ঢাকা ০৪:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ব্রিসবেনে অমর একুশে পালিত

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : হান ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্তার বিকাশে এক অনন্য অধ্যায়। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে ওঠা এ আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন আমাদের ভাষাশহীদেরা। তাঁদের সেই আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। বাংলা পেয়েছিল অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। তার পর থেকে এ দিনের মহিমা ধারণ করে আমাদের জাতীয় পরিসরে প্রতিবছর পালিত হতে থাকে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। আরও পরে ২০০০ সাল থেকে এ দিনের তাৎপর্য ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, যখন জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।
সারা বিশ্বেই এখন ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়ে আসছে। আমাদের জাতীয়, সর্বজনীন ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের এসব ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের মতো এবার অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে পালিত হয় অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিসবেন শহরের প্রাণকেন্দ্র প্রসিদ্ধ জনসমাগমস্থল রেডক্লিফ প্লেসে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মারক অনুষ্ঠান।
বরাবরের মতো ব্রিসবেনের এবারের অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন ব্রিজবেন (বিএবি)। সঙ্গে সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল মাল্টিকালচারাল অস্ট্রেলিয়া এবং এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনালে ইনকরপোরেশন নামের দুটি সংস্থা। বিএবি কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্যদের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন মাল্টিকালচারাল অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টিন ক্রেস্টলে এবং এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনালে ইনকরপোরেশনের যীশু দাশগুপ্ত। কয়েক বছর ধরেই বিএবি চেষ্টা করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্যকে বৃহত্তর বহু সাংস্কৃতিক জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। আর এ-সংক্রান্ত সবকিছুতে থাকে অস্ট্রেলিয়া ও কুইন্সল্যান্ড সরকারের নানা পর্যায়ের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনে অতিথি হিসেবে ছিলেন দশজনের বেশি মন্ত্রী ও সাংসদ। আরও ছিলেন সরকারের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে ব্রিসবেনের বাংলা গানের স্কুল, সারগাম মিউজিক্যাল একাডেমির শিশু-কিশোরেরা।
তারপর একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র আবহ সংগীতের সঙ্গে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন বাংলাদেশি সংগঠন। সর্বশেষ সাধারণ জনগণ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি তাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। এসবের আগে ও পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর আলোচনা করেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা। এই পুরো আয়োজন সম্পন্ন হয় ব্রিসবেন সিটি কাউন্সিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। বিএবি সভাপতি মাসুম ইসলাম কুইন্সল্যান্ডে বসবাসরাত সব বাংলাদেশির পক্ষ থেকে ব্রিসবেনের মেয়র অদ্রিয়ান ও ব্রিসবেন সিটি কাউন্সিলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ব্রিসবেনে অমর একুশে পালিত

আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : হান ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্তার বিকাশে এক অনন্য অধ্যায়। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে ওঠা এ আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন আমাদের ভাষাশহীদেরা। তাঁদের সেই আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। বাংলা পেয়েছিল অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। তার পর থেকে এ দিনের মহিমা ধারণ করে আমাদের জাতীয় পরিসরে প্রতিবছর পালিত হতে থাকে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। আরও পরে ২০০০ সাল থেকে এ দিনের তাৎপর্য ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, যখন জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।
সারা বিশ্বেই এখন ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়ে আসছে। আমাদের জাতীয়, সর্বজনীন ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের এসব ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের মতো এবার অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে পালিত হয় অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিসবেন শহরের প্রাণকেন্দ্র প্রসিদ্ধ জনসমাগমস্থল রেডক্লিফ প্লেসে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মারক অনুষ্ঠান।
বরাবরের মতো ব্রিসবেনের এবারের অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন ব্রিজবেন (বিএবি)। সঙ্গে সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল মাল্টিকালচারাল অস্ট্রেলিয়া এবং এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনালে ইনকরপোরেশন নামের দুটি সংস্থা। বিএবি কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্যদের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন মাল্টিকালচারাল অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টিন ক্রেস্টলে এবং এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনালে ইনকরপোরেশনের যীশু দাশগুপ্ত। কয়েক বছর ধরেই বিএবি চেষ্টা করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্যকে বৃহত্তর বহু সাংস্কৃতিক জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। আর এ-সংক্রান্ত সবকিছুতে থাকে অস্ট্রেলিয়া ও কুইন্সল্যান্ড সরকারের নানা পর্যায়ের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপনে অতিথি হিসেবে ছিলেন দশজনের বেশি মন্ত্রী ও সাংসদ। আরও ছিলেন সরকারের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে ব্রিসবেনের বাংলা গানের স্কুল, সারগাম মিউজিক্যাল একাডেমির শিশু-কিশোরেরা।
তারপর একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র আবহ সংগীতের সঙ্গে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন বাংলাদেশি সংগঠন। সর্বশেষ সাধারণ জনগণ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি তাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। এসবের আগে ও পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর আলোচনা করেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা। এই পুরো আয়োজন সম্পন্ন হয় ব্রিসবেন সিটি কাউন্সিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। বিএবি সভাপতি মাসুম ইসলাম কুইন্সল্যান্ডে বসবাসরাত সব বাংলাদেশির পক্ষ থেকে ব্রিসবেনের মেয়র অদ্রিয়ান ও ব্রিসবেন সিটি কাউন্সিলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।