ঢাকা ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫
বাংলাদেশ-জাপান ছয় সমঝোতা স্মারক

ভালো বন্ধু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ায়, জাপান সেই বন্ধু: ড. ইউনূস

  • আপডেট সময় : ০৮:৩০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

শুক্রবার টোকিওর জেট্রো সদর দপ্তরে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস -ছবি পিআইডি

প্রত্যাশা ডেস্ক: নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাপানের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওর জেট্রো সদর দপ্তরে এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে।’

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা সংক্রান্ত ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এবং জাইকা যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ এর আয়োজন করে বলে বাসস জানিয়েছে। যেখানে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা বড় বিপদের মধ্যে আছি। আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশ ১৬ বছরের একটি ভূমিকম্প পার করেছে। সবকিছু ভেঙে পড়েছে। আমরা এখন টুকরো টুকরো করে গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।

জাপানকে বাংলাদেশের বন্ধু আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, একজন ভালো বন্ধু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ায় এবং জাপান সেই বন্ধু। আমাদের কাজ হলো অসম্ভবকে সম্ভব করা এবং আপনারা আমাদের সঙ্গী ও বন্ধু। এটি বাস্তবে রূপ দিন।

নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা একটি ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই যে, এটি সম্ভব হয়েছে, তা-ও নিখুঁতভাবে। অন্য একটি বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করুন, যাকে আমরা নতুন বাংলাদেশ বলি। তাই আমাদের কাজ হচ্ছে একসাথে সেই নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করা। আপনাদের সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়নযোগ্য এবং আমরা ইতোমধ্যে তার ভিত্তি স্থাপন করেছি।

মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে সম্প্রতি জাপানের পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন এবং টিওএ করপোরেশনের সঙ্গে বাংলাদেশ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এমআইডিআই উদ্যোগের মূল ভিত্তি এ সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে সহায়তা করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। এজন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “এটি পিছিয়ে থাকা একটি দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। এটি কেবল অর্থ উপার্জনের বিষয় নয়। এটি মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ব্যাপার।” সমুদ্র যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে লাখ লাখ মানুষের ‘দরজা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের মানুষের সমুদ্রে যাতায়াতের পথ হতে পারে বাংলাদেশ। “মাতারবাড়ি হচ্ছে বাকি বিশ্বের জন্য দরজা। আমরা তাদের জন্য এই দরজা খোলা রাখব” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

সেমিনারে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার তাকেউচি শিনজি বলেন, বাংলাদেশ হলো একটি কৌশলগত বিন্দু যা এশিয়াকে সংযুক্ত করে এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে জাপান দেশটির উন্নয়নে সহায়তা করে আসছে। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় জাপান সরকার।”

জাপানি সরকার দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে বাংলাদেশে, জাপানি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে উৎসাহ দিচ্ছে বলেও জানান তাকেউচি। ড. ইউনূস বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করে টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের দ্বিপকক্ষীয় বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইল শিল্পভিত্তিক উল্লেখ করে তিনি আরো বিস্তৃত খাতে বিনিয়োগ বৈচিত্র্য আনার আহ্বান জানান।

সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

জাপানের সঙ্গে ছয় সমঝোতা স্মারক: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা সংক্রান্ত ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। শুক্রবার টোকিওতে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ শীর্ষক সেমিনারের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে এসব স্মারক সই হয় বলে খবর দিয়েছে বাসস।

জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) ও বাংলাদেশের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। এর মাধ্যমে জ্বালানি খাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে জেবিআইসি। আরেকটি সমঝোতা হয়েছে অনোডা ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের (বিএসইজেড) মধ্যে। এর আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি জমি লিজ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে। অনোডা ইতোমধ্যে জাইকার উদ্যোগে একটি গ্যাস মিটার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন সেখানে গ্যাস মিটারের অ্যাসেম্বলি, ইন্সপেকশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কারখানা স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি লিজ সংক্রান্ত আরেক সমঝোতা হয়েছে বাংলাদেশ নেক্সিস কোম্পানি ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের মধ্যে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ নেক্সিস অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি কারখানায় গার্মেন্ট এক্সেসরিজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে।

আরেকটি সমঝোতা হয়েছে গ্লাগিট, মুসাসি সিমিতিসু ইন্ডাস্ট্রি গ্লাফিট এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মধ্যে। এর আওতায় ব্যাটারি চালিত বাইসাইকেল ও ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল তৈরির কারখানা স্থাপন করার কথা। ঞ্চম সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে কিপার কোর কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে, যারা বাংলাদেশে ২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে তথ্য নিরাপত্তায় কিপার প্রযুক্তি’র পাইলট প্রকল্প শুরু করবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে একটি কোয়ান্টাম-প্রতিরোধী ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করা। অপর সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বিডার মধ্যে। এই চুক্তির মাধ্যমে জাইকা ইন্টিগ্রেটেড সিঙ্গেল উইন্ডো প্ল্যাটফর্মের (আইএসডব্লিউপি) প্রাথমিক উন্নয়নে কারিগরি ও অন্যান্য সহযোগিতা দেবে।

বিডা নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্মটির লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার সেবাকে এক ছাদের নিচে আনা।

স্মারক স্বাক্ষরকারী সব পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এখন আমাদের কাজ এর বাস্তবায়ন করা। আমি অভিভূত।”

গত ১৬ বছরের বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা টেনে তিনি বলেন, “এই সময়ে দেশটিতে একের পর এক ভূমিকম্প হয়েছে, যার ফলে কিছুই অক্ষত ছিল না। এই পরিস্থিতিতে একজন ভালো বন্ধু এগিয়ে এলো। আর সেই বন্ধু হলো জাপান। আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘চলুন হাতে হাত মিলিয়ে বাস্তবায়ন করি। এটা শুধু অর্থ উপার্জনের বিষয় নয়। এটা মানুষের জীবন পরিবর্তনের বিষয়।’

জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার শিনজি তাকেউচি অনুষ্ঠানে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মরত জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা ১০ বছর আগের তুলনায় তিন-চতুর্থাংশ বেশি। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ও মারুবেনি কর্পোরেশনের বোর্ড সদস্য ফুমিয়া কোকুবু-ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

জাপানি কোম্পানিগুলোকে আরো বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার: নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাপানি কোম্পানিগুলোর সহায়তা চেয়েছেন এবং আরো বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (৩০ মে) জাপানে তার চলমান সফরের তৃতীয় দিনে টোকিওতে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক স্বার্থসম্পন্ন জাপানি কোম্পানিগুলোর কিছু শীর্ষ নির্বাহী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে তা জানানো হয়েছে। ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের সবাইকে দেখে দারুণ লাগলো। এটি এমন কিছু যা আমাদের আশ্বস্ত করে। গত ১০ মাসে আমরা টুকরো টুকরো করে জিনিসপত্র তৈরি করছিলাম; সেখানেই জাপানের সহায়তা অত্যন্ত সহায়ক ছিল। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ জীবনের চিহ্ন পেয়েছে। আজ আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি যখন আমাদের আপনার সমর্থন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমাদের প্রতিশ্রুতি হল, একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করা। আমরা পুরোনো বাংলাদেশ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের এখন যেসব ত্রুটি রয়েছে তা শিগগিরই দূর হবে। আমরা আশা করি এটি অতীতের বিষয় হয়ে যাবে। এটি জাতির জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ। আমরা সবাই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং আমরা এটিকে অতীতের বিষয় হিসেবে ধরে রাখতে চাই।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে জেট্রোর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নোরিহিকো ইশিগুরো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সুযোগ দেখেছি। জাপান বাংলাদেশ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটি (জেবিসিসিইসি) এর চেয়ারম্যান এবং মারুবেনি কর্পোরেশনের বোর্ড সদস্য এবং নির্বাহী কর্পোরেট উপদেষ্টা ফুমিয়া কোকুবু বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ৮৫ শতাংশ জাপানি কোম্পানি আশা করে, এই বছর অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরিত হবে। তিনি কর বিধিমালায় সংস্কারেরও প্রত্যাশা করেন।

বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টিকে সুরক্ষিত করেছে তা হলো অর্থনীতি; কোনো প্রকল্প বন্ধ করা হয়নি এবং কোনো ব্যবসা স্থগিত করা হয়নি।
গোলটেবিল আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুমিতোমো কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিঙ্গো উয়েনো, ইউগলেনা কোং লিমিটেডের সিইও মিতসুরু ইজুমো, জেরা-এর প্রধান বৈশ্বিক কৌশলবিদ স্টিভেন উইন, জেবিআইসির সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজুনোরি ওগাওয়া, ওনোডা ইনকর্পোরেটেডের সভাপতি শিগেয়োশি ওনোদা, জেট্রো-এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুয়া নাকাজো এবং আইডিই-জেট্রো-এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়ুমি মুরায়ামা। সমাপনী বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ-জাপান ছয় সমঝোতা স্মারক

ভালো বন্ধু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ায়, জাপান সেই বন্ধু: ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ০৮:৩০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাপানের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওর জেট্রো সদর দপ্তরে এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে।’

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা সংক্রান্ত ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এবং জাইকা যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ এর আয়োজন করে বলে বাসস জানিয়েছে। যেখানে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা বড় বিপদের মধ্যে আছি। আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশ ১৬ বছরের একটি ভূমিকম্প পার করেছে। সবকিছু ভেঙে পড়েছে। আমরা এখন টুকরো টুকরো করে গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।

জাপানকে বাংলাদেশের বন্ধু আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, একজন ভালো বন্ধু কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ায় এবং জাপান সেই বন্ধু। আমাদের কাজ হলো অসম্ভবকে সম্ভব করা এবং আপনারা আমাদের সঙ্গী ও বন্ধু। এটি বাস্তবে রূপ দিন।

নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা একটি ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই যে, এটি সম্ভব হয়েছে, তা-ও নিখুঁতভাবে। অন্য একটি বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করুন, যাকে আমরা নতুন বাংলাদেশ বলি। তাই আমাদের কাজ হচ্ছে একসাথে সেই নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করা। আপনাদের সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়নযোগ্য এবং আমরা ইতোমধ্যে তার ভিত্তি স্থাপন করেছি।

মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে সম্প্রতি জাপানের পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন এবং টিওএ করপোরেশনের সঙ্গে বাংলাদেশ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এমআইডিআই উদ্যোগের মূল ভিত্তি এ সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে সহায়তা করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। এজন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “এটি পিছিয়ে থাকা একটি দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। এটি কেবল অর্থ উপার্জনের বিষয় নয়। এটি মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ব্যাপার।” সমুদ্র যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে লাখ লাখ মানুষের ‘দরজা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের মানুষের সমুদ্রে যাতায়াতের পথ হতে পারে বাংলাদেশ। “মাতারবাড়ি হচ্ছে বাকি বিশ্বের জন্য দরজা। আমরা তাদের জন্য এই দরজা খোলা রাখব” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

সেমিনারে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার তাকেউচি শিনজি বলেন, বাংলাদেশ হলো একটি কৌশলগত বিন্দু যা এশিয়াকে সংযুক্ত করে এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে জাপান দেশটির উন্নয়নে সহায়তা করে আসছে। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় জাপান সরকার।”

জাপানি সরকার দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে বাংলাদেশে, জাপানি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগে উৎসাহ দিচ্ছে বলেও জানান তাকেউচি। ড. ইউনূস বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করে টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের দ্বিপকক্ষীয় বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইল শিল্পভিত্তিক উল্লেখ করে তিনি আরো বিস্তৃত খাতে বিনিয়োগ বৈচিত্র্য আনার আহ্বান জানান।

সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

জাপানের সঙ্গে ছয় সমঝোতা স্মারক: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা সংক্রান্ত ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। শুক্রবার টোকিওতে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ শীর্ষক সেমিনারের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে এসব স্মারক সই হয় বলে খবর দিয়েছে বাসস।

জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) ও বাংলাদেশের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। এর মাধ্যমে জ্বালানি খাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে জেবিআইসি। আরেকটি সমঝোতা হয়েছে অনোডা ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের (বিএসইজেড) মধ্যে। এর আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি জমি লিজ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে। অনোডা ইতোমধ্যে জাইকার উদ্যোগে একটি গ্যাস মিটার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন সেখানে গ্যাস মিটারের অ্যাসেম্বলি, ইন্সপেকশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কারখানা স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি লিজ সংক্রান্ত আরেক সমঝোতা হয়েছে বাংলাদেশ নেক্সিস কোম্পানি ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের মধ্যে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ নেক্সিস অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি কারখানায় গার্মেন্ট এক্সেসরিজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে।

আরেকটি সমঝোতা হয়েছে গ্লাগিট, মুসাসি সিমিতিসু ইন্ডাস্ট্রি গ্লাফিট এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মধ্যে। এর আওতায় ব্যাটারি চালিত বাইসাইকেল ও ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল তৈরির কারখানা স্থাপন করার কথা। ঞ্চম সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে কিপার কোর কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে, যারা বাংলাদেশে ২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে তথ্য নিরাপত্তায় কিপার প্রযুক্তি’র পাইলট প্রকল্প শুরু করবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে একটি কোয়ান্টাম-প্রতিরোধী ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করা। অপর সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বিডার মধ্যে। এই চুক্তির মাধ্যমে জাইকা ইন্টিগ্রেটেড সিঙ্গেল উইন্ডো প্ল্যাটফর্মের (আইএসডব্লিউপি) প্রাথমিক উন্নয়নে কারিগরি ও অন্যান্য সহযোগিতা দেবে।

বিডা নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্মটির লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার সেবাকে এক ছাদের নিচে আনা।

স্মারক স্বাক্ষরকারী সব পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এখন আমাদের কাজ এর বাস্তবায়ন করা। আমি অভিভূত।”

গত ১৬ বছরের বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা টেনে তিনি বলেন, “এই সময়ে দেশটিতে একের পর এক ভূমিকম্প হয়েছে, যার ফলে কিছুই অক্ষত ছিল না। এই পরিস্থিতিতে একজন ভালো বন্ধু এগিয়ে এলো। আর সেই বন্ধু হলো জাপান। আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘চলুন হাতে হাত মিলিয়ে বাস্তবায়ন করি। এটা শুধু অর্থ উপার্জনের বিষয় নয়। এটা মানুষের জীবন পরিবর্তনের বিষয়।’

জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার শিনজি তাকেউচি অনুষ্ঠানে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মরত জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা ১০ বছর আগের তুলনায় তিন-চতুর্থাংশ বেশি। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ও মারুবেনি কর্পোরেশনের বোর্ড সদস্য ফুমিয়া কোকুবু-ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

জাপানি কোম্পানিগুলোকে আরো বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার: নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাপানি কোম্পানিগুলোর সহায়তা চেয়েছেন এবং আরো বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (৩০ মে) জাপানে তার চলমান সফরের তৃতীয় দিনে টোকিওতে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক স্বার্থসম্পন্ন জাপানি কোম্পানিগুলোর কিছু শীর্ষ নির্বাহী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে তা জানানো হয়েছে। ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের সবাইকে দেখে দারুণ লাগলো। এটি এমন কিছু যা আমাদের আশ্বস্ত করে। গত ১০ মাসে আমরা টুকরো টুকরো করে জিনিসপত্র তৈরি করছিলাম; সেখানেই জাপানের সহায়তা অত্যন্ত সহায়ক ছিল। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ জীবনের চিহ্ন পেয়েছে। আজ আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি যখন আমাদের আপনার সমর্থন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমাদের প্রতিশ্রুতি হল, একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করা। আমরা পুরোনো বাংলাদেশ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের এখন যেসব ত্রুটি রয়েছে তা শিগগিরই দূর হবে। আমরা আশা করি এটি অতীতের বিষয় হয়ে যাবে। এটি জাতির জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ। আমরা সবাই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং আমরা এটিকে অতীতের বিষয় হিসেবে ধরে রাখতে চাই।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে জেট্রোর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নোরিহিকো ইশিগুরো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সুযোগ দেখেছি। জাপান বাংলাদেশ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটি (জেবিসিসিইসি) এর চেয়ারম্যান এবং মারুবেনি কর্পোরেশনের বোর্ড সদস্য এবং নির্বাহী কর্পোরেট উপদেষ্টা ফুমিয়া কোকুবু বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ৮৫ শতাংশ জাপানি কোম্পানি আশা করে, এই বছর অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরিত হবে। তিনি কর বিধিমালায় সংস্কারেরও প্রত্যাশা করেন।

বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টিকে সুরক্ষিত করেছে তা হলো অর্থনীতি; কোনো প্রকল্প বন্ধ করা হয়নি এবং কোনো ব্যবসা স্থগিত করা হয়নি।
গোলটেবিল আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুমিতোমো কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিঙ্গো উয়েনো, ইউগলেনা কোং লিমিটেডের সিইও মিতসুরু ইজুমো, জেরা-এর প্রধান বৈশ্বিক কৌশলবিদ স্টিভেন উইন, জেবিআইসির সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজুনোরি ওগাওয়া, ওনোডা ইনকর্পোরেটেডের সভাপতি শিগেয়োশি ওনোদা, জেট্রো-এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুয়া নাকাজো এবং আইডিই-জেট্রো-এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়ুমি মুরায়ামা। সমাপনী বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ