নারী ও শিশু ডেস্ক: জাতিসংঘের জলবায়ু-সংক্রান্ত ৩০তম সম্মেলন (কপ-৩০) এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের বেলেম শহরে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু ঝুঁকিতে বিপর্যস্ত পৃথিবীকে রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ ১৫০টি দেশের ১২ হাজারের বেশি প্রতিনিধি এই সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশ থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিচ্ছে সাতক্ষীরার দুই শিক্ষার্থী নওশীন ইসলাম এবং নুর আহমদ।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তবতা তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়ে আজ সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাদের বেলেমের পথে রওনা হওয়ার কথা।
শিশু প্রতিনিধিদের পরিচিতি: নওশীন ইসলাম আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং প্রতাপনগর ইউনাইটেড বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা ও মা উভয়েই শিক্ষক। নওশীন ২০২১ সাল থেকে উপকূলের শিশুদের অধিকার ও জলবায়ু ন্যায়ের আন্দোলনে যুক্ত। বর্তমানে সে ‘উপকূলীয় শিশু ফোরাম’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও আশাশুনি উপজেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
নুর আহমদ শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা ও মাও শিক্ষক। নুর উপকূলীয় শিশু ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি ও উপজেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে কাজ করছে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণের সুযোগ: এই দুই শিশু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বাসিন্দা, যা জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক অভিঘাতের শিকার। বেসরকারি সংস্থা জাগ্রত যুব সংঘের (জেজেএস) একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা কপ-৩০-এ অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। প্রকল্পের নাম: ‘স্ট্রেংদেনিং চিলড্রেনস ভয়েস অ্যান্ড লিডারশিপ ইন অ্যাড্রেসিং ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিজাস্টার রিস্ক ইন বাংলাদেশ’।
প্রকল্পটির ব্যবস্থাপক নবকুমার সাহা জানান, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের ১০টি উপজেলায় জেজেএস শিশুদের নেতৃত্ব ও কণ্ঠস্বর শক্তিশালী করতে কাজ করছে। উদ্দেশ্য হলো, শিশুরা যেন নিজেদের সমস্যা ও সমাধান নির্ধারণে অংশ নেয় এবং তাদের কণ্ঠস্বর স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শোনা যায়।
বিশ্বনেতাদের প্রতি দাবি: ব্রাজিলে যাওয়ার আগে নওশীন ও নুর তাদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছে। নওশীন ইসলাম জানায়, উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশা তুলে ধরতেই ব্রাজিল যাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়, খাবারের অভাব হয়, বাল্যবিবাহ বাড়ে। আমি চাই উন্নত দেশের নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে আরো আন্তরিক হোক।
নুর আহমদের কণ্ঠেও শোনা যায় একইরকম দৃঢ়তা। সে বলে, বিশ্বনেতারা যেন নিজেদের অতীতের ভুলের দায় আমাদের ওপর চাপিয়ে না দেন। যারা বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে, তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করব।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ


























