ঢাকা ১২:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভারতে এবার ‘গ্রিন ফাঙ্গাসের’ সংক্রমণ

  • আপডেট সময় : ১২:০৭:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
  • ৫৪ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্ল্যাক, হোয়াইট আর ইয়েলো—ভারতের কোভিড রোগীদের মধ্যে এই তিন ধরনের ফাঙ্গাসের সংক্রমণ আগেই শনাক্ত হয়েছে। এসবে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অনেকেই। ছড়িয়েছে আতঙ্ক। এমনকি দেশটিতে করোনার পাশাপাশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এবার ভারতে করোনায় আক্রান্ত একজনের শরীরে ‘গ্রিন ফাঙ্গাস’ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনাকালে এই ফাঙ্গাস নতুন আতঙ্কের জন্ম দিতে পারে।
গত বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশে ৩৪ বছর বয়সী একজন করোনায় আক্রান্ত রোগীর শরীরে গ্রিন ফাঙ্গাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ভারতে এটাই এই ফাঙ্গাসের শনাক্তের প্রথম ঘটনা।
ইন্দোরের শ্রী অরবিন্দ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (এসএআইএমএস) বক্ষব্যাধি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক রবি দোশি বলেন, এটা ছত্রাকজনিত সংক্রমণের নতুন একটি ঘটনা। এই ছত্রাকের বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। গ্রিন ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হলে রোগীর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রবি দোশি জানান, ‘দুই মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই রোগী। তবে তাঁর নাক থেকে রক্ত ঝরা, জ্বরের মতো উপসর্গ রয়ে গিয়েছিল। আমরা ভেবেছিলাম, তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে পরীক্ষার পরে দেখা যায়, ওই রোগী ব্ল্যাক নয়, বরং গ্রিন ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এটা তাঁর ফুসফুস, নসিকা গ্রন্থি ও রক্তে ছড়িয়েছে।’ এর আগে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে রোগীদের ব্ল্যাক, হোয়াইট ও ইয়েলো ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছিল। এর মধ্যে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী হলো মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। দেশটির চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটি রোগীদের মুখ, নাক, চোখে, ফুসফুস ও মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যায়। এতে আক্রান্ত হলে মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে এই ফাঙ্গাস।
দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (এআইআইএমএস) প্রধান ডা. রনদীপ গুলেরিয়া গত মাসে জানিয়েছেন, কোন এলাকায় ছড়িয়েছে ও রঙের বিবেচনায় অনেক সময় একই ফাঙ্গাসের আলাদা আলাদা নাম দেওয়া হয়। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অবকাশ রয়েছে। চিকিৎসা এগিয়ে নিতে এই বিভ্রান্তি দূর করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, মিউকরমাইকোসিস একটি বিরল সংক্রমণ। মিউকর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এ সংক্রমণ হয়। সাধারণত মাটি, গাছপালা, পচনশীল ফল ও শাকসবজিতে এ ছত্রাক দেখা যায়। এআইআইএমএস জানিয়েছে, মিউকরমাইকোসিস মুখে আক্রমণ করতে পারে। নাক, চোখ ও মস্তিষ্কে এর সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সংক্রমণে সাইনাসের ব্যথা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথার এক পাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, দাঁতে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রমণে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন।
এআইআইএমএস আরও জানিয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষত ডায়াবেটিস রয়েছে ও নিয়মিত স্টরয়েড নেন, এমন কোভিড পজিটিভ রোগীদের এ ছত্রাকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কেননা, স্টেরয়েডের অপব্যবহার কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
এদিকে ভারতের হরিয়ানার পারাস হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুনেশ কুমার বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের তুলনায় হোয়াইট ফাঙ্গাস বেশি বিপজ্জনক। শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম হলে এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হয়। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থাকলে এতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
অরুনেশ কুমার আরও বলেন, হোয়াইট ফাঙ্গাসে সংক্রমিত রোগীর কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মতোই উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কোভিড পরীক্ষায় এমন রোগীর ‘নেগেটিভ’ আসে। এক্স-রে কিংবা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে এই সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে। হোয়াইট ফাঙ্গাস শুধু ফুসফুসকে ভোগায় না। নখ, চামড়া, পাকস্থলী, কিডনি, মস্তিষ্ক, গোপনাঙ্গ, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এই ফাঙ্গাসের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মিয়ানমারে লড়াইয়ের পর গ্রামে অগ্নিসংযোগ, নিহত ২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় একটি গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতাসীন জান্তা বিরোধীদের সংঘর্ষের পর একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে, এতে দুই বৃদ্ধ পুড়ে মারা গেছেন।
গত বুধবার গ্রামটির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এ ঘটনার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দায় দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, মাগওয়ে অঞ্চলের প্রায় ৮০০ বাসিন্দার গ্রাম কিন মা-তে মঙ্গলবার ‘সন্ত্রাসীরা’ আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল আর যে গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে অন্যকিছু বলা হচ্ছে তারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে সামরিক বাহিনীর সুনামহানির চেষ্টা করছে’। রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে আগুন লাগার কারণ যাচাই করতে পারেনি এবং এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও জান্তার মুখপাত্র জবাব দেননি বলে জানিয়েছে।
পুড়ে যাওয়া গ্রামটির বেশ কিছু ছবি রয়টার্স দেখেছে এবং গ্রামটির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা টেলিফোনে বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন, বুধবার কিন মাতে শুধু ৩০টির মতো ঘর অবশিষ্ট ছিল, প্রায় ২০০ ঘর পুড়ে ছাই ও ইটের স্তূপে পরিণত হয়েছে।
নাসার স্যাটেলাইট ফায়ার-ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে রেকর্ড করার মতো বড় ছিল আগুনটি, যা মঙ্গলবার ১৫২২ জিএমটিতে রেকর্ড করা হয়; জানিয়েছে রয়টার্স।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে গ্রামবাসীরা বলেন, জান্তা বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে আর তাতে অন্তত দুই জন পুড়ে মারা যায়।
গ্রামটির বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের সহায়তায় নিয়োজিত ৩২ বছর বয়সী একজন স্বেচ্ছাসেবী জানান, যে দুই জন মারা গেছেন তারা বৃদ্ধ, আগুন লাগার পর বাড়ি ছেড়ে পালাতে পারেননি তারা। কিছু লোক বুধবার গ্রামে ফিরে তাদের মৃতদেহ দেখতে পায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
রয়টার্সের সঙ্গে যারা কথা বলেছেন সেই গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামটির অধিকাংশ বাসিন্দাই নিকটবর্তী বনগুলোতে লুকিয়ে আছেন। এমআরটিভি বলেছে, ৪০ জন ‘সন্ত্রাসী’ কিন মা-র একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে, এখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গ্রামটির ২২৫টি বাড়ির মধ্যে শতাধিক বাড়ি পুড়ে যায়। ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা ও সামরিক শাসন বিরোধী প্রতিবাদ চলছে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ৮৬০ জন বেসামরিককে হত্যা করেছে বলে দেশটির একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত বেসামরিকের সংখ্যা আরও কম বলে দাবি করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতে এবার ‘গ্রিন ফাঙ্গাসের’ সংক্রমণ

আপডেট সময় : ১২:০৭:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্ল্যাক, হোয়াইট আর ইয়েলো—ভারতের কোভিড রোগীদের মধ্যে এই তিন ধরনের ফাঙ্গাসের সংক্রমণ আগেই শনাক্ত হয়েছে। এসবে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অনেকেই। ছড়িয়েছে আতঙ্ক। এমনকি দেশটিতে করোনার পাশাপাশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এবার ভারতে করোনায় আক্রান্ত একজনের শরীরে ‘গ্রিন ফাঙ্গাস’ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনাকালে এই ফাঙ্গাস নতুন আতঙ্কের জন্ম দিতে পারে।
গত বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশে ৩৪ বছর বয়সী একজন করোনায় আক্রান্ত রোগীর শরীরে গ্রিন ফাঙ্গাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ভারতে এটাই এই ফাঙ্গাসের শনাক্তের প্রথম ঘটনা।
ইন্দোরের শ্রী অরবিন্দ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (এসএআইএমএস) বক্ষব্যাধি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক রবি দোশি বলেন, এটা ছত্রাকজনিত সংক্রমণের নতুন একটি ঘটনা। এই ছত্রাকের বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। গ্রিন ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হলে রোগীর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রবি দোশি জানান, ‘দুই মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই রোগী। তবে তাঁর নাক থেকে রক্ত ঝরা, জ্বরের মতো উপসর্গ রয়ে গিয়েছিল। আমরা ভেবেছিলাম, তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে পরীক্ষার পরে দেখা যায়, ওই রোগী ব্ল্যাক নয়, বরং গ্রিন ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এটা তাঁর ফুসফুস, নসিকা গ্রন্থি ও রক্তে ছড়িয়েছে।’ এর আগে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে রোগীদের ব্ল্যাক, হোয়াইট ও ইয়েলো ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছিল। এর মধ্যে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী হলো মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। দেশটির চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটি রোগীদের মুখ, নাক, চোখে, ফুসফুস ও মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যায়। এতে আক্রান্ত হলে মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে এই ফাঙ্গাস।
দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (এআইআইএমএস) প্রধান ডা. রনদীপ গুলেরিয়া গত মাসে জানিয়েছেন, কোন এলাকায় ছড়িয়েছে ও রঙের বিবেচনায় অনেক সময় একই ফাঙ্গাসের আলাদা আলাদা নাম দেওয়া হয়। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অবকাশ রয়েছে। চিকিৎসা এগিয়ে নিতে এই বিভ্রান্তি দূর করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, মিউকরমাইকোসিস একটি বিরল সংক্রমণ। মিউকর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এ সংক্রমণ হয়। সাধারণত মাটি, গাছপালা, পচনশীল ফল ও শাকসবজিতে এ ছত্রাক দেখা যায়। এআইআইএমএস জানিয়েছে, মিউকরমাইকোসিস মুখে আক্রমণ করতে পারে। নাক, চোখ ও মস্তিষ্কে এর সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সংক্রমণে সাইনাসের ব্যথা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথার এক পাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, দাঁতে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রমণে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন।
এআইআইএমএস আরও জানিয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষত ডায়াবেটিস রয়েছে ও নিয়মিত স্টরয়েড নেন, এমন কোভিড পজিটিভ রোগীদের এ ছত্রাকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কেননা, স্টেরয়েডের অপব্যবহার কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
এদিকে ভারতের হরিয়ানার পারাস হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুনেশ কুমার বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের তুলনায় হোয়াইট ফাঙ্গাস বেশি বিপজ্জনক। শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম হলে এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হয়। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থাকলে এতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
অরুনেশ কুমার আরও বলেন, হোয়াইট ফাঙ্গাসে সংক্রমিত রোগীর কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মতোই উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কোভিড পরীক্ষায় এমন রোগীর ‘নেগেটিভ’ আসে। এক্স-রে কিংবা সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে এই সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে। হোয়াইট ফাঙ্গাস শুধু ফুসফুসকে ভোগায় না। নখ, চামড়া, পাকস্থলী, কিডনি, মস্তিষ্ক, গোপনাঙ্গ, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এই ফাঙ্গাসের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মিয়ানমারে লড়াইয়ের পর গ্রামে অগ্নিসংযোগ, নিহত ২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় একটি গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতাসীন জান্তা বিরোধীদের সংঘর্ষের পর একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে, এতে দুই বৃদ্ধ পুড়ে মারা গেছেন।
গত বুধবার গ্রামটির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এ ঘটনার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দায় দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, মাগওয়ে অঞ্চলের প্রায় ৮০০ বাসিন্দার গ্রাম কিন মা-তে মঙ্গলবার ‘সন্ত্রাসীরা’ আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল আর যে গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে অন্যকিছু বলা হচ্ছে তারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে সামরিক বাহিনীর সুনামহানির চেষ্টা করছে’। রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে আগুন লাগার কারণ যাচাই করতে পারেনি এবং এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও জান্তার মুখপাত্র জবাব দেননি বলে জানিয়েছে।
পুড়ে যাওয়া গ্রামটির বেশ কিছু ছবি রয়টার্স দেখেছে এবং গ্রামটির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা টেলিফোনে বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন, বুধবার কিন মাতে শুধু ৩০টির মতো ঘর অবশিষ্ট ছিল, প্রায় ২০০ ঘর পুড়ে ছাই ও ইটের স্তূপে পরিণত হয়েছে।
নাসার স্যাটেলাইট ফায়ার-ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে রেকর্ড করার মতো বড় ছিল আগুনটি, যা মঙ্গলবার ১৫২২ জিএমটিতে রেকর্ড করা হয়; জানিয়েছে রয়টার্স।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে গ্রামবাসীরা বলেন, জান্তা বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে আর তাতে অন্তত দুই জন পুড়ে মারা যায়।
গ্রামটির বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের সহায়তায় নিয়োজিত ৩২ বছর বয়সী একজন স্বেচ্ছাসেবী জানান, যে দুই জন মারা গেছেন তারা বৃদ্ধ, আগুন লাগার পর বাড়ি ছেড়ে পালাতে পারেননি তারা। কিছু লোক বুধবার গ্রামে ফিরে তাদের মৃতদেহ দেখতে পায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
রয়টার্সের সঙ্গে যারা কথা বলেছেন সেই গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামটির অধিকাংশ বাসিন্দাই নিকটবর্তী বনগুলোতে লুকিয়ে আছেন। এমআরটিভি বলেছে, ৪০ জন ‘সন্ত্রাসী’ কিন মা-র একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে, এখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গ্রামটির ২২৫টি বাড়ির মধ্যে শতাধিক বাড়ি পুড়ে যায়। ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা ও সামরিক শাসন বিরোধী প্রতিবাদ চলছে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ৮৬০ জন বেসামরিককে হত্যা করেছে বলে দেশটির একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত বেসামরিকের সংখ্যা আরও কম বলে দাবি করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।