ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫

ব্রিটিশ রাজনীতিতে নেতৃত্বের সংকটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা

  • আপডেট সময় : ০৩:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে পিছিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা। ফলে, দেশটিতে পার্লামেন্টে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের নেতৃত্বে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দুই সুপরিচিত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনপ্রণেতা টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুশনারা আলির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ কেবল তাদের রাজ‌নৈ‌তিক জীবনের ক্ষতি করেনি, বরং পুরো ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সুনামকেও ক্ষুণ্ন করেছে। আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইনপ্রণেতা আপসানা বেগমও তার আবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন।

পপলার এবং লাইমহাউসের এমপি আপসানা বেগম, সরকারের দুই-সন্তান সুবিধা নীতির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পর থেকে লেবার পার্টি থেকে দীর্ঘ সময় ধরে বরখাস্ত রয়েছেন। একই অবস্থান নেওয়ার কারণে বরখাস্ত অন্য এমপিদের দলে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও আফসানা এখনও দলের বাইরেই রয়েছেন। সমালোচকরা বলছেন, এটি লেবার নেতৃত্বের মধ্যে ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতার ইঙ্গিত দেয়।

এই চলমান সংকটের আগে ২০২২ সালে, তৎকালীন চ্যান্সেলর কোয়াসি কোয়ার্টেং সম্পর্কে করা মন্তব্যের জন্য প্রশাসনিকভাবে বরখাস্ত হয়েছিলেন এমপি রুপা হক। এই ঘটনাকে বর্ণবাদী বলে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছিল দেশটির বিভিন্ন মহলে। অবশ্য পরে তার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

এমনিতেই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই কমিউনিটি সদস্যদের। তার ওপর মন্ত্রীদের পদত্যাগ, বরখাস্ত এবং আইনি চ্যালেঞ্জের ধারাবাহিক ঘটনা ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের ওপর এক দীর্ঘ ছায়া ফেলছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর আলোকে ব্রিটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে গভীর নেতৃত্বের সংকট দেখছেন কমিউনিটির সদস্যরা।

কনজারভেটিভ পার্টি থেকে এখন পর্যন্ত কোনও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আইনপ্রণেতা (এমপি) নির্বাচিত হতে পারেননি। একইভাবে, রিফর্ম, গ্রিন বা লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের মতো অন্য দলগুলোতেও এমন কোনো উল্লেখযোগ্য ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ নেই যারা এককভাবে বা জোটগতভাবে ক্ষমতায় এলে নিশ্চিত মন্ত্রী হবেন। এমনকি জেরেমি করবিনের নতুন দলেও যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যেও নিশ্চিত মন্ত্রী হওয়ার মতো নেতা নেই।

ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চার এমপির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ হলো, কমিউনিটি সদস্যদের সঙ্গে ছবি তোলা বাদে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কোনও অবস্থান নিতে বা বাংলাদেশের কোনও দুর্যোগের সময় সমন্বিত ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি।

যুক্তরাজ্যে প্রায় ১৫ লা‌খের বে‌শি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ বাস করেন। তাই এই কমিউনিটি এক‌টি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি। তবে, সমালোচকরা বল‌ছেন যে কয়েকজনের কর্মকাণ্ড পুরো গোষ্ঠীর সুনামকে অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রোববার থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু, ৮০ টাকায় মিলবে চিনি

ব্রিটিশ রাজনীতিতে নেতৃত্বের সংকটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা

আপডেট সময় : ০৩:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে পিছিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা। ফলে, দেশটিতে পার্লামেন্টে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের নেতৃত্বে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দুই সুপরিচিত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনপ্রণেতা টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুশনারা আলির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ কেবল তাদের রাজ‌নৈ‌তিক জীবনের ক্ষতি করেনি, বরং পুরো ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সুনামকেও ক্ষুণ্ন করেছে। আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইনপ্রণেতা আপসানা বেগমও তার আবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন।

পপলার এবং লাইমহাউসের এমপি আপসানা বেগম, সরকারের দুই-সন্তান সুবিধা নীতির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পর থেকে লেবার পার্টি থেকে দীর্ঘ সময় ধরে বরখাস্ত রয়েছেন। একই অবস্থান নেওয়ার কারণে বরখাস্ত অন্য এমপিদের দলে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও আফসানা এখনও দলের বাইরেই রয়েছেন। সমালোচকরা বলছেন, এটি লেবার নেতৃত্বের মধ্যে ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতার ইঙ্গিত দেয়।

এই চলমান সংকটের আগে ২০২২ সালে, তৎকালীন চ্যান্সেলর কোয়াসি কোয়ার্টেং সম্পর্কে করা মন্তব্যের জন্য প্রশাসনিকভাবে বরখাস্ত হয়েছিলেন এমপি রুপা হক। এই ঘটনাকে বর্ণবাদী বলে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছিল দেশটির বিভিন্ন মহলে। অবশ্য পরে তার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

এমনিতেই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই কমিউনিটি সদস্যদের। তার ওপর মন্ত্রীদের পদত্যাগ, বরখাস্ত এবং আইনি চ্যালেঞ্জের ধারাবাহিক ঘটনা ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের ওপর এক দীর্ঘ ছায়া ফেলছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর আলোকে ব্রিটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে গভীর নেতৃত্বের সংকট দেখছেন কমিউনিটির সদস্যরা।

কনজারভেটিভ পার্টি থেকে এখন পর্যন্ত কোনও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আইনপ্রণেতা (এমপি) নির্বাচিত হতে পারেননি। একইভাবে, রিফর্ম, গ্রিন বা লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের মতো অন্য দলগুলোতেও এমন কোনো উল্লেখযোগ্য ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ নেই যারা এককভাবে বা জোটগতভাবে ক্ষমতায় এলে নিশ্চিত মন্ত্রী হবেন। এমনকি জেরেমি করবিনের নতুন দলেও যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যেও নিশ্চিত মন্ত্রী হওয়ার মতো নেতা নেই।

ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চার এমপির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ হলো, কমিউনিটি সদস্যদের সঙ্গে ছবি তোলা বাদে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কোনও অবস্থান নিতে বা বাংলাদেশের কোনও দুর্যোগের সময় সমন্বিত ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি।

যুক্তরাজ্যে প্রায় ১৫ লা‌খের বে‌শি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ বাস করেন। তাই এই কমিউনিটি এক‌টি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি। তবে, সমালোচকরা বল‌ছেন যে কয়েকজনের কর্মকাণ্ড পুরো গোষ্ঠীর সুনামকে অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এসি/