ঢাকা ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : ০২:৩১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : মাত্রা ছিল ৫.৫। চলতি বছর দেশে ১০টি হালকা ও মাঝারি ভূমিকম্প সংঘটিত । বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রত্যাশা ডেস্ক
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৫। গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটের দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে উৎপত্তিস্থল কুমিল্লাসহ পাশর্^বর্তী এলাকায় স্বল্প কিছু ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
ইউরোপীয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) ও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা- ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল কুমিল্লা থেকে ৪৬ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিমি.। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৫। খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, টাঙ্গাইল, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ফেনী, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, কুষ্টিয়াসহ প্রায় সারা দেশেই কম্পন অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ। ঢাকার আগারগাঁও ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৬। আবহাওয়া অফিস বলছে এটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প। সর্বশেষ ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৪৬ মিনিটে ভূ-কম্পন অনুভূত হয় বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জয়পুরহাট, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, রাজশাহী, জামালপুর, লালমনিরহাট, সিলেট, মৌলভীবাজার, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম, শেরপুর, সাভার, গাজীপুর, পঞ্চগড়, কক্সবাজার, লালমনিরহাট, হবিগঞ্জ, নাটোর ও কুড়িগ্রামে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০টি হালকা ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। এতে জানমালের তেমন ক্ষতি না হলেও বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বছর প্রথম ভূকম্পন অনুভূত হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের পাশাপাশি কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলাও। ৩ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে জানমালের তেমন ক্ষতি হয়নি। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে মাঝারি মাত্রার জোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির আয়াবতি ও রাখাইন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের কক্সবাজারেও ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার আগারগাঁও থেকে ৩৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১।
চট্টগ্রামে গত ৩০ এপ্রিল ৪ দশমিক ৬ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল অক্ষাংশ ২২ দশমিক ৯৩ ডিগ্রি উত্তর, দ্রাঘিমা ৯৪ দশমিক ১৯ ডিগ্রি পূর্ব মিয়ানমারের মাউলাইকে। রাজধানীর ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এর দূরত্ব ছিল ৪০০ কিলোমিটার। গত ৫ মে রাজধানীতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে দোহারে। গত ৫ জুন ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের কাছে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে। গত ১৬ জুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ, মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫। গত ১৪ আগস্ট সিলেটে ফের ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। একই সঙ্গে ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়ও এটি অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল আসামের মেঘালয়, গভীরতা ছিল ৩৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২২৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে। ঠিক ১৬ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২৯ আগস্ট সিলেট মহানগরীর আশপাশে ফের মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তাপুরে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে ৪ দশমিক ৪ মাত্রার মৃদু ভূমিকম্প আঘাত হানে। আসামে আঘাত হানা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের সিলেট জেলাও। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২৬৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের আসামের কাছাড়ে। ১৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল সদরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান।
কুমিল্লায় আহত দুই শতাধিক: ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে ভবন থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে দুই শতাধিক পোশাককর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ছুপুয়া এলাকায় অবস্থিত আমির শার্ট গার্মেন্ট কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, আহতদের সেবায় আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। এ পর্যন্ত কতজন ভর্তি হয়েছেন সেটার সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে এ সংখ্যা দুই শতাধিক হবে। এছাড়া একের পর এক আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আমির শার্ট গার্মেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন জানান, ভূমিকম্পের সময় আমাদের বেশিরভাগ শ্রমিক নিরাপদে নেমে যান। আচমকা ভিড় থেকে একজন বলে ওঠেন ভবনে ফাটল। এসময় ভয় ছড়িয়ে পড়লে নারী শ্রমিকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি বেড়ে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহত হন। আমরা নিজেদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেককে চিকিৎসা করাই। প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বুলেন্সে করে অনেককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পে কুবির চারটি আবাসিক হলে বড় ফাটল: ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হলসহ চারটি হলের দেয়ালে ও মেঝেতে ভয়ংকর ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কুবিসহ সারা দেশে অনুভূত হওয়া ভূ-কম্পের আঘাতে এ ফাটলের সৃষ্টি হয়। এতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের দুইটি ও মেয়েদের একটি হলে ফাটলের দেখা দিয়েছে। এছাড়া মেয়েদের শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমেও হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলার দক্ষিণ পাশের ব্লকের ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডোরের মেঝের দুটি টাইলস উঠে গেছে। একই তলায় নতুন ও পুরাতন ব্লকের সংযোগস্থলের করিডোরে ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি ২০৪ ও ২০৫ নং কক্ষের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচ তলাব্যাপী ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া ২০৯ নং কক্ষেও ফাটল দেখা যায়। এছাড়া নজরুল হলের দোতলার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে নতুন ফাটল দেখা গেছে। ফয়জুন্নেছা হলের পাঁচতলার ৫১১ নম্বর কক্ষে, ৫০৩ নম্বর কক্ষের ফাটল এবং চারতলার ৪০৩ নম্বর সামনের করিডোরে ফাটল দেখা গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫১৯ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমরা নিচে নামতে পারিনি। কম্পন থামলে দক্ষিণ ব্লকে পাশাপাশি দুটি টাইলস উপরের দিকে হালকা উঠে থাকতে দেখা যায়। কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এহসান জানান, ‘প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। ঝাঁকুনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা সবাই দৌড়ে বাইরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি দেওয়ালে ছোটবড় কিছু ফাটল তৈরি হয়েছে।’
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া চৌধুরী আনিকা বলেন, ‘প্রথমে ছোটোখাটো কম্পন ভেবে রুমের দিকে আসছিলাম সবাইকে বলতে যে, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বড় বড় মালবাহী গাড়ি যাওয়ায় হালকা কেঁপে উঠেছে। কিন্তু গোসলখানা থেকে রুমে আসার পথে দেখি ছাদ আর আমার রুমের পাশের জয়েন্ট আলাদা হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে বাকি নেই ভূমিকম্প।’ হল প্রভোস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। যোগাযোগের পর বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলবেন বিষয়টি দেখার জন্য। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো: আবদুল লতিফ বলেন, আমি বিষয়টা জানতাম না, আপনার থেকে শুনেছি। যদি স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো। যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হয়, তবে তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এই বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
কেঁপে উঠল ঘরবাড়ি, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষ: ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘরবাড়ি, দালানকোঠা কেঁপে ওঠে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক মানুষ বাড়ির বাইরে সড়কে বের হয়ে আসেন। ভূমিকম্পের সময় বাড়িতেই ছিলেন নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের কারণে হঠাৎ তাঁর চারতলা ভবন কাঁপতে থাকে। এ সময় তিনি ও পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাঁরা বাসার বাইরে এসে সড়কে অবস্থান নেন। তবে ভূমিকম্পে ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তিনি গ্রামের একটি দোকানে বসেছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তিনি রাস্তায় বের হয়ে আসেন। পাশের পুকুরে দেখতে পান, পানি কাঁপছে। গ্রামের মানুষজন এখন ভূমিকম্প নিয়েই আলোচনা করছেন।
নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরে একটি বহুতল ভবনের ওপরের তলাগুলোতে কারখানা রয়েছে। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে মানুষের কোলাহল শুরু হয়। কিছু পোশাকশ্রমিককে দেখা যায়, তাঁরা পাগলের মতো ওপরতলা থেকে ভবনের নিচে নামছেন। তাঁরা ভবনের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমরা কই দাঁড়ামু ছার, ভিল্লিংনি (বিল্ডিং) ভাইঙ্গা পড়ে!’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি বাইরে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প অনুভব করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাননি। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ভূমিকম্পের তীব্রতা অনেক ছিল। ভূমিকম্পের পর তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছেন।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০২:৩১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : মাত্রা ছিল ৫.৫। চলতি বছর দেশে ১০টি হালকা ও মাঝারি ভূমিকম্প সংঘটিত । বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রত্যাশা ডেস্ক
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৫। গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটের দিকে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে উৎপত্তিস্থল কুমিল্লাসহ পাশর্^বর্তী এলাকায় স্বল্প কিছু ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
ইউরোপীয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) ও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা- ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল কুমিল্লা থেকে ৪৬ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিমি.। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৫। খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, টাঙ্গাইল, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ফেনী, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, কুষ্টিয়াসহ প্রায় সারা দেশেই কম্পন অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ। ঢাকার আগারগাঁও ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৬। আবহাওয়া অফিস বলছে এটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প। সর্বশেষ ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৪৬ মিনিটে ভূ-কম্পন অনুভূত হয় বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জয়পুরহাট, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, রাজশাহী, জামালপুর, লালমনিরহাট, সিলেট, মৌলভীবাজার, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম, শেরপুর, সাভার, গাজীপুর, পঞ্চগড়, কক্সবাজার, লালমনিরহাট, হবিগঞ্জ, নাটোর ও কুড়িগ্রামে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০টি হালকা ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। এতে জানমালের তেমন ক্ষতি না হলেও বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বছর প্রথম ভূকম্পন অনুভূত হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের পাশাপাশি কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলাও। ৩ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে জানমালের তেমন ক্ষতি হয়নি। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে মাঝারি মাত্রার জোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির আয়াবতি ও রাখাইন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের কক্সবাজারেও ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার আগারগাঁও থেকে ৩৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১।
চট্টগ্রামে গত ৩০ এপ্রিল ৪ দশমিক ৬ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল অক্ষাংশ ২২ দশমিক ৯৩ ডিগ্রি উত্তর, দ্রাঘিমা ৯৪ দশমিক ১৯ ডিগ্রি পূর্ব মিয়ানমারের মাউলাইকে। রাজধানীর ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এর দূরত্ব ছিল ৪০০ কিলোমিটার। গত ৫ মে রাজধানীতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে দোহারে। গত ৫ জুন ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের কাছে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে। গত ১৬ জুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ, মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫। গত ১৪ আগস্ট সিলেটে ফের ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। একই সঙ্গে ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়ও এটি অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল আসামের মেঘালয়, গভীরতা ছিল ৩৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২২৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে। ঠিক ১৬ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২৯ আগস্ট সিলেট মহানগরীর আশপাশে ফের মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তাপুরে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে ৪ দশমিক ৪ মাত্রার মৃদু ভূমিকম্প আঘাত হানে। আসামে আঘাত হানা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের সিলেট জেলাও। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২৬৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের আসামের কাছাড়ে। ১৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল সদরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান।
কুমিল্লায় আহত দুই শতাধিক: ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে ভবন থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে দুই শতাধিক পোশাককর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ছুপুয়া এলাকায় অবস্থিত আমির শার্ট গার্মেন্ট কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, আহতদের সেবায় আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। এ পর্যন্ত কতজন ভর্তি হয়েছেন সেটার সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে এ সংখ্যা দুই শতাধিক হবে। এছাড়া একের পর এক আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আমির শার্ট গার্মেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন জানান, ভূমিকম্পের সময় আমাদের বেশিরভাগ শ্রমিক নিরাপদে নেমে যান। আচমকা ভিড় থেকে একজন বলে ওঠেন ভবনে ফাটল। এসময় ভয় ছড়িয়ে পড়লে নারী শ্রমিকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি বেড়ে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহত হন। আমরা নিজেদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেককে চিকিৎসা করাই। প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বুলেন্সে করে অনেককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পে কুবির চারটি আবাসিক হলে বড় ফাটল: ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হলসহ চারটি হলের দেয়ালে ও মেঝেতে ভয়ংকর ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কুবিসহ সারা দেশে অনুভূত হওয়া ভূ-কম্পের আঘাতে এ ফাটলের সৃষ্টি হয়। এতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের দুইটি ও মেয়েদের একটি হলে ফাটলের দেখা দিয়েছে। এছাড়া মেয়েদের শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমেও হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলার দক্ষিণ পাশের ব্লকের ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডোরের মেঝের দুটি টাইলস উঠে গেছে। একই তলায় নতুন ও পুরাতন ব্লকের সংযোগস্থলের করিডোরে ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি ২০৪ ও ২০৫ নং কক্ষের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচ তলাব্যাপী ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া ২০৯ নং কক্ষেও ফাটল দেখা যায়। এছাড়া নজরুল হলের দোতলার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে নতুন ফাটল দেখা গেছে। ফয়জুন্নেছা হলের পাঁচতলার ৫১১ নম্বর কক্ষে, ৫০৩ নম্বর কক্ষের ফাটল এবং চারতলার ৪০৩ নম্বর সামনের করিডোরে ফাটল দেখা গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫১৯ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমরা নিচে নামতে পারিনি। কম্পন থামলে দক্ষিণ ব্লকে পাশাপাশি দুটি টাইলস উপরের দিকে হালকা উঠে থাকতে দেখা যায়। কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এহসান জানান, ‘প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। ঝাঁকুনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা সবাই দৌড়ে বাইরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি দেওয়ালে ছোটবড় কিছু ফাটল তৈরি হয়েছে।’
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া চৌধুরী আনিকা বলেন, ‘প্রথমে ছোটোখাটো কম্পন ভেবে রুমের দিকে আসছিলাম সবাইকে বলতে যে, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বড় বড় মালবাহী গাড়ি যাওয়ায় হালকা কেঁপে উঠেছে। কিন্তু গোসলখানা থেকে রুমে আসার পথে দেখি ছাদ আর আমার রুমের পাশের জয়েন্ট আলাদা হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে বাকি নেই ভূমিকম্প।’ হল প্রভোস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। যোগাযোগের পর বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলবেন বিষয়টি দেখার জন্য। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো: আবদুল লতিফ বলেন, আমি বিষয়টা জানতাম না, আপনার থেকে শুনেছি। যদি স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো। যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হয়, তবে তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এই বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
কেঁপে উঠল ঘরবাড়ি, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষ: ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘরবাড়ি, দালানকোঠা কেঁপে ওঠে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক মানুষ বাড়ির বাইরে সড়কে বের হয়ে আসেন। ভূমিকম্পের সময় বাড়িতেই ছিলেন নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের কারণে হঠাৎ তাঁর চারতলা ভবন কাঁপতে থাকে। এ সময় তিনি ও পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাঁরা বাসার বাইরে এসে সড়কে অবস্থান নেন। তবে ভূমিকম্পে ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তিনি গ্রামের একটি দোকানে বসেছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তিনি রাস্তায় বের হয়ে আসেন। পাশের পুকুরে দেখতে পান, পানি কাঁপছে। গ্রামের মানুষজন এখন ভূমিকম্প নিয়েই আলোচনা করছেন।
নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরে একটি বহুতল ভবনের ওপরের তলাগুলোতে কারখানা রয়েছে। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে মানুষের কোলাহল শুরু হয়। কিছু পোশাকশ্রমিককে দেখা যায়, তাঁরা পাগলের মতো ওপরতলা থেকে ভবনের নিচে নামছেন। তাঁরা ভবনের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমরা কই দাঁড়ামু ছার, ভিল্লিংনি (বিল্ডিং) ভাইঙ্গা পড়ে!’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি বাইরে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প অনুভব করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাননি। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ভূমিকম্পের তীব্রতা অনেক ছিল। ভূমিকম্পের পর তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছেন।