ঢাকা ১০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ভারতের মহাকুম্ভে যে কারণে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে

  • আপডেট সময় : ০৪:২৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে (সাবেক এলাহাবাদ) কুম্ভমেলায় বুধবার পদপিষ্ট হয়ে আহত এক ব্যক্তিকে সরিয়ে নিতে সহায়তা করছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ছবি: এএফপি

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে (সাবেক এলাহাবাদ) মহাকুম্ভে মহাবিপর্যয় ঘটল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোরে। মৌনী অমাবস্যার পুণ্যতিথিতে গঙ্গা, যমুনা ও অন্তঃসলিলা সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে শাহি স্নানে যাওয়ার পথে প্রবল ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়েছেন অনেক মানুষ। অব্যবস্থাপনায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেলা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ঘাটে স্নান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে হতাহতের সংখ্যা জানানো হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সকালে শুধু বলেছেন, বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বেসরকারি মতে, মৃত মানুষের সংখ্যা ১৫। হতাহত ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আহত মানুষের সংখ্যা অন্তত ৩০। কারও কারও মতে আহত হয়েছেন ৭০ জন।

এ দুর্ঘটনার পর মেলা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ঘাটে স্নান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন আখড়ার সাধুদের জন্য স্নানের নির্ধারিত সময় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে মেলায় বারবার প্রচার করা হয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা যেন সহযোগিতা করেন।

মহাকুম্ভ মেলা শুরু হয়েছে ১৩ জানুয়ারি, চলবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শুরুর প্রথম সপ্তাহেই ১৯ জানুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণের বহু তাঁবুতে আগুন লেগেছিল। আড়াই শ তাঁবু পুড়ে গিয়েছিল, যদিও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এবার ঘটল পদপিষ্টের ঘটনা। ঘটনার খবর পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোন করেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে। মহাকুম্ভে প্রধানমন্ত্রীরও যাওয়ার কথা।

গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) শেষ সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ছিল মৌনী অমাবস্যার পুণ্যতিথি। এই তিথিতে এবার মকর রাশিতে সূর্য, চাঁদ ও বুধের বিরল উপস্থিতি ঘটছে। সেই সময়ে সঙ্গমে স্নানের অর্থ পুণ্যার্জন। সেই আশায় মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ‘অমৃত স্নান’ সারতে লাখো মানুষ উদগ্রীব ছিলেন। ঘাটমুখী সেই জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ করা প্রশাসনের পক্ষে সম্ভবপর হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কোথা দিয়ে কোথায় যেতে হবে, স্নানের পরই–বা কোথায় ফিরতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশিকা ছিল না। তাঁরা বলেন, অনেকেই ঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন মাথায় বাক্সপ্যাটরা নিয়ে। একই সময় স্নান সেরে মানুষ ওই পথেই ফিরতে চাইছিলেন। প্রবল ভিড় ও বিপরীতগামী মানুষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে বহু ব্যারিকেড ভেঙে যায়। যাঁরা পড়ে যান, তাঁদের মাড়িয়েই অন্যরা এগোতে থাকেন। আর্তনাদে ভরে যায় চারিদিক। তখন রাত প্রায় তিনটে।

মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ আগেই জানিয়েছিলেন, মহাকুম্ভে দেশ-বিদেশ থেকে ৪০ কোটি পুণ্যার্থী আসবেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্ধারকারীদের পাশাপাশি র‌্যাফ নামানো হয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষ সবাইকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ভারতের মহাকুম্ভে যে কারণে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে

আপডেট সময় : ০৪:২৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে (সাবেক এলাহাবাদ) মহাকুম্ভে মহাবিপর্যয় ঘটল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোরে। মৌনী অমাবস্যার পুণ্যতিথিতে গঙ্গা, যমুনা ও অন্তঃসলিলা সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে শাহি স্নানে যাওয়ার পথে প্রবল ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়েছেন অনেক মানুষ। অব্যবস্থাপনায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেলা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ঘাটে স্নান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে হতাহতের সংখ্যা জানানো হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সকালে শুধু বলেছেন, বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বেসরকারি মতে, মৃত মানুষের সংখ্যা ১৫। হতাহত ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আহত মানুষের সংখ্যা অন্তত ৩০। কারও কারও মতে আহত হয়েছেন ৭০ জন।

এ দুর্ঘটনার পর মেলা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ঘাটে স্নান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন আখড়ার সাধুদের জন্য স্নানের নির্ধারিত সময় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে মেলায় বারবার প্রচার করা হয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা যেন সহযোগিতা করেন।

মহাকুম্ভ মেলা শুরু হয়েছে ১৩ জানুয়ারি, চলবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শুরুর প্রথম সপ্তাহেই ১৯ জানুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণের বহু তাঁবুতে আগুন লেগেছিল। আড়াই শ তাঁবু পুড়ে গিয়েছিল, যদিও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এবার ঘটল পদপিষ্টের ঘটনা। ঘটনার খবর পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোন করেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে। মহাকুম্ভে প্রধানমন্ত্রীরও যাওয়ার কথা।

গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) শেষ সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ছিল মৌনী অমাবস্যার পুণ্যতিথি। এই তিথিতে এবার মকর রাশিতে সূর্য, চাঁদ ও বুধের বিরল উপস্থিতি ঘটছে। সেই সময়ে সঙ্গমে স্নানের অর্থ পুণ্যার্জন। সেই আশায় মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ‘অমৃত স্নান’ সারতে লাখো মানুষ উদগ্রীব ছিলেন। ঘাটমুখী সেই জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ করা প্রশাসনের পক্ষে সম্ভবপর হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কোথা দিয়ে কোথায় যেতে হবে, স্নানের পরই–বা কোথায় ফিরতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশিকা ছিল না। তাঁরা বলেন, অনেকেই ঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন মাথায় বাক্সপ্যাটরা নিয়ে। একই সময় স্নান সেরে মানুষ ওই পথেই ফিরতে চাইছিলেন। প্রবল ভিড় ও বিপরীতগামী মানুষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে বহু ব্যারিকেড ভেঙে যায়। যাঁরা পড়ে যান, তাঁদের মাড়িয়েই অন্যরা এগোতে থাকেন। আর্তনাদে ভরে যায় চারিদিক। তখন রাত প্রায় তিনটে।

মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ আগেই জানিয়েছিলেন, মহাকুম্ভে দেশ-বিদেশ থেকে ৪০ কোটি পুণ্যার্থী আসবেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্ধারকারীদের পাশাপাশি র‌্যাফ নামানো হয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষ সবাইকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।