বিনোদন ডেস্ক : কলকাতায় সিনে উৎসবে ঝড় তুলে বাংলাদেশের সিনেমা ‘হাওয়া’ বইবে এবার ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রেক্ষাগৃহে। নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, “১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গে এবং ৩০ ডিসেম্বর ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সিনেমা হলে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। “ ভারতের চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনা সংস্থা রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট সে দেশে সিনেমাটির প্রদর্শনের দায়িত্বে রয়েছে বলেও জানান সুমন। গত অক্টোবরে রবীন্দ্রসদনের নন্দনে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে’ হাওয়া দেখানো হয়। সেখানে দর্শকচাপে সিনেমটির শো বাড়াতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। আসন সংকটে মেঝেতে বসেও ছবিটি দেখেছেন অনেকে।সে সময়ই হলে সিনেমাটি মুক্তির প্রত্যাশা রেখেছিলেন কলকতার দর্শকরা। প্রতিবেশী দেশটির কতগুলো হলে হাওয়া মুক্তি পাচ্ছে জানতে চাইলে সুমন বলেন, “দুই দেশের চলচ্চিত্র বিনিময় চুক্তির আওতায় এক দেশের সিনেমা আরেক দেশে মুক্তি দেওয়া খুবই ডিফিকাল্ট। ‘হাওয়া’ মুক্তির ব্যাপারটি চূড়ান্ত হয়েছে, হল সংখ্যা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পুরো ব্যাপারটি সমন্বয় করছে রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট। তারা সব কিছু চূড়ান্ত হলে অফিশিয়ালি জানাবে।
“রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট তো ভারতের চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনার বড় সংস্থা। তাদের মাধ্যমেই ‘হাওয়া’ মুক্তি পাচ্ছে ভারতে। ফলে অনেকগুলো হলেই মুক্তি পাবে বলে আশা করছি।” ভারতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্য ও চীনের বাজার ধরতেও আলোচনা চলছে বলে জানালেন সুমন। তিনি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের অনেক বাঙালি দর্শক আছেন। তারা কিন্তু আমাদের বাংলা সিনেমা দেখার জন্য উদগ্রীব থাকেন। আমরা এখনো মধ্যপ্রাচ্যে ছবিটি মুক্তি দিতে পারিনি। সেখানে মুক্তি দিতে পারলে আরও বেশি দর্শকের কাছে যেতে পারবে ‘হাওয়া’। চেষ্টা করছি মধ্যপ্রাচ্যে ছবিটি মুক্তি দিতে। পাশাপাশি চীনের প্রেক্ষাগৃহেও ছবিটি মুক্তির চেষ্টা চলছে।” এ সিনেমায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, নাসির উদ্দিন খান, সুমন আনোয়ার, সোহেল ম-ল।মেজবাউর রহমান সুমনের কাহিনী এবং সংলাপে চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখেছেন জাহিন ফারুক আমিন, সুকর্ণ সাহেদ ধীমান এবং স্বয়ং মেজবাউর রহমান সুমন। চিত্রগ্রহণে ছিলেন কামরুল হাসান খসরু, সম্পাদনায় সজল অলক। গত ২৯ জুলাই হলে মুক্তি পায় হাওয়া। মুক্তির আগেই এর ব্যতিক্রমী পোস্টার, ট্রেইলার এবং গান ‘সাদা সাদা কালা কালা’ পায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ‘হাওয়া’ সিনেমার আবহ সংগীত করেছেন রাশিদ শরীফ সোয়েব এবং গানের সংগীতায়োজন করেছেন ইমন চৌধুরী। মাঝ সাগরে নানা ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাতে গন্তব্যহীন হয়ে পড়া একটি মাছ ধরা ট্রলারের আট মাঝি-মাল্লা এবং এক রহস্যময়ী বেদেনীকে ঘিরে চলচ্চিত্রটির গল্প আবর্তিত হয়েছে। নানা অপ্রত্যাশিত ঘটনায় ঘুরতে থাকে গল্প, যা দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখে শেষ অবধি।
মুক্তির পর সিনেমাটি দেখার জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। উত্তর আমেরিকার শতাধিক সিনেমা হলে ‘হাওয়া’ মুক্তির চার দিনের মাথায় আড়াই লাখ ডলার আয় করার খবর আসে। অবশ্য হাওয়া নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। এ সিনেমায় বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে মামলা ঠুকেছে বন বিভাগ। তাদের অভিযোগ ছিল শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি রাখা, মেরে খাওয়া কিংবা শাপলা পাতা মাছ ধরার দৃশ্যগুলো আইন লঙ্ঘনের নজির তৈরি করে। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে পরে মামলার পথ থেকে সরে আসে বন বিভাগ। ৯৫তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম (বিদেশি ভাষা প্রতিযোগিতা) বিভাগে বাংলাদেশ থেকে লড়তে যাচ্ছে ‘হাওয়া’।
ভারতের হলে মুক্তি পাচ্ছে ‘হাওয়া’
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ