ঢাকা ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

ভেড়া পালনে শত শত নারীর ভাগ্য বদল

  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার দুর্যোগ কবলিত যমুনা নদীর বালু চরে ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা। উন্নত জাত, দুর্যোগ সহনীয় ও প্রজনন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় দিনে দিনে ভেড়া পালন বাড়ছে। এতে সংসারের চাহিদা মিটিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে স্বপ্ন দেখছেন তারা।
মোল্লার চরের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, গাইবান্ধার তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বুকজুড়ে ১৬৫টি চর রয়েছে। জেলার ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জসহ চার উপজেলার এসব চরে অন্তত ৩ লাখ মানুষ বাস করেন। তিস্তাসহ তিন নদীর দুর্গম চরাঞ্চল কাপাসিয়া, বেলকা, তারাপুর, হরিপুর, গাইবান্ধার মোল্লারচর, কামারজানি, এড়েন্ডাবাড়ি, উড়িয়া ও কঞ্চিপাড়া, সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, কামালেরপাড়া, সাঘাটা সদরসহ অন্তত ১৩টি ইউনিয়ন দুর্গম চরাঞ্চল।
চরাঞ্চলের বাসিন্দা ও ভেড়া পালক শিল্পি বেগম বলেন, এসব এলাকার প্রায় ৩ লাখ মানুষ চাষাবাদ ও গবাদি পশুর উপর নির্ভর করেন। তারা সারাবছর কোনো না কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করে বেঁচে আছেন। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি বিক্রি করে চালান সংসার। এরপরও তারা সুখি। গবাদি পশু পালন করা হলেও এই চরগুলোতে কোনো ভেড়া পালনের প্রচলন ছিল না। আমি একটি ভেড়া পেয়েছি। তবে, আমি এখন ৫টি ভেড়ার মালিক। একেকটি ভেড়ার ওজনেও অনেক বেশি। দুর্যোগে বিক্রি করে সংসারের খরচ বহন করবো। সাজেদা বেগম বলেন, ফ্রেন্ডশিপ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উন্নত জাতের ভেড়া দিয়েছে। যেমন উঁচু, তেমন লম্বা। দেখতে বেশ সুন্দর। আমারও ভেড়া আছে। সংসার নিয়ে ভালো আছি। ফ্রেন্ডশিপ কর্মকর্তা দিবাকর বিশ্বাস বলেন, সারাবছর বন্যা, খড়া, নদী ভাঙনসহ বিভিন্ন দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে চরবাসীর বাঁচতে হয়। সে কারণে পশু সম্পদ রক্ষা করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এখন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কাবিলপুর চরজুরে উন্নত জাতের ভেড়ার দেখা মেলে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ফসল এই নতুন জাতের ভেড়া সাড়া ফেলেছে। চরবাসীকে এই জাতের ভেড়া দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হয়। মোমেনা বেগম জানান, এই জাতের ভেড়া পালনে খরচ কম, দুর্যোগ সহনীয়, রোগবালাই কম এবং আকারে বড় হয়। কাবিলপুর চরের ২৪০ জন নারী ২৪০টি ভেড়া দিয়ে শুরু করেন। প্রজনন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় ইতোমধ্যে তারা ১টি থেকে ৮/১০টি করে ভেড়ার মালিক হয়েছেন। এই পরিবারগুলো নতুন স্বপ্ন দেখছেন। নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাছুদার রহমান সরকার বলেন, ভেড়ার এটা নতুন জাত। চরাঞ্চলের মতো দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় এই ভেড়া পালন করে অনেকেই অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ছিনতাইয়ের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাসায় আসামির ছেলে

ভেড়া পালনে শত শত নারীর ভাগ্য বদল

আপডেট সময় : ১১:৪৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার দুর্যোগ কবলিত যমুনা নদীর বালু চরে ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা। উন্নত জাত, দুর্যোগ সহনীয় ও প্রজনন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় দিনে দিনে ভেড়া পালন বাড়ছে। এতে সংসারের চাহিদা মিটিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে স্বপ্ন দেখছেন তারা।
মোল্লার চরের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, গাইবান্ধার তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বুকজুড়ে ১৬৫টি চর রয়েছে। জেলার ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জসহ চার উপজেলার এসব চরে অন্তত ৩ লাখ মানুষ বাস করেন। তিস্তাসহ তিন নদীর দুর্গম চরাঞ্চল কাপাসিয়া, বেলকা, তারাপুর, হরিপুর, গাইবান্ধার মোল্লারচর, কামারজানি, এড়েন্ডাবাড়ি, উড়িয়া ও কঞ্চিপাড়া, সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, কামালেরপাড়া, সাঘাটা সদরসহ অন্তত ১৩টি ইউনিয়ন দুর্গম চরাঞ্চল।
চরাঞ্চলের বাসিন্দা ও ভেড়া পালক শিল্পি বেগম বলেন, এসব এলাকার প্রায় ৩ লাখ মানুষ চাষাবাদ ও গবাদি পশুর উপর নির্ভর করেন। তারা সারাবছর কোনো না কোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করে বেঁচে আছেন। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি বিক্রি করে চালান সংসার। এরপরও তারা সুখি। গবাদি পশু পালন করা হলেও এই চরগুলোতে কোনো ভেড়া পালনের প্রচলন ছিল না। আমি একটি ভেড়া পেয়েছি। তবে, আমি এখন ৫টি ভেড়ার মালিক। একেকটি ভেড়ার ওজনেও অনেক বেশি। দুর্যোগে বিক্রি করে সংসারের খরচ বহন করবো। সাজেদা বেগম বলেন, ফ্রেন্ডশিপ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উন্নত জাতের ভেড়া দিয়েছে। যেমন উঁচু, তেমন লম্বা। দেখতে বেশ সুন্দর। আমারও ভেড়া আছে। সংসার নিয়ে ভালো আছি। ফ্রেন্ডশিপ কর্মকর্তা দিবাকর বিশ্বাস বলেন, সারাবছর বন্যা, খড়া, নদী ভাঙনসহ বিভিন্ন দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে চরবাসীর বাঁচতে হয়। সে কারণে পশু সম্পদ রক্ষা করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এখন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কাবিলপুর চরজুরে উন্নত জাতের ভেড়ার দেখা মেলে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ফসল এই নতুন জাতের ভেড়া সাড়া ফেলেছে। চরবাসীকে এই জাতের ভেড়া দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হয়। মোমেনা বেগম জানান, এই জাতের ভেড়া পালনে খরচ কম, দুর্যোগ সহনীয়, রোগবালাই কম এবং আকারে বড় হয়। কাবিলপুর চরের ২৪০ জন নারী ২৪০টি ভেড়া দিয়ে শুরু করেন। প্রজনন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় ইতোমধ্যে তারা ১টি থেকে ৮/১০টি করে ভেড়ার মালিক হয়েছেন। এই পরিবারগুলো নতুন স্বপ্ন দেখছেন। নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাছুদার রহমান সরকার বলেন, ভেড়ার এটা নতুন জাত। চরাঞ্চলের মতো দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় এই ভেড়া পালন করে অনেকেই অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন।