প্রত্যাশা ডেস্ক: আকস্মিকভাবে ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইন ‘ইন্ডি গো’ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) কয়েকশ ফ্লাইট বাতিল করায়, দেশজুড়ে আকাশ যোগাযোগে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। তার আগে তিন দিন ধরে সংস্থাটির নেটওয়ার্কে কারিগরি ত্রুটি চলছিল।
ব্যস্ত ভ্রমণ মৌসুমে হুট করে কয়েকশ ফ্লাইট বাতিলে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো যাত্রী। রাজধানী দিল্লি থেকে ইন্ডি গোর সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
ইন্ডি গো দেশটির আকাশপথে পরিবহন খাতের ৬০ শতাংশ শেয়ারধারী এবং প্রতিদিন দুই সহস্রাধিক ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। তবে নতুন ক্রু রোস্টারিং নীতি মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় পাইলট সংকটে পড়েছে তারা। নতুন নিয়মে পাইলটদের বেশি বিশ্রাম সময় দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলোর একটি হলো, প্রতি সপ্তাহে রাতে অবতরণের সংখ্যা পূর্বের ছয়বার থেকে কমিয়ে দুইবার করা।
সংস্থাটি বলেছে, ১০ ফেব্রুয়ারির আগে পুরোপুরি স্বাভাবিক কার্যক্রমে তারা ফিরতে পারবে না। প্রতিষ্ঠানটি নতুন নিয়ম থেকে সাময়িক ছাড়ও চেয়েছে, যেখানে পাইলটদের বেশি বিশ্রাম ও সীমিত নাইট-ডিউটির বিধান রয়েছে। এছাড়া ৮ ডিসেম্বর থেকে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে বিঘ্ন কমানোর পরিকল্পনাও জানিয়েছে।
সরকার বলেছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, এবং কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহন মন্ত্রী এয়ারলাইনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে “স্পষ্ট অসন্তোষ” প্রকাশ করেছেন।
এক পৃথক বিবৃতিতে ভারতের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, নতুন ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন নিয়ম বাস্তবায়নে “ভুল হিসাব” ও “পরিকল্পনার ঘাটতি” থেকেই এ বিপর্যয় ঘটেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্ডি গোকে অবিলম্বে ক্রু নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, রোস্টার পুনর্গঠন, নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়ন ও অন্যান্য প্রশমন পরিকল্পনা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইন্ডি গো নতুন বিশ্রাম বিধি থেকে কিছু ছাড় পেয়েছে এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে পাইলটদের ছুটির সমন্বয় নিষেধাজ্ঞাও শিথিল করা হয়েছে। তবে বিবিসি এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
ইন্ডি গো জানিয়েছে, ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে যাত্রা–সংক্রান্ত সব বাতিল বা পুনঃনির্ধারণের অনুরোধ ফি ছাড়া গ্রহণ করা হবে। যাদের ভ্রমণ ব্যাহত হয়েছে, তাদের জন্য হোটেল ও খাদ্যের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। তবে বহু যাত্রী হালনাগাদ তথ্য না পাওয়া এবং খাবার ছাড়াই বিমানবন্দরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন।
ভারতে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার সাইমন ওং বিমানবন্দরে আটকে পড়া হাজারো মানুষের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি বাকরুদ্ধ, এবং এ বিপর্যয়ের কারণে তার এক তরুণ সহকর্মীর বিয়েতে যেতে পারেননি। এই বেগতিক পরিস্থিতিতে, দিল্লি, মুম্বাইসহ দেশের বড় বিমানবন্দরগুলো যাত্রীদের বিমানবন্দরে রওনা হওয়ার আগে ফ্লাইটের অবস্থা যাচাই করার পরামর্শ দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে। সূত্র: বিবিসি
সানা/ওআ/আপ্র/০৫/১২/২০২৫





















