প্রযুক্তি ডেস্ক : এক বছরেরও বেশি সময় ‘প্রাইভেট মোডে’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর ‘হরাইজন ওয়ার্ল্ডস’ অ্যাপ উন্মুক্ত করেছে মেটা। অ্যাপটির ডিজিটাল জগতকে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে ‘সোশাল ভার্চুয়াল রিয়ালিটি স্পেস’ হিসেবে।
সামাজিক যোগাযোগের শীর্ষ মাধ্যম ফেইসবুক নাম পাল্টে ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড’ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির যে পণ্য বা সেবাগুলো বাজারজাত করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ‘হরাইজন ওয়ার্ল্ডস’কে। নাম পরিবর্তনের সময়েই একাধিক ডিজিটাল দুনিয়াকে সংযুক্ত করে ‘মেটাভার্স’ নির্মাণ লক্ষ্যের কথা বলেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাপটিতে মূল গেইমের পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা নিজের ইচ্ছেমতো মিনি-গেইম নির্মাণ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। কাজের ধরনের হিসাবে রোব্লক্স এবং কন্টেন্ট নির্মাতার উপর নির্ভরশীল অন্যান্য অ্যাপের সঙ্গে মিল রয়েছে হরাইজন ওয়ার্ল্ডসের। তবে নির্মাতাদের সরাসরি আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কোনো সুযোগ আপাতত নেই অ্যাপটিতে। তার বদলে, এক কোটি ডলারের বিশেষ ‘নির্মাতা তহবিল’ গঠন করেছে মেটা। অ্যাপের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা জিতলে ওই তহবিল থেকে পুরষ্কারের অর্থ পাবেন নির্মাতারা।
মেটা’র অকুলাস কোয়েস্ট ২ হেডসেটের ক্রেতারা ‘হরাইজন ওয়ার্ল্ডস’ ব্যবহার করতে পারবেন বিনা খরচে। ১৮ বা তার বেশি বয়সী যে কেউ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি জগতটিতে নিজের ভাসমান অ্যাভাটার তৈরি করতে পারবেন। তবে, কেবল দেহের উপরের অংশই অ্যাভাটার হিসেবে দেখা যাবে অ্যাপটিতে।
“হরাইাজন ওয়ার্ল্ডস নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, নির্মাতাদের জন্য সংশ্লিষ্ট সেরা টুলগুলো সরবরাহ করা যেন একটি বন্ধুসুলভ ভিআর দুনিয়ায় নতুন জীবন আনতে পারেন তারা”– হরাইজন ওয়ার্ল্ডসের ঘোষণায় বলেছে মেটা। “আমরা পুরো বছর ধরে ওই টুলগুলো নির্মাণ করেছি এবং কন্টেন্ট নির্মাতাদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে উন্নত করেছি।”
গেইমাররা যেন বাড়তি কোনো ডাউনলোড বা অন্যান্য কোনো ঝক্কি ছাড়াই সহজে ওই টুলগুলো ব্যবহার করতে পারেন সেজন্য নির্মাণ টুলগুলো সরাসরি ভার্চুয়ালি রিয়ালিটি গেইমের মধ্যেই দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিবিসি।
হরাইজন ওয়ার্ল্ডসে উড়ে বেড়াতে পারবেন গেইমার। গাছ বা অন্যান্য ‘আইটেম’ নির্মাণকাজে ব্যবহার করে নিজের আলাদা ‘কাস্টম এনভায়রনমেন্ট’ বানাতে পারবেন তারা। আর নিজের তৈরি গেইমের নিয়ম নির্ধারণের জন্য আগে থেকে লিখে রাখা কোড ব্যবহার করতে পারবেন গেইমাররা। আর এই কর্মকা-ের সবই করা যাবে ওই ভার্চুয়াল রিয়ালিটি দুনিয়ার মধ্যেই, প্রয়োজন পড়বে না কোনো আলাদা কম্পিউটার স্ক্রিনের।

প্রায় একই প্রক্রিয়ায় কাজ করছে অন্যান্য ভিআর নির্মাতাদের অনেকে। গেইমারদের জন্য নিজস্ব ‘রুম’ নির্মাণের সুযোগ দেয় ভিআর সেবা ‘রেক রুম’। নিজস্ব রুমে অন্যদের সঙ্গে গেইম খেলা বা আলাপাচারিতার সুযোগ পান ব্যবহারকারী। মেটা দাবি করছে, অ্যাপটি বেটা পর্যায়ে থাকা অবস্থাতেই “কয়েক হাজার” ভার্চুয়াল জগত তৈরি করেছেন এর ব্যবহারকারীরা।