ঢাকা ০৮:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

ভারতে বাংলাভাষীদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে মুখ খুললেন অমর্ত্য সেন

  • আপডেট সময় : ০৩:৪১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বারবার অভিযোগ করে আসছেন যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের ওপর নিপীড়ন করা হচ্ছে। তার এমন অভিযোগের পর এবার এ বিষয়ে সরব হলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

শুক্রবার (২২ আগষ্ট) সল্টলেকে তার নামাঙ্কিত রিসার্চ সেন্টারের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বাংলা ও বাঙালিদের হেনস্তার প্রসঙ্গ নিয়ে সরব হন অমর্ত্য সেন।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ আসুক, সবার সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে। ভারতের এই দিকটি ভুললে চলবে না। তিনি পাঞ্জাবি, তামিল যা-ই হোন তাকে সম্মান করতেই হবে।

তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অন্য কোনো রাজ্যে বাধা দিলে, অসম্মান করলে, বড় করে প্রতিবাদ করতে হবে। নানা সময়ে বহু প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু সেই প্রতিক্রিয়া যদি অন্য মানুষের সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে, তাহলে তার সমর্থন থাকবে না।

প্রতিবাদের ধরন কি ধরনের হবে সে বিষয়েও পরামর্শ দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, আমি কখনোই এমন দাবি করি না যে বাঙালিই সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু বাংলা কি, বাংলা ভাষার উৎপত্তি কোথায়, বাংলা সভ্যতার মূল্যবান দিকগুলোকে আরো বেশি করে মানুষের কাছে তুলে ধরা দরকার।

অমর্ত্য সেন বলেন, গরিবের অধিকারের হাত দিয়ে কোন সুব্যবস্থা করা যায় না। সত্যতা বিচার করা দরকার। মাথায় রাখবেন, আমাদের দেশে বহু মানুষের কাছে যথাযথ ডকুমেন্ট নেই। একটা কাজ ভালো করতে গিয়ে অজুহাত দেখিয়ে তার ক্ষতি করা যায় না। একটা ভুল সংশোধন করতে গিয়ে সাতটা ভুলকে কখনো সমর্থন করা যায় না।

এরপর অমর্ত্য সেন বাংলা এবং বাঙালির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আজকাল শুনেছি বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে নাকি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আচ্ছা ফরাসিতে কথা বললে কি ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে? আমি অবশ্য ফরাসি জানি না। তবে বাংলাদেশে যদি পাঠায়, আমার খুব আপত্তি থাকবে না। কারণ আমার আদি বাড়ি ঢাকায়।

সল্টলেকে নিজের নামাঙ্কিত রিসার্চ সেন্টারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অমর্ত্য সেনের ভাই ক্ষিতিমোহন সেনের লেখা ভারতে হিন্দু-মুসলমানের যুক্ত সাধনা বইটির পুনঃপ্রকাশ করা হয়। বইটি প্রকাশ করার পর অমর্ত্য সেন বলেন, ধর্ম-জাতি-বর্ণের মানুষের এক যোগে নানা কাজে যুক্ত থাকা উচিত। বাংলার বাইরে বাঙালিদের ওপর অত্যাচার, বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ যেখানে খুশি যেতে পারেন, আসতে পারেন। তাদের সবার সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে।

সল্টলেকে অমর্ত্য সেনের নামাঙ্কিত রিসার্চ সেন্টারের অনুষ্ঠানে বেশ কিছু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে প্রশ্ন করেন এবং এসব প্রশ্নের অকপট জবাব দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতে বাংলাভাষীদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে মুখ খুললেন অমর্ত্য সেন

আপডেট সময় : ০৩:৪১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বারবার অভিযোগ করে আসছেন যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের ওপর নিপীড়ন করা হচ্ছে। তার এমন অভিযোগের পর এবার এ বিষয়ে সরব হলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

শুক্রবার (২২ আগষ্ট) সল্টলেকে তার নামাঙ্কিত রিসার্চ সেন্টারের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বাংলা ও বাঙালিদের হেনস্তার প্রসঙ্গ নিয়ে সরব হন অমর্ত্য সেন।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ আসুক, সবার সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে। ভারতের এই দিকটি ভুললে চলবে না। তিনি পাঞ্জাবি, তামিল যা-ই হোন তাকে সম্মান করতেই হবে।

তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অন্য কোনো রাজ্যে বাধা দিলে, অসম্মান করলে, বড় করে প্রতিবাদ করতে হবে। নানা সময়ে বহু প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু সেই প্রতিক্রিয়া যদি অন্য মানুষের সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে, তাহলে তার সমর্থন থাকবে না।

প্রতিবাদের ধরন কি ধরনের হবে সে বিষয়েও পরামর্শ দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, আমি কখনোই এমন দাবি করি না যে বাঙালিই সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু বাংলা কি, বাংলা ভাষার উৎপত্তি কোথায়, বাংলা সভ্যতার মূল্যবান দিকগুলোকে আরো বেশি করে মানুষের কাছে তুলে ধরা দরকার।

অমর্ত্য সেন বলেন, গরিবের অধিকারের হাত দিয়ে কোন সুব্যবস্থা করা যায় না। সত্যতা বিচার করা দরকার। মাথায় রাখবেন, আমাদের দেশে বহু মানুষের কাছে যথাযথ ডকুমেন্ট নেই। একটা কাজ ভালো করতে গিয়ে অজুহাত দেখিয়ে তার ক্ষতি করা যায় না। একটা ভুল সংশোধন করতে গিয়ে সাতটা ভুলকে কখনো সমর্থন করা যায় না।

এরপর অমর্ত্য সেন বাংলা এবং বাঙালির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আজকাল শুনেছি বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে নাকি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আচ্ছা ফরাসিতে কথা বললে কি ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে? আমি অবশ্য ফরাসি জানি না। তবে বাংলাদেশে যদি পাঠায়, আমার খুব আপত্তি থাকবে না। কারণ আমার আদি বাড়ি ঢাকায়।

সল্টলেকে নিজের নামাঙ্কিত রিসার্চ সেন্টারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অমর্ত্য সেনের ভাই ক্ষিতিমোহন সেনের লেখা ভারতে হিন্দু-মুসলমানের যুক্ত সাধনা বইটির পুনঃপ্রকাশ করা হয়। বইটি প্রকাশ করার পর অমর্ত্য সেন বলেন, ধর্ম-জাতি-বর্ণের মানুষের এক যোগে নানা কাজে যুক্ত থাকা উচিত। বাংলার বাইরে বাঙালিদের ওপর অত্যাচার, বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ যেখানে খুশি যেতে পারেন, আসতে পারেন। তাদের সবার সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে।

সল্টলেকে অমর্ত্য সেনের নামাঙ্কিত রিসার্চ সেন্টারের অনুষ্ঠানে বেশ কিছু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে প্রশ্ন করেন এবং এসব প্রশ্নের অকপট জবাব দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

এসি/