ঢাকা ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে কোটি কোটি ডলার আয় করছে মেটা

  • আপডেট সময় : ০৯:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন ও অবৈধ পণ্য বিক্রির মাধ্যমে প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার আয় করছে মেটা।

এমন অবাক করা তথ্য উঠে এসেছে রয়টার্সের নতুন এক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে থাকা এসব বিজ্ঞাপনের সংখ্যা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে এবং কেন কোম্পানিটি এখনো কার্যকরভাবে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।

রয়টার্স বলছে, গত বছর মেটা নিজেই অনুমান করেছিল যে তার মোট আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে আসতে পারে যা অর্থের হিসাবে দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ছয়শ কোটি ডলার। এই আয়ের মধ্যে রয়েছে ভুয়া ই-কমার্স ও বিনিয়োগ স্কিম, অবৈধ অনলাইন ক্যাসিনো এবং নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রয় কার্যক্রমের বিজ্ঞাপন। খোদ কোম্পানিটির গবেষকরা অনুমান করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া সফল অনলাইন প্রতারণাগুলোর মোট এক-তৃতীয়াংশের সঙ্গেই কোনো না কোনোভাবে মেটার অ্যাপগুলো জড়িত।

রয়টার্সের ওই প্রতিবেদন বলছে, মেটা কখনও কখনও এই ভুয়া বিজ্ঞাপনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কাজটি নিজ দলের জন্য কঠিন করে তুলেছে। কোম্পানির নিজস্ব প্রক্রিয়া এমনভাবে কাজ করে যে, একই ব্যক্তি বা কোম্পানি একাধিকবার ধরা পড়লেও তারা বিজ্ঞাপন কিনতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, কোনো ‘ছোট বিজ্ঞাপনদাতা’ আর্থিক প্রতারণা প্রচার করার অভিযোগে ধরা পড়লেও তাকে ব্লক করতে কমপক্ষে আটবার ফ্ল্যাগ করা প্রয়োজন, আর বড় বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটি আরো বিস্ময়কর। কেউ কেউ পাঁচশ বারেরও বেশি লঙ্ঘন করলেও তাকে প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানো হয়নি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মেটার ব্যবহারকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা থাকলেও বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষেত্রে কোম্পানির এই ‘অবাক করা নমনীয়তা’ মূলত আর্থিক স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। রয়টার্সের তথ্যমতে, মেটা এই বছর যে চারটি ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচারণা সরিয়েছে সেগুলো থেকেই কোম্পানির আয় হয়েছিল ছয় দশমিক সাত কোটি ডলার। কোম্পানির আয় যেন না কমে বিষয়টি মাথায় রেখে, কীভাবে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করা যায় এ বিষয়ে মেটার কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট লিখেছে, কোম্পানির জ্যেষ্ঠ কর্মীদের এমন নির্দেশও দেওয়া হয়েছে যে, ‘কোম্পানির মোট আয়ের ০.১৫ শতাংশের বেশি ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।’

রয়টার্সের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রতিক্রিয়ায় মেটা বলে, তাদের মোট আয়ের ১০ শতাংশ প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন থেকে আসে এমন দাবি ‘অতিরঞ্জিত ও অত্যন্ত বিস্তৃত অনুমান।’ তবে এই দাবির পক্ষে তারা কোনো বিকল্প পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।

মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, গত ১৮ মাসে আমরা বিশ্বব্যাপী প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ ৫৮ শতাংশ কমাতে পেরেছি এবং ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১৩ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ভুয়া বিজ্ঞাপন কনটেন্ট মুছে ফেলেছি।

সানা/আপ্র/০৮/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতির ডাক প্রাথমিক শিক্ষকদের

ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে কোটি কোটি ডলার আয় করছে মেটা

আপডেট সময় : ০৯:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন ও অবৈধ পণ্য বিক্রির মাধ্যমে প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার আয় করছে মেটা।

এমন অবাক করা তথ্য উঠে এসেছে রয়টার্সের নতুন এক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে থাকা এসব বিজ্ঞাপনের সংখ্যা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে এবং কেন কোম্পানিটি এখনো কার্যকরভাবে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।

রয়টার্স বলছে, গত বছর মেটা নিজেই অনুমান করেছিল যে তার মোট আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে আসতে পারে যা অর্থের হিসাবে দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ছয়শ কোটি ডলার। এই আয়ের মধ্যে রয়েছে ভুয়া ই-কমার্স ও বিনিয়োগ স্কিম, অবৈধ অনলাইন ক্যাসিনো এবং নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রয় কার্যক্রমের বিজ্ঞাপন। খোদ কোম্পানিটির গবেষকরা অনুমান করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া সফল অনলাইন প্রতারণাগুলোর মোট এক-তৃতীয়াংশের সঙ্গেই কোনো না কোনোভাবে মেটার অ্যাপগুলো জড়িত।

রয়টার্সের ওই প্রতিবেদন বলছে, মেটা কখনও কখনও এই ভুয়া বিজ্ঞাপনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কাজটি নিজ দলের জন্য কঠিন করে তুলেছে। কোম্পানির নিজস্ব প্রক্রিয়া এমনভাবে কাজ করে যে, একই ব্যক্তি বা কোম্পানি একাধিকবার ধরা পড়লেও তারা বিজ্ঞাপন কিনতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, কোনো ‘ছোট বিজ্ঞাপনদাতা’ আর্থিক প্রতারণা প্রচার করার অভিযোগে ধরা পড়লেও তাকে ব্লক করতে কমপক্ষে আটবার ফ্ল্যাগ করা প্রয়োজন, আর বড় বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটি আরো বিস্ময়কর। কেউ কেউ পাঁচশ বারেরও বেশি লঙ্ঘন করলেও তাকে প্ল্যাটফর্ম থেকে সরানো হয়নি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মেটার ব্যবহারকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা থাকলেও বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষেত্রে কোম্পানির এই ‘অবাক করা নমনীয়তা’ মূলত আর্থিক স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। রয়টার্সের তথ্যমতে, মেটা এই বছর যে চারটি ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচারণা সরিয়েছে সেগুলো থেকেই কোম্পানির আয় হয়েছিল ছয় দশমিক সাত কোটি ডলার। কোম্পানির আয় যেন না কমে বিষয়টি মাথায় রেখে, কীভাবে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করা যায় এ বিষয়ে মেটার কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট লিখেছে, কোম্পানির জ্যেষ্ঠ কর্মীদের এমন নির্দেশও দেওয়া হয়েছে যে, ‘কোম্পানির মোট আয়ের ০.১৫ শতাংশের বেশি ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।’

রয়টার্সের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রতিক্রিয়ায় মেটা বলে, তাদের মোট আয়ের ১০ শতাংশ প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন থেকে আসে এমন দাবি ‘অতিরঞ্জিত ও অত্যন্ত বিস্তৃত অনুমান।’ তবে এই দাবির পক্ষে তারা কোনো বিকল্প পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।

মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, গত ১৮ মাসে আমরা বিশ্বব্যাপী প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ ৫৮ শতাংশ কমাতে পেরেছি এবং ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১৩ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ভুয়া বিজ্ঞাপন কনটেন্ট মুছে ফেলেছি।

সানা/আপ্র/০৮/১১/২০২৫