ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

ভর্তি পরীক্ষা দিতে এবার জাহাঙ্গীরনগরে পঞ্চাশোর্ধ্ব বেলায়েত

  • আপডেট সময় : ১২:৫০:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

সাভার প্রতিনিধি : ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্বাবিদ্যালয়ের পর এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন গাজীপুরের পঞ্চাশোর্ধ্ব বেলায়েত শেখ।
আজ রোববার ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবেন তিনি।
বেলায়েত শেখ শনিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আজকে আমি চলে এসেছি, এক বন্ধুর বাসায় উঠেছি। কালকে (আজ রোববার) প্রথম শিফটে সকাল ৯টায় পরীক্ষা।”
“জাহাঙ্গীরনগরে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে চাই আমি। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাহাঙ্গীরনগরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার যাতায়াতের জন্য সুবিধা, এখানে সুযোগ পেলে আমার জন্য সুবিধা হবে।”
সাংবাদিকতা বিভাগে কেন পড়তে চান জানতে চাইলে বেলায়েত শেখ বলেন, “আমি নিজে সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। আট বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। দৈনিক করতোয়া পত্রিকার শ্রীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। এজন্য সুযোগ পেলে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে চাই। সাংবাদিকতার একাডেমিক জ্ঞান নিতে চাই।”
রোববার প্রথম দিনে ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিউটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিটে আসন সংখ্যা ৪৬৬টি। আবেদনকারীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ৪৩০ জন। সেই হিসাবে আসনপ্রতি লড়ছেন ১১৪ জন।
আগ্রহের কমতি না থাকলেও আর্থিক দূরবস্থা ও বাবার অসুস্থতার কারণে ১৯৮৩ সালে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর লেখাপড়া থেকে ছিটকে গিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন বেলায়েত শেখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে নিজের ‘অপূর্ণতা’ তিনি পূরণ করতে চেয়েছিলেন ভাই-বোনদের মাধ্যমে, পরবর্তীতে সন্তানদের দিয়ে। কিন্তু তা পূরণ না হওয়ায় আক্ষেপ নিয়ে তিনিই আবার পড়ালেখা শুরু করেন।
বেলায়েত শেখ জানান, ২০১৭ সালে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদরাসা থেকে ৪ দশমিক ৪৩ জিপিএ নিয়ে তিনি এসএসসি (ভোকেশনাল) পাস করেন। এরপর ২০২১ সালে রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৫৮ পেয়ে পাস করেন এইচএসসি (ভোকেশনাল)।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাননি বেলায়েত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন বেলায়েত। তিনি বলেন, “রাজশাহীতেও হয়তো চান্স পাবো না। পরীক্ষা তেমন ভালো হয়নি। জাহাঙ্গীরনগরের একটি ইউনিটেই পরীক্ষা দিবো আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো। অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিব না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেলেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন বেলায়েত। বেলায়েতের জন্ম ১৯৬৮ সালে; শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিম খ- এলাকায় স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভর্তি পরীক্ষা দিতে এবার জাহাঙ্গীরনগরে পঞ্চাশোর্ধ্ব বেলায়েত

আপডেট সময় : ১২:৫০:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২

সাভার প্রতিনিধি : ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্বাবিদ্যালয়ের পর এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন গাজীপুরের পঞ্চাশোর্ধ্ব বেলায়েত শেখ।
আজ রোববার ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবেন তিনি।
বেলায়েত শেখ শনিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আজকে আমি চলে এসেছি, এক বন্ধুর বাসায় উঠেছি। কালকে (আজ রোববার) প্রথম শিফটে সকাল ৯টায় পরীক্ষা।”
“জাহাঙ্গীরনগরে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে চাই আমি। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাহাঙ্গীরনগরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার যাতায়াতের জন্য সুবিধা, এখানে সুযোগ পেলে আমার জন্য সুবিধা হবে।”
সাংবাদিকতা বিভাগে কেন পড়তে চান জানতে চাইলে বেলায়েত শেখ বলেন, “আমি নিজে সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। আট বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। দৈনিক করতোয়া পত্রিকার শ্রীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। এজন্য সুযোগ পেলে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে চাই। সাংবাদিকতার একাডেমিক জ্ঞান নিতে চাই।”
রোববার প্রথম দিনে ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিউটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিটে আসন সংখ্যা ৪৬৬টি। আবেদনকারীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ৪৩০ জন। সেই হিসাবে আসনপ্রতি লড়ছেন ১১৪ জন।
আগ্রহের কমতি না থাকলেও আর্থিক দূরবস্থা ও বাবার অসুস্থতার কারণে ১৯৮৩ সালে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর লেখাপড়া থেকে ছিটকে গিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন বেলায়েত শেখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে নিজের ‘অপূর্ণতা’ তিনি পূরণ করতে চেয়েছিলেন ভাই-বোনদের মাধ্যমে, পরবর্তীতে সন্তানদের দিয়ে। কিন্তু তা পূরণ না হওয়ায় আক্ষেপ নিয়ে তিনিই আবার পড়ালেখা শুরু করেন।
বেলায়েত শেখ জানান, ২০১৭ সালে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদরাসা থেকে ৪ দশমিক ৪৩ জিপিএ নিয়ে তিনি এসএসসি (ভোকেশনাল) পাস করেন। এরপর ২০২১ সালে রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৫৮ পেয়ে পাস করেন এইচএসসি (ভোকেশনাল)।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাননি বেলায়েত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন বেলায়েত। তিনি বলেন, “রাজশাহীতেও হয়তো চান্স পাবো না। পরীক্ষা তেমন ভালো হয়নি। জাহাঙ্গীরনগরের একটি ইউনিটেই পরীক্ষা দিবো আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো। অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিব না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেলেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন বেলায়েত। বেলায়েতের জন্ম ১৯৬৮ সালে; শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিম খ- এলাকায় স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার।