ঢাকা ০৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ভারতে মাতৃদুগ্ধে মিললো ইউরেনিয়াম

  • আপডেট সময় : ০৭:১২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

প্রতীকী ছবি

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের বিহার রাজ্যের একাধিক জেলায় মায়ের বুকের দুধে ইউরেনিয়ামের (ইউ-২৩৮) উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এমনই চমকে দেয়ার মতো তথ্য সাম্প্রতিক এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষক ও চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা, মায়ের দুধের মাধ্যমে নবজাতকরা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ‘নন-কারসিনোজেনিক’ স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের পরিচালিত এই গবেষণায় ৪০ জন দুগ্ধদায়ী মায়ের বুকের দুধ পরীক্ষা করা হয় এবং প্রতিটি নমুনাতেই ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে।গবেষণার সহ-লেখক এবং এআইআইএমএস নয়াদিল্লির চিকিৎসক ড. অশোক শর্মা এএনআই’কে জানান, পরীক্ষায় দেখা গেছে ৭০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে এইচকিউ>১, অর্থাৎ স্তন্যদুগ্ধের মাধ্যমে ইউরেনিয়াম এক্সপোজার থেকে সম্ভাব্য নন-কারসিনোজেনিক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। যদিও মোট ইউরেনিয়াম মাত্রা অনুমোদিত সীমার নিচে এবং বাস্তবিক প্রভাব কম হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’ খবর এনডিটিভির।

তিনি আরও জানান, শিশুদের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে ইউরেনিয়াম এক্সপোজার কিডনির বৃদ্ধি, স্নায়ুবিক উন্নয়ন, জ্ঞানীয় ক্ষমতা ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’

গবেষণায় সর্বোচ্চ গড় দূষণ পাওয়া যায় খাগাড়িয়া জেলায় এবং সর্বোচ্চ একক মাত্রা রেকর্ড হয়েছে কাটিহারে। তবে বিশেষজ্ঞরা একমত-শিশুর জন্য মায়ের দুধের উপকার অমেয়, তাই কোনো চিকিৎসাগত কারণ না থাকলে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার প্রয়োজন নেই।

গবেষণায় দেখা গেছে, ‘মাতৃদেহে প্রবেশ করা অধিকাংশ ইউরেনিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, বুকের দুধে জমা হয় কম।’ ড. অশোক শর্মা জানান, ‘ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও ভারী ধাতু ও দূষকের উপস্থিতি নির্ণয়ে একই ধরনের গবেষণা চলছে। মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বোঝার জন্য এগুলো অত্যন্ত জরুরি।’

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে-ভারতে মোট ১৮ রাজ্যের ১৫১টি জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়াম দূষণের প্রমাণ মিলেছে। শুধু বিহারেই প্রায় ১.৭ শতাংশ পানিতে ইউরেনিয়াম শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পানিতে ইউরেনিয়ামের গ্রহণযোগ্য সীমা নির্ধারণ করেছে ৩০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার। জার্মানির মতো কিছু দেশ আরও কঠোর সীমা-১০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার-বিধান করে।

গবেষকরা সতর্ক করে বলেন, শিশুদের শরীরে ইউরেনিয়াম নির্গমনের ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় তারা তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

গবেষণা ভবিষ্যতে কী নিয়ে কাজ করবে-জানাতে গিয়ে ড. অশোক বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে দুধে আর্সেনিক, সীসা ও পারদের উপস্থিতি শনাক্ত করেছি। সামনে কীটনাশকসহ অন্যান্য পরিবেশদূষকের উপস্থিতিও বিস্তৃতভাবে পরীক্ষা করা হবে। নবজাতকের ঝুঁকি বোঝার জন্য নিয়মিত বায়োমনিটরিং অত্যন্ত জরুরি।’

ওআ/আপ্র/২৩/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ভারতে মাতৃদুগ্ধে মিললো ইউরেনিয়াম

আপডেট সময় : ০৭:১২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের বিহার রাজ্যের একাধিক জেলায় মায়ের বুকের দুধে ইউরেনিয়ামের (ইউ-২৩৮) উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এমনই চমকে দেয়ার মতো তথ্য সাম্প্রতিক এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষক ও চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা, মায়ের দুধের মাধ্যমে নবজাতকরা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ‘নন-কারসিনোজেনিক’ স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের পরিচালিত এই গবেষণায় ৪০ জন দুগ্ধদায়ী মায়ের বুকের দুধ পরীক্ষা করা হয় এবং প্রতিটি নমুনাতেই ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে।গবেষণার সহ-লেখক এবং এআইআইএমএস নয়াদিল্লির চিকিৎসক ড. অশোক শর্মা এএনআই’কে জানান, পরীক্ষায় দেখা গেছে ৭০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে এইচকিউ>১, অর্থাৎ স্তন্যদুগ্ধের মাধ্যমে ইউরেনিয়াম এক্সপোজার থেকে সম্ভাব্য নন-কারসিনোজেনিক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। যদিও মোট ইউরেনিয়াম মাত্রা অনুমোদিত সীমার নিচে এবং বাস্তবিক প্রভাব কম হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’ খবর এনডিটিভির।

তিনি আরও জানান, শিশুদের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে ইউরেনিয়াম এক্সপোজার কিডনির বৃদ্ধি, স্নায়ুবিক উন্নয়ন, জ্ঞানীয় ক্ষমতা ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’

গবেষণায় সর্বোচ্চ গড় দূষণ পাওয়া যায় খাগাড়িয়া জেলায় এবং সর্বোচ্চ একক মাত্রা রেকর্ড হয়েছে কাটিহারে। তবে বিশেষজ্ঞরা একমত-শিশুর জন্য মায়ের দুধের উপকার অমেয়, তাই কোনো চিকিৎসাগত কারণ না থাকলে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার প্রয়োজন নেই।

গবেষণায় দেখা গেছে, ‘মাতৃদেহে প্রবেশ করা অধিকাংশ ইউরেনিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, বুকের দুধে জমা হয় কম।’ ড. অশোক শর্মা জানান, ‘ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও ভারী ধাতু ও দূষকের উপস্থিতি নির্ণয়ে একই ধরনের গবেষণা চলছে। মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বোঝার জন্য এগুলো অত্যন্ত জরুরি।’

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে-ভারতে মোট ১৮ রাজ্যের ১৫১টি জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়াম দূষণের প্রমাণ মিলেছে। শুধু বিহারেই প্রায় ১.৭ শতাংশ পানিতে ইউরেনিয়াম শনাক্ত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পানিতে ইউরেনিয়ামের গ্রহণযোগ্য সীমা নির্ধারণ করেছে ৩০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার। জার্মানির মতো কিছু দেশ আরও কঠোর সীমা-১০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার-বিধান করে।

গবেষকরা সতর্ক করে বলেন, শিশুদের শরীরে ইউরেনিয়াম নির্গমনের ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় তারা তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

গবেষণা ভবিষ্যতে কী নিয়ে কাজ করবে-জানাতে গিয়ে ড. অশোক বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে দুধে আর্সেনিক, সীসা ও পারদের উপস্থিতি শনাক্ত করেছি। সামনে কীটনাশকসহ অন্যান্য পরিবেশদূষকের উপস্থিতিও বিস্তৃতভাবে পরীক্ষা করা হবে। নবজাতকের ঝুঁকি বোঝার জন্য নিয়মিত বায়োমনিটরিং অত্যন্ত জরুরি।’

ওআ/আপ্র/২৩/১১/২০২৫