ঢাকা ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

ভরা মৌসুমেও ধরা পড়ছে না ইলিশ, যা বলছে জেলেরা

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

ছ্বি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু পদ্মা যেন ইলিশ শূন্য। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ। দিন-রাত পদ্মায় জাল ফেলেও ফিরছেন শূন্য হাতে।

জানা গেছে, গত দশ দিনের ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে। তবে ইলিশ আগের মতো ধরা পড়ছে না। এছাড়া পদ্মায় যে ইলিশ পাওয়া যায় তা আকারে ছোট। মাঝে মাঝে যদিও বড় কিছু মাছ পাওয়া যায়, তাও খুব অল্প। তবে সেসব ইলিশের দাম বেশি। যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

জেলেদের সাথে কথা বলে জানাযায়, মেঘনা নদী ও সমূদ্র উপকূলে অধিক পরিমাণে ইলিশ শিকার হওয়ায় পদ্মায় আর তেমন ইলিশ ঢুকতে পারে না৷ ইলিশ মাছ ধরাটাও অনেক কষ্টের। ইলিশের আশায় দিন-রাত পদ্মায় গিয়ে পড়ে থেকেও মেলেনা ইলিশের দেখা। পরে এক প্রকার খালি হাতেই ফিরতে হয়। আবার ৬/৭ জনের দল মিলে যাও কয়টা ইলিশ পাওয়া যায়, খাটুনি তো দুরে থাক তা বেঁচে তেলের পয়সাও ঠিক মতো ওঠে না৷

সদরপুর উপজেলা মৎস অফিস সূত্রে জানা গেছে, দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া, ঢেউখালী, আকোটের চর ও চর নাসিরপুর ইউনিয়নের জেলেরা মূলত ইলিশ শিকারে জড়িত। এসব ইউনিয়নে অন্তত সাত হাজার মানুষ জেলে। যার মধ্যে কার্ডধারী জেলে রয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয়শ।

পদ্মায় ইলিশ ধরতে আসা জেলে মুকলেছুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন বৃষ্টি আর কষ্ট উপেক্ষা করে পদ্মায় গিয়ে এক প্রকার খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে। আমাদের দলে ৬/৭ জন লোক রয়েছে। গত কয়েকদিন মিলে যাও কয়টা ইলিশ পেয়েছি তা বেঁচে তেলের পয়সাও ঠিক মতো উঠে না। আর খাটুনির কথা বাদই দিলাম৷

জেলে আবুল হোসেন জানান, গত দশ দিন ধরে একটানা পদ্মায় পড়ে আছি। নদীতে জাল ফেলে কাংঙ্খিত ইলিশের দেখা মিলছে না। কালেভদ্রে দু’একটি পেলেও তা আকারে অনেক ছোট। বাজারে তেমন দাম পাওয়া যায় না। আমাদের পেশা ইলিশ ধরা। যদি ইলিশই না ধরতে পারি তাহলে পরিবার নিয়ে বাঁচবো কিভাবে। বাপ-দাদার পেশা চাইলেও পরিবর্তন করতে পারছি না। তবে এমন অবস্থা চলতে থাকলে পেশা পরিবর্তন ছাড়া উপায় দেখছি না।

পিয়াজখালী বাজারের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মো. জয়নাল শেখ বলেন, নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে না। ভাদ্র মাসের পরে ভালো পরিমাণে ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে। বিগত কয়েক বছর ধরে পদ্মায় ইলিশ খুব কমই পওয়া যাচ্ছে। আগে ইলিশ পাওয়া যেত বেশি, দাম ছিলো কম। আর এখন ইলিশ পাওয়া যায় কম, কিন্তু দাম অনেক বেশি। বর্তমানে পদ্মার একটি এক কেজি সাইজের ইলিশ ৩-৪ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশ ১-২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার কালিখোলা বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা আশিক মোল্লা জানান, ফরিদপুর সদর থেকে এসেছিলাম তাজা ইলিশ কিনতে। এসে দেখলাম ইলিশ কিছু আছে। আকারে ছোট। দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। কয়েক কেজি কিনেছি। যদি বাজারে ইলিশের পরিমাণ বেশি থাকতো তাহলে হয়তো আরো কম দামে কিনতে পারতাম।

সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, পানি প্রবাহের সঙ্গে ইলিশের আনাগোনার একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলেদের জালে তুলনামূলক ইলিশ কম ধরা পড়ছে। গত পনের দিন হলো মেঘনাতে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছে। পদ্মায় পানি একটু কমলে ইলিশ আরো বেশি ধরা পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের কোচ গম্ভীরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ সাবেক ওপেনারের

ভরা মৌসুমেও ধরা পড়ছে না ইলিশ, যা বলছে জেলেরা

আপডেট সময় : ০৪:৪৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু পদ্মা যেন ইলিশ শূন্য। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ। দিন-রাত পদ্মায় জাল ফেলেও ফিরছেন শূন্য হাতে।

জানা গেছে, গত দশ দিনের ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে। তবে ইলিশ আগের মতো ধরা পড়ছে না। এছাড়া পদ্মায় যে ইলিশ পাওয়া যায় তা আকারে ছোট। মাঝে মাঝে যদিও বড় কিছু মাছ পাওয়া যায়, তাও খুব অল্প। তবে সেসব ইলিশের দাম বেশি। যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

জেলেদের সাথে কথা বলে জানাযায়, মেঘনা নদী ও সমূদ্র উপকূলে অধিক পরিমাণে ইলিশ শিকার হওয়ায় পদ্মায় আর তেমন ইলিশ ঢুকতে পারে না৷ ইলিশ মাছ ধরাটাও অনেক কষ্টের। ইলিশের আশায় দিন-রাত পদ্মায় গিয়ে পড়ে থেকেও মেলেনা ইলিশের দেখা। পরে এক প্রকার খালি হাতেই ফিরতে হয়। আবার ৬/৭ জনের দল মিলে যাও কয়টা ইলিশ পাওয়া যায়, খাটুনি তো দুরে থাক তা বেঁচে তেলের পয়সাও ঠিক মতো ওঠে না৷

সদরপুর উপজেলা মৎস অফিস সূত্রে জানা গেছে, দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া, ঢেউখালী, আকোটের চর ও চর নাসিরপুর ইউনিয়নের জেলেরা মূলত ইলিশ শিকারে জড়িত। এসব ইউনিয়নে অন্তত সাত হাজার মানুষ জেলে। যার মধ্যে কার্ডধারী জেলে রয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয়শ।

পদ্মায় ইলিশ ধরতে আসা জেলে মুকলেছুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন বৃষ্টি আর কষ্ট উপেক্ষা করে পদ্মায় গিয়ে এক প্রকার খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে। আমাদের দলে ৬/৭ জন লোক রয়েছে। গত কয়েকদিন মিলে যাও কয়টা ইলিশ পেয়েছি তা বেঁচে তেলের পয়সাও ঠিক মতো উঠে না। আর খাটুনির কথা বাদই দিলাম৷

জেলে আবুল হোসেন জানান, গত দশ দিন ধরে একটানা পদ্মায় পড়ে আছি। নদীতে জাল ফেলে কাংঙ্খিত ইলিশের দেখা মিলছে না। কালেভদ্রে দু’একটি পেলেও তা আকারে অনেক ছোট। বাজারে তেমন দাম পাওয়া যায় না। আমাদের পেশা ইলিশ ধরা। যদি ইলিশই না ধরতে পারি তাহলে পরিবার নিয়ে বাঁচবো কিভাবে। বাপ-দাদার পেশা চাইলেও পরিবর্তন করতে পারছি না। তবে এমন অবস্থা চলতে থাকলে পেশা পরিবর্তন ছাড়া উপায় দেখছি না।

পিয়াজখালী বাজারের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মো. জয়নাল শেখ বলেন, নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে না। ভাদ্র মাসের পরে ভালো পরিমাণে ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে। বিগত কয়েক বছর ধরে পদ্মায় ইলিশ খুব কমই পওয়া যাচ্ছে। আগে ইলিশ পাওয়া যেত বেশি, দাম ছিলো কম। আর এখন ইলিশ পাওয়া যায় কম, কিন্তু দাম অনেক বেশি। বর্তমানে পদ্মার একটি এক কেজি সাইজের ইলিশ ৩-৪ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশ ১-২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার কালিখোলা বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা আশিক মোল্লা জানান, ফরিদপুর সদর থেকে এসেছিলাম তাজা ইলিশ কিনতে। এসে দেখলাম ইলিশ কিছু আছে। আকারে ছোট। দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। কয়েক কেজি কিনেছি। যদি বাজারে ইলিশের পরিমাণ বেশি থাকতো তাহলে হয়তো আরো কম দামে কিনতে পারতাম।

সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, পানি প্রবাহের সঙ্গে ইলিশের আনাগোনার একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলেদের জালে তুলনামূলক ইলিশ কম ধরা পড়ছে। গত পনের দিন হলো মেঘনাতে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছে। পদ্মায় পানি একটু কমলে ইলিশ আরো বেশি ধরা পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এসি/