ঢাকা ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন কমিউনিটি ক্লিনিক

  • আপডেট সময় : ১২:৪৩:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি চর ভগপতিপুর। সেখানেই স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক। সেটি ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কবলে পড়ে বিলিন হয়ে গেছে। ক্লিনিকটি সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগপতিপুর এলাকায়। এর আগে ওই এলাকার একটি স্কুলভবনও ভাঙনের শিকার হয়। এ ছাড়াও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে একটি মসজিদ ও একটি আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের। ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যান্য নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যার দিকে একমাত্র চর ভগপতিপুর সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে। ১৬টি নদনদীবেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা। মাস খানেক আগ থেকে বিভিন্ন নদনদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার শত শত বিঘা আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। বিশেষ করে চর ভগপতিপুর এলাকায় গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগপতিপুর এলাকার নজরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান বলেন, ‘পানি বাড়ার কারণে বেশ কিছুদিন থেকে এখানে খুবই ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেকের বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। একমাত্র ক্লিনিক ছিল তাও নদীতে গেছে। আর যে জীবনে এখানে ক্লিনিক হবে কি না আল্লাহ পাক জানেন। ভাঙন দেখে খুবই কষ্ট লাগছে ভাই। কিন্তু কিছু তো করার নাই।’ সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর বলেন, আমার ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত। বেশিরভাগ এলাকাই চর। যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বিচ্ছিন্ন। চর ভগপতিপুর এলাকার একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩৬টির মতো বসতবাড়ি, একটি স্কুল ভাঙনের শিকার হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের গাফলতির কারণে ক্লিনিকটি নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেলো না। পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসকে বলে প্রায় চার হাজার জিও ব্যাগ সেখানে ফেলা হয়। এতদিন নিয়ন্ত্রণও ছিল, হঠাৎ করে ভেঙে গেলো। পানি উন্নয়ন বোর্ডও অনেক চেষ্টা করেছে। তাও ক্লিনিকটি রক্ষা করা যায়নি। কোনো উপায় ছিল না আসলে আমরা চেষ্টা করেই গেছি। নিলামের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় ক্লিনিকটি নদীতে বিলীন হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ফোন করা হলে তার সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ছে। ভগবতিপুরে চরের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে ওই মূল্যমানের স্থাপনা ও সম্পদ নেই। তারপরও আমরা ভাঙনরোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন কমিউনিটি ক্লিনিক

আপডেট সময় : ১২:৪৩:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি চর ভগপতিপুর। সেখানেই স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক। সেটি ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কবলে পড়ে বিলিন হয়ে গেছে। ক্লিনিকটি সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগপতিপুর এলাকায়। এর আগে ওই এলাকার একটি স্কুলভবনও ভাঙনের শিকার হয়। এ ছাড়াও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে একটি মসজিদ ও একটি আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের। ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যান্য নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যার দিকে একমাত্র চর ভগপতিপুর সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে। ১৬টি নদনদীবেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা। মাস খানেক আগ থেকে বিভিন্ন নদনদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার শত শত বিঘা আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। বিশেষ করে চর ভগপতিপুর এলাকায় গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগপতিপুর এলাকার নজরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান বলেন, ‘পানি বাড়ার কারণে বেশ কিছুদিন থেকে এখানে খুবই ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেকের বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। একমাত্র ক্লিনিক ছিল তাও নদীতে গেছে। আর যে জীবনে এখানে ক্লিনিক হবে কি না আল্লাহ পাক জানেন। ভাঙন দেখে খুবই কষ্ট লাগছে ভাই। কিন্তু কিছু তো করার নাই।’ সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর বলেন, আমার ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত। বেশিরভাগ এলাকাই চর। যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বিচ্ছিন্ন। চর ভগপতিপুর এলাকার একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩৬টির মতো বসতবাড়ি, একটি স্কুল ভাঙনের শিকার হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের গাফলতির কারণে ক্লিনিকটি নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেলো না। পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসকে বলে প্রায় চার হাজার জিও ব্যাগ সেখানে ফেলা হয়। এতদিন নিয়ন্ত্রণও ছিল, হঠাৎ করে ভেঙে গেলো। পানি উন্নয়ন বোর্ডও অনেক চেষ্টা করেছে। তাও ক্লিনিকটি রক্ষা করা যায়নি। কোনো উপায় ছিল না আসলে আমরা চেষ্টা করেই গেছি। নিলামের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় ক্লিনিকটি নদীতে বিলীন হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ফোন করা হলে তার সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ছে। ভগবতিপুরে চরের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে ওই মূল্যমানের স্থাপনা ও সম্পদ নেই। তারপরও আমরা ভাঙনরোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’