ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

ভারতকে ‘অযাচিত-বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি’ রোধ করতে বলল ঢাকা

  • আপডেট সময় : ০৮:২১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে মন্তব্য করেছেন, তাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘অযাচিত ও বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্য হিসাবে বর্ণনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ আশা করে, ভারত সরকার এ ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, “গত ৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু সম্পর্কিত বিষয়সমূহ নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। “বাংলাদেশ মনে করে, এ বিষয়সমূহ একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ ধরনের মন্তব্য অযাচিত ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন।”

রফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশ সকল দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।“সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করি, ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।” গণআন্দোলনে মুখে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর থেকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।

এর মধ্যে গত শুক্রবার দিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, তারা একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করবেন, যেখানে অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উপায়ে সব সমস্যার সমাধান হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, “গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত উগ্রপন্থিরা ছাড়া পাওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ হয়েছে।” ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও ধর্মীয় উপসনালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবরও পাওয়া যায়। এ বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে ভারত সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জয়সওয়ালের শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ নিয়েও কথা ওঠে। তিনি বলেন, কোনো পার্থক্য তৈরি না করে সহিংসতা, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনবে বলে তারা প্রত্যাশা করেন।

শেখ হাসিনাকে ফেরানোর চিঠির জবাব আসেনি
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত চেয়ে যে কূটনৈতিক পত্র বাংলাদেশ দিয়েছিল, প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেই চিঠির জবাব না আসার কথা জানিয়েছেন মুখপাত্র রফিকুল আলম। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে করা প্রশ্নে এই উত্তর দেন মুখপাত্র। এক সাক্ষাৎকারে ইউনূস সম্প্রতি বলেন, ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য ‘বিপদজ্জনক’। এ প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেওয়ার পর আমাদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ থাকে না।”

হাসিনাকে প্রত্যর্পণে বাংলাদেশের কূটনৈতিক পত্রের জবাব এবং পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে আরেক প্রশ্নে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “এটার বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জবাব দিয়েছেন। “তারপরও আমরা বলছি, আমরা ভারতের কাছ থেকে কোনো জবাব পাইনি। পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাবলিকলি একটা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।” ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

একইসঙ্গে, শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ‘গুম-খুন’ এবং শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ এনে সেগুলোর বিচারের কথাও বলা হচ্ছে। এর মধ্যে একাধিক মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারত সরকারকে ‘কূটনৈতিকপত্র’ পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ভারত এখনও কোনো জবাব দেয়নি। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপড়েন চলছে। দিল্লিতে বসে তিনি বাংলাদেশকে ‘অস্থিতিশীল করার চেষ্টা’ করছেন বলে অভিযোগ এনেছে ইউনূস সরকার। পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও অপতথ্য’ প্রচারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত সমস্যা এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে কূটনীতিক তলবের পাল্টাপাল্টি ঘটনাও ঘটেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভারতকে ‘অযাচিত-বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি’ রোধ করতে বলল ঢাকা

আপডেট সময় : ০৮:২১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে মন্তব্য করেছেন, তাকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘অযাচিত ও বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্য হিসাবে বর্ণনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ আশা করে, ভারত সরকার এ ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, “গত ৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্যের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু সম্পর্কিত বিষয়সমূহ নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। “বাংলাদেশ মনে করে, এ বিষয়সমূহ একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ ধরনের মন্তব্য অযাচিত ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন।”

রফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশ সকল দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।“সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করি, ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।” গণআন্দোলনে মুখে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর থেকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।

এর মধ্যে গত শুক্রবার দিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, তারা একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করবেন, যেখানে অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উপায়ে সব সমস্যার সমাধান হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, “গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত উগ্রপন্থিরা ছাড়া পাওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ হয়েছে।” ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও ধর্মীয় উপসনালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবরও পাওয়া যায়। এ বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে ভারত সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জয়সওয়ালের শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ নিয়েও কথা ওঠে। তিনি বলেন, কোনো পার্থক্য তৈরি না করে সহিংসতা, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনবে বলে তারা প্রত্যাশা করেন।

শেখ হাসিনাকে ফেরানোর চিঠির জবাব আসেনি
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত চেয়ে যে কূটনৈতিক পত্র বাংলাদেশ দিয়েছিল, প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেই চিঠির জবাব না আসার কথা জানিয়েছেন মুখপাত্র রফিকুল আলম। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে করা প্রশ্নে এই উত্তর দেন মুখপাত্র। এক সাক্ষাৎকারে ইউনূস সম্প্রতি বলেন, ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য ‘বিপদজ্জনক’। এ প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেওয়ার পর আমাদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ থাকে না।”

হাসিনাকে প্রত্যর্পণে বাংলাদেশের কূটনৈতিক পত্রের জবাব এবং পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে আরেক প্রশ্নে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “এটার বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জবাব দিয়েছেন। “তারপরও আমরা বলছি, আমরা ভারতের কাছ থেকে কোনো জবাব পাইনি। পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাবলিকলি একটা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।” ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

একইসঙ্গে, শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ‘গুম-খুন’ এবং শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ এনে সেগুলোর বিচারের কথাও বলা হচ্ছে। এর মধ্যে একাধিক মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারত সরকারকে ‘কূটনৈতিকপত্র’ পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ভারত এখনও কোনো জবাব দেয়নি। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপড়েন চলছে। দিল্লিতে বসে তিনি বাংলাদেশকে ‘অস্থিতিশীল করার চেষ্টা’ করছেন বলে অভিযোগ এনেছে ইউনূস সরকার। পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও অপতথ্য’ প্রচারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত সমস্যা এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে কূটনীতিক তলবের পাল্টাপাল্টি ঘটনাও ঘটেছে।