আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তান, ভারত, চীন ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের ২৩টি দেশকে বড় ধরনের মাদক উৎপাদক বা মাদক পাচারকারী দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তার ভাষায়, এসব দেশ অবৈধ মাদক ও মাদকের কাঁচামাল তৈরি ও পাচারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত সোমবার মার্কিন কংগ্রেসে জমা দেওয়া এক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিটারমিনেশন’-এ ট্রাম্প এ তালিকা প্রকাশ করেন।
তালিকাভুক্ত দেশগুলো হলো— আফগানিস্তান, বাহামা, বেলিজ, বলিভিয়া, মিয়ানমার, চীন, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, ডোমিনিকান রিপাবলিক, ইকুয়েডর, এল সালভাদর, গুয়াতেমালা, হাইতি, হন্ডুরাস, ভারত, জ্যামাইকা, লাওস, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, পাকিস্তান, পানামা, পেরু ও ভেনেজুয়েলা।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প এই ‘মেজরস লিস্ট’ কংগ্রেসে জমা দিয়ে দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদক সরবরাহ ও পাচারের জন্য দায়ী করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এই ২৩ দেশের মধ্যে আফগানিস্তান, বলিভিয়া, মিয়ানমার, কলম্বিয়া ও ভেনেজুয়েলা মাদকবিরোধী কার্যক্রমে গুরুতর ব্যর্থতা দেখিয়েছে। এ দেশগুলোকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ আরো জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব দেশের মাধ্যমে অবৈধ মাদক ও কাঁচামাল উৎপাদন ও পাচার যুক্তরাষ্ট্র ও এর জনগণের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি। তবে তালিকাভুক্ত হওয়া মানে এই নয় যে, সংশ্লিষ্ট দেশ বা দেশের সরকারগুলো মাদকবিরোধী কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে না। এটি মূলত ভৌগোলিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার ওপর নির্ভর করে, যা অনেক সময় শক্তিশালী আইন প্রয়োগের পরও মাদক উৎপাদন বা পাচার ঠেকানো কঠিন করে তোলে।
ট্রাম্প বলেন, গত ১২ মাসে আফগানিস্তান, বলিভিয়া, মিয়ানমার, কলম্বিয়া ও ভেনেজুয়েলা আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী চুক্তির শর্ত মানতে বা কার্যকর ব্যবস্থা নিতে গুরুতরভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
চীন প্রসঙ্গে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঁচামাল সরবরাহকারী যা অবৈধ ফেন্টানিল উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি চীন থেকে নাইটাজিনস ও মেথঅ্যামফেটামিনসহ অন্যান্য কৃত্রিম মাদকও বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
তার মতে, বেইজিংকে এই প্রবাহ রোধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং মাদকের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, তালেবান অবৈধ মাদকের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করলেও দেশটিতে এর বিপুল মজুদ ও উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে মেথঅ্যামফেটামিনের উৎপাদন বাড়ছে। এ থেকে পাওয়া অর্থ আন্তর্জাতিক অপরাধচক্র ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে।
তালেবানের কিছু অংশ এখনো এ ব্যবসা থেকে লাভবান হচ্ছে বলেও ট্রাম্প অভিযোগ করেন।
ট্রাম্প আরো বলেন, ফেন্টানিলসহ প্রাণঘাতী মাদক আমদানির কারণে যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। এটি এখনো ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী আমেরিকানদের মৃত্যুর প্রধান কারণ।
এসি/আপ্র/১৮/০৯/২০২৫