ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

ভারতের গ্রামে ‘কুমিরের আদি প্রজাতি’র বিরল জীবাশ্ম

  • আপডেট সময় : ০৭:১৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: রাজস্থানের পশ্চিমাঞ্চলে জুরাসিক যুগের এক বিরল কুমিরজাতীয় প্রজাতির জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন ভারতের গবেষকরা।
‘ফাইটোসর’ নামে পরিচিত এ জীবাশ্মটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক দশমিক পাঁচ থেকে দুই মিটার এবং সম্ভবত এটি ২০কোটিরও বেশি বছর পুরানো বলে অনুমান গবেষকদের। রাজস্থানের জয়সালমি জেলার মেঘা গ্রামে এ জীবাশ্মটির সন্ধান পেয়েছে রাজ্যটির পানিসম্পদ বিভাগের সিনিয়র হাইড্রোজিওলজিস্ট ড. নারায়ণদাস ইনখিয়া ও তার গবেষণা দল। ড. ইনখিয়া বলেছেন, ওই স্থানে আরো ‘অনেক লুকানো জীবাশ্ম’ থাকতে পারে, যা বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ সূত্র দিতে পারে।
নতুন জীবাশ্মের খোঁজ মেলার বিষয়টি এ অঞ্চলকে জীবাশ্ম পর্যটনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক স্থান হিসেবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও তৈরি করেছে। ভূবিজ্ঞানী সি পি রাজেন্দ্রন বলেছেন, ফাইটোসর ছিল এক ধরনের উভচর প্রাণী, যা নদীতে ও স্থলভাগে অর্থাৎ উভয় জায়গাতেই বসবাস করত। প্রাণীটি সম্ভবত পরবর্তী সময়ে বিবর্তিত হয়ে আজকের কুমিরে রূপ নিয়েছে।

গত সপ্তাহে এ অঞ্চলে একটি লেক খননের সময় গ্রামের কয়েকজন মানুষ প্রথমে এই জীবাশ্মের চিহ্ন দেখতে পান বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি। ওইসময় মানুষেরা মাটিতে এমন কিছু গঠন দেখতে পান যা তাদের কাছে বড় আকারের এক কংকালের কাঠামোর মতো মনে হচ্ছিল এবং এ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানান তারা। স্থানটি খননের সময় গবেষকরাও জীবাশ্ম ডিমের মতো দেখতে কিছুর সন্ধান পান, যা সম্ভবত ওই সরীসৃপটির হতে পারে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া সিনিয়র প্যালিয়োন্টোলজিস্ট ভি.এস. পরিহার বলেছেন, জীবাশ্মটি দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি মধ্যম আকারের এক ফাইটোসর, যা সম্ভবত কয়েক কোটি বছর আগে এ অঞ্চলের নদীর পাশে বাস করত ও বাঁচার জন্য মাছ খেত।

তিনি আরো বলেছেন, এটি ‘সম্ভবত বিরল এক জীবাশ্মেরই নমুনা’, কারণ এখনও পর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য অংশে ফাইটোসরের কেবল কয়েকটি অংশই পাওয়া গিয়েছে।

জীবাশ্মের খোঁজ মেলার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিস্ময়কর নয়। কারণ, ধারণা করা হয়, একসময় এ অঞ্চলের এক পাশে নদী ও অন্য পাশে ছিল সমুদ্র।
ইনখিয়া বলেছেন, ‘লাথি’ গঠন নামের এক ভূতাত্ত্বিক অঞ্চলের অংশ জয়সালমি, যেখানে জুরাসিক যুগে ডাইনোসররা বেড়ে ওঠেছিল। ২০২৩ সালেও জয়সালমিরে এক জীবাশ্মা ডিমের সন্ধান পেয়েছিলেন ড. ইনখিয়া। তাদের অনুমান ছিল, এটি কোনো ডাইনোসরের। এদিকে, ২০১৮ সালে এ অঞ্চলে পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন তৃণভোজী ডাইনোসর শাকাহারি জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছিলেন ‘জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র বিজ্ঞানীরা।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের গ্রামে ‘কুমিরের আদি প্রজাতি’র বিরল জীবাশ্ম

আপডেট সময় : ০৭:১৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: রাজস্থানের পশ্চিমাঞ্চলে জুরাসিক যুগের এক বিরল কুমিরজাতীয় প্রজাতির জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন ভারতের গবেষকরা।
‘ফাইটোসর’ নামে পরিচিত এ জীবাশ্মটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক দশমিক পাঁচ থেকে দুই মিটার এবং সম্ভবত এটি ২০কোটিরও বেশি বছর পুরানো বলে অনুমান গবেষকদের। রাজস্থানের জয়সালমি জেলার মেঘা গ্রামে এ জীবাশ্মটির সন্ধান পেয়েছে রাজ্যটির পানিসম্পদ বিভাগের সিনিয়র হাইড্রোজিওলজিস্ট ড. নারায়ণদাস ইনখিয়া ও তার গবেষণা দল। ড. ইনখিয়া বলেছেন, ওই স্থানে আরো ‘অনেক লুকানো জীবাশ্ম’ থাকতে পারে, যা বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ সূত্র দিতে পারে।
নতুন জীবাশ্মের খোঁজ মেলার বিষয়টি এ অঞ্চলকে জীবাশ্ম পর্যটনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক স্থান হিসেবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও তৈরি করেছে। ভূবিজ্ঞানী সি পি রাজেন্দ্রন বলেছেন, ফাইটোসর ছিল এক ধরনের উভচর প্রাণী, যা নদীতে ও স্থলভাগে অর্থাৎ উভয় জায়গাতেই বসবাস করত। প্রাণীটি সম্ভবত পরবর্তী সময়ে বিবর্তিত হয়ে আজকের কুমিরে রূপ নিয়েছে।

গত সপ্তাহে এ অঞ্চলে একটি লেক খননের সময় গ্রামের কয়েকজন মানুষ প্রথমে এই জীবাশ্মের চিহ্ন দেখতে পান বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি। ওইসময় মানুষেরা মাটিতে এমন কিছু গঠন দেখতে পান যা তাদের কাছে বড় আকারের এক কংকালের কাঠামোর মতো মনে হচ্ছিল এবং এ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানান তারা। স্থানটি খননের সময় গবেষকরাও জীবাশ্ম ডিমের মতো দেখতে কিছুর সন্ধান পান, যা সম্ভবত ওই সরীসৃপটির হতে পারে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া সিনিয়র প্যালিয়োন্টোলজিস্ট ভি.এস. পরিহার বলেছেন, জীবাশ্মটি দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি মধ্যম আকারের এক ফাইটোসর, যা সম্ভবত কয়েক কোটি বছর আগে এ অঞ্চলের নদীর পাশে বাস করত ও বাঁচার জন্য মাছ খেত।

তিনি আরো বলেছেন, এটি ‘সম্ভবত বিরল এক জীবাশ্মেরই নমুনা’, কারণ এখনও পর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য অংশে ফাইটোসরের কেবল কয়েকটি অংশই পাওয়া গিয়েছে।

জীবাশ্মের খোঁজ মেলার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিস্ময়কর নয়। কারণ, ধারণা করা হয়, একসময় এ অঞ্চলের এক পাশে নদী ও অন্য পাশে ছিল সমুদ্র।
ইনখিয়া বলেছেন, ‘লাথি’ গঠন নামের এক ভূতাত্ত্বিক অঞ্চলের অংশ জয়সালমি, যেখানে জুরাসিক যুগে ডাইনোসররা বেড়ে ওঠেছিল। ২০২৩ সালেও জয়সালমিরে এক জীবাশ্মা ডিমের সন্ধান পেয়েছিলেন ড. ইনখিয়া। তাদের অনুমান ছিল, এটি কোনো ডাইনোসরের। এদিকে, ২০১৮ সালে এ অঞ্চলে পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন তৃণভোজী ডাইনোসর শাকাহারি জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছিলেন ‘জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র বিজ্ঞানীরা।