অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচকও। সে সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। ডিএসইতে লেনদেন কমে ৭০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এতে দুই মাসের মধ্যে বাজারটিতে সর্বনি¤œ লেনদেন হয়েছে। এর আগে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলে। তবে সপ্তাহের প্রথম চার কার্যদিবস দরপতন হওয়ায় এক সপ্তাহেই ডিএসইর বাজার মূলধন চার হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে যায়। আর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে একশ পয়েন্টের ওপরে উঠে। এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বড় দরপতন দেখতে হলো। এ বড় দরপতনের কারণে প্রায় আড়াইশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (দাম কমার সর্বনি¤œ সীমা) চলে এসেছে। ক্রেতার সংকটে ফ্লোরে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিনিয়োগকারীরা বিক্রি করতে চাইলেও তা পারছেন না। অবশ্য এ ফ্লোর প্রাইসের কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম নতুন করে পতন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে শেয়ারবাজার খুলতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দাম কমার সংখ্যাও। ফলে সূচকের বড় পতন দিয়ে শেষ হয় দিনের লেনদেন। সেই সঙ্গে বড় হয় দরপতনের তালিকা। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির। আর ২২৩টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি সূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৯৭৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৮৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় কমেনি, ডিএসইতে চলতি বছরের ১৪ আগস্টের পর সর্বনি¤œ লেনদেন হলো। এ লেনদেন খরার বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৭০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪২ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-ইন্ট্রাকো রিফুয়েলি স্টেশন, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইস্টার্ন হাউজিং, সোনালী পেপার এবং কেডিএস এক্সসরিজ। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৮০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৫টির এবং ১৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বড় পতনে শেয়ারবাজারে সপ্তাহ শুরু, ৭০০ কোটিতে নেমেছে লেনদেন
ট্যাগস :
বড় পতনে শেয়ারবাজারে সপ্তাহ শুরু
জনপ্রিয় সংবাদ