “তাছাড়াও ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একেবারে অনগ্রসর জাতি যারা, সকলের কল্যাণে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করি। আমরা চ্ইা বাংলাদেশ সব সময় এই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠবে। ধর্ম পালনে বাধা, নিষেধ দেবে না।” বাংলাদেশ সেই চেতনায় বিশ্বাস করে এবং সেই চেতনা নিয়েই দেশ এগিয়ে যায় বলে অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বার্ন ইউনিটে ৩৩ জন ভর্তি, ৩ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন

ভোটারদের বিশ্বাসে যেন চিড় না ধরে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:৩৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটাররা যে বিশ্বাস নিয়ে ভোট দিয়েছেন, তাতে যেন চিড় না ধরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের সেভাবেই দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়নে গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র, ২৭ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলররা শপথ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে বিশ্বাস নিয়ে আপনার ভোটার আপনাকে ভোট দিয়েছে সেই বিশ্বাসে যেন কখনো চিড় না ধরে, সে বিশ্বাস যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়ৃ সেদিকে আপনারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।”
জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি এটা চাই, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের প্রতি আপনার কর্তব্য, জনগণের প্রতি দায়িত্বটা যথাযথভাবে আপনারা পালন করবেন। যেন মানুষের আস্থা, বিশ্বাসটা আপনাদের উপর থাকে।”
গত ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত জয়ী হন। নির্বাচনের ২০ দিনের মাথায় তিনি শপথ নিলেন। মেয়র হিসেবে আরফানুল হক রিফাতকে শপথ পড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং তার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে উল্লেখ করে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হয় বলে অনুষ্ঠানে জানান সরকার প্রধান। ‘ধার করে আমরা ঘি খেতে যাই না’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অতীতে আমি দেখেছি যারা ক্ষমতায়, নিজের দেশের অর্থ অন্যের হাতে তুলে দিয়ে আবার তাদের থেকে কমিশন খেয়ে নিয়ে আসাৃ “এই অর্থ তো দেশের মানুষেরৃ সেখান থেকে কমিশন খেতে যাব কেন? সেটা যেন না হয়”
কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়ার আগে মানুষ কীভাবে তার সুফল পাবে সেটা বিবেচনায় রাখা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি অবকাঠামো কেবল গড়ে তোলার জন্যেই গড়ে তোলা যাবে না। “জনগণের লাভ, আর্থিক উন্নয়নে সেটির ভূমিকা এবং এলাকার উন্নয়নে প্রভাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে।”
নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের কারও যেন ‘কমিশনের’ চিন্তা না থাকে সে বিষয়ে সতর্ক করেন শেখ হাসিনা। “আপনারা কিন্তু সব সময় এই বিষয়টা লক্ষ্য রাখবেন যে, কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করতে হলে মোটা অংকের কমিশন পাওয়া যাবে, ওই চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। “চিন্তা থাকবে এই উন্নয়ন প্রকল্পটা হাতে নিলে তার বাস্তবায়নের সুফল মানুষ কতটুকু ভোগ করবে, কতটুকু মানুষের কাজে লাগানো যাবে, সেটাই মাথায় রাখবেন।”
কুমিল্লা সিটি কর্পোরশনের নির্বাচনে মানুষ শুধু ‘স্বতস্ফূর্তভাবে’ অংশগ্রহণই করেনি অত্যন্ত ‘প্রতিযোগিতামূলক’ একটা নির্বাচন হয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
“এই যে চমৎকার প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনটা হয়েছে, এখানে যে মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পেরেছে, ভোটের মাধ্যমে তারা তাদের মনোনীত প্রার্থীকে জয়ী করেছে, আমি মনে করি যে, নির্বাচনের ইতিহাসে এটা একটা দৃষ্টান্ত।”
নির্বাচনের ক্ষেত্রে জনগণ যেন ভোট দেওয়ার অধিকার ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে যা কিছু করার আওয়ামী লীগ সরকার করে যাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। “কারণ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিতই হয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে,”- বলেন শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কাজেই বিজয়ী জাতি আমরা। “কাজেই এদেশের মানুষ তার সকল রকম অধিকার ভোগ করবে। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।”
‘গণতান্ত্রিক’ পরিবেশের মাধ্যমেই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই উন্নতিটাই আমাদের মূল লক্ষ্য এবং আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।” বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বসবাসের প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, “তাছাড়াও ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একেবারে অনগ্রসর জাতি যারা, সকলের কল্যাণে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করি। আমরা চ্ইা বাংলাদেশ সব সময় এই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠবে। ধর্ম পালনে বাধা, নিষেধ দেবে না।” বাংলাদেশ সেই চেতনায় বিশ্বাস করে এবং সেই চেতনা নিয়েই দেশ এগিয়ে যায় বলে অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।