ঢাকা ০৫:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

ভবন মালিকরা ভুয়া প্রকৌশলীর নকশায় হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত

  • আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

আজাদুর রহমান, বগুড়া: ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রকৌশলগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাড়ি তৈরির জন্য মানুষ দ্বারস্থ হন ভালোমানের প্রকৌশলীর কাছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রতারিত হন ভুয়া প্রকৌশলীদের কাছে। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি নিরাপত্তার হুমকিতে আছেন গ্রাহকরা।

বগুড়ার শেরপুরে দেখা মিলেছে এমনই এক প্রকৌশলী মো. আসাদুল ইসলামের। তিনি বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন বলে জানান। এখন শেরপুরের বাস স্ট্যান্ড এলাকার একটি মার্কেটে পরিচালনা করছেন ‘ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি কখনো রাজউকের নিবন্ধিত প্রকৌশলী, কখনো বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের (আইবি) সদস্য, আবার কখনও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের (আডিই) সদস্য বলে পরিচয় দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, তার প্রদত্ত তথ্যগুলো সত্য নয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজউকের নিবন্ধন নম্বর ০৩৪৮ ব্যবহার করে আসাদুল নিজেকে নিবন্ধিত প্রকৌশলী হিসেবে দাবি করেন। অথচ রাজউকের ওয়েবসাইটে এই নম্বরের প্রকৃত মালিক মোহাম্মদ নূর-আল-ফেরদৌস। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সদস্য নম্বর ১৪৭৩৭ ব্যবহার করে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এই নম্বরের প্রকৃত সদস্য হলেন মুহাম্মদ সাকিল মিয়া। ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সদস্য নম্বর ৬৫৮৫৫ ব্যবহার করছেন; যার প্রকৃত মালিক মো. সামিম হোসেন।
উল্লিখিত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আসাদুলের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এমনই একজন উপজেলার গড়িদহ ইউনিয়নের বাসিন্দা শওকত শামীম। তিনি বলেন, শেরপুরে বাড়ির নকশা তৈরি করার জন্য মানসম্মত প্রকৌশলী নেই। আমি আসাদুলের পদবি দেখে আকৃষ্ট হয়ে ২০২২ সালে ৪ তলা ভবনের নকশা তৈরি করিয়ে নিই। এ জন্য তাকে ১৬ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু ভবন তৈরির সময় নকশায় অনেক ত্রুটি লক্ষ করি। আমার বন্ধুদের সহযোগিতায় সেসব সংশোধন করিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি বার বার ব্যাস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ভবনের নকশার সাথে আমাদের বিভিন্ন দপ্তরের পরিকল্পনার সম্পৃক্ততা আছে। যাদের সদস্য নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে বা যারা প্রতারিত হয়েছেন এমন কেউ আসাদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভবন মালিকরা ভুয়া প্রকৌশলীর নকশায় হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আজাদুর রহমান, বগুড়া: ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রকৌশলগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাড়ি তৈরির জন্য মানুষ দ্বারস্থ হন ভালোমানের প্রকৌশলীর কাছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রতারিত হন ভুয়া প্রকৌশলীদের কাছে। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি নিরাপত্তার হুমকিতে আছেন গ্রাহকরা।

বগুড়ার শেরপুরে দেখা মিলেছে এমনই এক প্রকৌশলী মো. আসাদুল ইসলামের। তিনি বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন বলে জানান। এখন শেরপুরের বাস স্ট্যান্ড এলাকার একটি মার্কেটে পরিচালনা করছেন ‘ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি কখনো রাজউকের নিবন্ধিত প্রকৌশলী, কখনো বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের (আইবি) সদস্য, আবার কখনও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের (আডিই) সদস্য বলে পরিচয় দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, তার প্রদত্ত তথ্যগুলো সত্য নয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজউকের নিবন্ধন নম্বর ০৩৪৮ ব্যবহার করে আসাদুল নিজেকে নিবন্ধিত প্রকৌশলী হিসেবে দাবি করেন। অথচ রাজউকের ওয়েবসাইটে এই নম্বরের প্রকৃত মালিক মোহাম্মদ নূর-আল-ফেরদৌস। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সদস্য নম্বর ১৪৭৩৭ ব্যবহার করে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এই নম্বরের প্রকৃত সদস্য হলেন মুহাম্মদ সাকিল মিয়া। ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সদস্য নম্বর ৬৫৮৫৫ ব্যবহার করছেন; যার প্রকৃত মালিক মো. সামিম হোসেন।
উল্লিখিত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আসাদুলের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এমনই একজন উপজেলার গড়িদহ ইউনিয়নের বাসিন্দা শওকত শামীম। তিনি বলেন, শেরপুরে বাড়ির নকশা তৈরি করার জন্য মানসম্মত প্রকৌশলী নেই। আমি আসাদুলের পদবি দেখে আকৃষ্ট হয়ে ২০২২ সালে ৪ তলা ভবনের নকশা তৈরি করিয়ে নিই। এ জন্য তাকে ১৬ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু ভবন তৈরির সময় নকশায় অনেক ত্রুটি লক্ষ করি। আমার বন্ধুদের সহযোগিতায় সেসব সংশোধন করিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি বার বার ব্যাস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ভবনের নকশার সাথে আমাদের বিভিন্ন দপ্তরের পরিকল্পনার সম্পৃক্ততা আছে। যাদের সদস্য নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে বা যারা প্রতারিত হয়েছেন এমন কেউ আসাদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।