নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের সঙ্গে সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক, বিএনপি এমনটিই চায় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আওয়ামী চশমা দিয়ে ভারতের বাংলাদেশকে দেখা ‘ভুল ছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, (আওয়ামী লীগ ছাড়া) বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগই রাখেনি (ভারত)। আজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পাহাড় তীব্র ভারত বিরোধিতায় পর্যবসিত হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। গতকাল সোমবার এ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়।
আওয়ামী লীগ এবং জাসদ বা ওয়ার্কার্স পার্টির মতো তাদের শরিকেরা আগামী সংসদ ভোটে অংশ নিতে পারবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বলেছি আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিকেরা সবাই, এমনকি জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নিক। একটি সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট হোক। এজন্য অনেকে আমাকে ভারতের এজেন্ট, আওয়ামী দালাল বলে গালাগাল দিচ্ছে।
‘কিন্তু শেখ হাসিনার অপকর্ম আমরাও কেন করবো? হাসিনা ১৫ বছর প্রতিপক্ষকে ভোটে দাঁড়াতেই দেননি, তার শাস্তি পেয়েছেন। একই কাজ করলে আমরাও তো প্রতিফল পাবো। তবে মানুষ এত রক্ত দেখেছেন, এত প্রাণহানি—তাদের মধ্যে আওয়ামী বিরোধিতা রয়েছে’- এ প্রসঙ্গে যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রভাব ছাড়া নির্বাচন ও সরকার গঠন হবে। সত্যিই কি বাংলাদেশে ভারতের কোনো প্রভাব আর অবশিষ্ট নেই?
গণমাধ্যমটির এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী। সেই সময়ে এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। ভৌগোলিকভাবেও বাংলাদেশের তিন দিকে ভারত, এক দিকে সাগর। সুতরাং ভারতের প্রভাব বাংলাদেশে থাকবেই। সমস্যা হলো, বাংলাদেশ বলতে শুধু আওয়ামী লীগকে বুঝেছেন ভারতের শাসকেরা।
‘আওয়ামী লীগের ভাষ্য মেনে বিএনপি আর জামায়াতকে একই বন্ধনীতে ফেলেছে। জামায়াত আর বিএনপির রাজনীতি তো এক নয়। আমরা অসাম্প্রদায়িক, মধ্যপন্থি একটি গণতান্ত্রিক দল। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত সংবিধান রক্ষায় আজও আমরা স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করছি। বামেরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে’- বলেন ফখরুল।
পঁচিশ বছর ধরে বিএনপির শরিক জামায়াত। দুটি নাম এক সঙ্গে উচ্চারিত হয়। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভুল। আওয়ামী লীগ এই অপপ্রচারটা ভারতকে বিশ্বাস করিয়েছে। তারা (জামায়াত) শুধুই নির্বাচনী শরিক। তারা ধর্মীয় রাজনীতি করে, আমরা করি না। আসলে আওয়ামী চশমা দিয়ে ভারত বাংলাদেশকে দেখেই ভুলটা করেছে।
‘বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগই রাখেনি। আজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পাহাড় তীব্র ভারত বিরোধিতায় পর্যবসিত হয়েছে। তবে বিএনপির পক্ষে আমি আশ্বাস দিচ্ছি, জামায়াতকে আর সুবিধা নিতে দেবো না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চাই, ভারত সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুক। আমরা কলকাতা যাবো, কলেজ স্ট্রিট থেকে কত বই কিনেছি। আবার সেই সুযোগ পাবো। সিনেমা, থিয়েটার দেখবো। মানুষে মানুষে অবাধ যোগাযোগ হবে। ভিসা প্রক্রিয়া সাবলীল হবে। ভারতীয়দেরও বাংলাদেশে স্বাগত জানানো হবে। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক।
এসি/আপ্র/২৩/০৯/২০২৫