ঢাকা ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

ভূমিতে নিষেধাজ্ঞা রেখে মহাকাশে সহযোগিতা নয়: রাশিয়া

  • আপডেট সময় : ১০:২৩:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির মিত্র দেশগুলো সাম্প্রতিক অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা তুলে না নিলে ‘আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন’ (আইএসএস) প্রকল্পে অংশ নেওয়া দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার মাহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস প্রধান দিমিত্রি রোগোজিন টুইট করেছেন, আইএসএস ও অন্যান্য প্রকল্পের ‘অংশীদারদের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন’ কেবল তখনই সম্ভব যখন ‘বেআইনি অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা কোনো শর্ত ছাড়াই সম্পূর্ণ উঠে যাবে।’
অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (সিএসএ)-এর কাছে চিঠি লিখে আবেদন করার কথাও টুইটে উল্লেখ করেছেন রোগোজিন। প্রতিটি দেশের কাছ থেকে আসা লিখিত উত্তরের কপিও টুইটারে শেয়ার করেছেন তিনি। সিএসএ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে চিঠির সত্যতা যাচাই করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইঠ ভার্জ। তবে, নাসা এবং ইএসএর কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পায়নি সাইটটি।
রোগোজিনের শেয়ার করা নাসার জবাবে লেখা রয়েছে, “মহাকাশে আন্তর্জাতিক সরকারের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে; বিশেষ করে রাশিয়া, কানাডা, ইউরোপ এবং জাপানের মতো যারা আইএসএস পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিদ্যমান রপ্তানীবিষয়ক নীতিমালা আইএসএসের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতার সুযোগ বজায় রেখেছে।” চিঠিতে নাসা ব্যবস্থাপক বিল নেলসনের স্বাক্ষর রয়েছে।
রোগোজিনের আবেদনে কানাডাও প্রায় একই ধরনের উত্তর দিয়েছে বলে জানিয়েছে ভার্জ। “আমি আপনাকে এটা নিশ্চিত করতে পারি যে কানাডা আইএসএস প্রকল্পকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং নিরাপদ ও সফল কার্যক্রম নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মহাকাশে রুশ-মার্কিন অংশীদারিত্ব টিকবে? আর ইএসএ প্রধান জোসেফ আশবাখার উত্তরে বলেছেন, মূল্যায়নের জন্য তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর কাছে রোগোজিনের অনুরোধ পৌঁছে দেবেন। উত্তর পাওয়ার পর রোগোজিন টুইট করেছেন, “আমাদের অংশীদারদের অবস্থান পরিষ্কার, তারা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেবেন না। এই নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ার অর্থনীতিকে ধ্বংস করা, আমাদের নাগরিকদের ক্ষুধা ও হতাশার দিকে ঠেলে দেওয়া এবং আমাদের দেশকে নিচে নামিয়ে আনা।”
আইএসএস প্রকল্পের সঙ্গে রাশিয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক চ্ছিন্ন করার তারিখ “খুব শিগগিরই ঘোষণা”র কথা জানিয়েছেন তিনি। ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেইনে সামরিক হামলা শুরু করার পরপরই দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ আরোপ করা শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুরুতেই কড়া ভাষায় সেই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন রোগোজিন। রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছাড়া মহাকাশ স্টেশনটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। আইএসএসে রাশিয়ার অনুপস্থিতি বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে উঠে এসেছে ভার্জের প্রতিবেদনে। মহাকাশে আইএসএসের অবস্থান এবং দিক নির্দেশনা ঠিক রাখতে রাশিয়ার ওপর নির্ভর করে নাসা। অথচ মার্চের শেষ সপ্তাহেই সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ইঙ্গিত মিলেছিল নাসার কাছ থেকে। আইএসএস ২০৩০ পর্যন্ত চালু রাখতে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে– এমন ইঙ্গিতই মিলেছিল নাসার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভূমিতে নিষেধাজ্ঞা রেখে মহাকাশে সহযোগিতা নয়: রাশিয়া

আপডেট সময় : ১০:২৩:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২

প্রযুক্তি ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির মিত্র দেশগুলো সাম্প্রতিক অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা তুলে না নিলে ‘আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন’ (আইএসএস) প্রকল্পে অংশ নেওয়া দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার মাহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস প্রধান দিমিত্রি রোগোজিন টুইট করেছেন, আইএসএস ও অন্যান্য প্রকল্পের ‘অংশীদারদের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন’ কেবল তখনই সম্ভব যখন ‘বেআইনি অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা কোনো শর্ত ছাড়াই সম্পূর্ণ উঠে যাবে।’
অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (সিএসএ)-এর কাছে চিঠি লিখে আবেদন করার কথাও টুইটে উল্লেখ করেছেন রোগোজিন। প্রতিটি দেশের কাছ থেকে আসা লিখিত উত্তরের কপিও টুইটারে শেয়ার করেছেন তিনি। সিএসএ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে চিঠির সত্যতা যাচাই করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইঠ ভার্জ। তবে, নাসা এবং ইএসএর কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পায়নি সাইটটি।
রোগোজিনের শেয়ার করা নাসার জবাবে লেখা রয়েছে, “মহাকাশে আন্তর্জাতিক সরকারের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে; বিশেষ করে রাশিয়া, কানাডা, ইউরোপ এবং জাপানের মতো যারা আইএসএস পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিদ্যমান রপ্তানীবিষয়ক নীতিমালা আইএসএসের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতার সুযোগ বজায় রেখেছে।” চিঠিতে নাসা ব্যবস্থাপক বিল নেলসনের স্বাক্ষর রয়েছে।
রোগোজিনের আবেদনে কানাডাও প্রায় একই ধরনের উত্তর দিয়েছে বলে জানিয়েছে ভার্জ। “আমি আপনাকে এটা নিশ্চিত করতে পারি যে কানাডা আইএসএস প্রকল্পকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং নিরাপদ ও সফল কার্যক্রম নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মহাকাশে রুশ-মার্কিন অংশীদারিত্ব টিকবে? আর ইএসএ প্রধান জোসেফ আশবাখার উত্তরে বলেছেন, মূল্যায়নের জন্য তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর কাছে রোগোজিনের অনুরোধ পৌঁছে দেবেন। উত্তর পাওয়ার পর রোগোজিন টুইট করেছেন, “আমাদের অংশীদারদের অবস্থান পরিষ্কার, তারা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেবেন না। এই নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ার অর্থনীতিকে ধ্বংস করা, আমাদের নাগরিকদের ক্ষুধা ও হতাশার দিকে ঠেলে দেওয়া এবং আমাদের দেশকে নিচে নামিয়ে আনা।”
আইএসএস প্রকল্পের সঙ্গে রাশিয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক চ্ছিন্ন করার তারিখ “খুব শিগগিরই ঘোষণা”র কথা জানিয়েছেন তিনি। ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেইনে সামরিক হামলা শুরু করার পরপরই দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ আরোপ করা শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুরুতেই কড়া ভাষায় সেই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন রোগোজিন। রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছাড়া মহাকাশ স্টেশনটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। আইএসএসে রাশিয়ার অনুপস্থিতি বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে উঠে এসেছে ভার্জের প্রতিবেদনে। মহাকাশে আইএসএসের অবস্থান এবং দিক নির্দেশনা ঠিক রাখতে রাশিয়ার ওপর নির্ভর করে নাসা। অথচ মার্চের শেষ সপ্তাহেই সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ইঙ্গিত মিলেছিল নাসার কাছ থেকে। আইএসএস ২০৩০ পর্যন্ত চালু রাখতে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে– এমন ইঙ্গিতই মিলেছিল নাসার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে।