ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস হবে: বিশেষ সহকারী

  • আপডেট সময় : ০৭:২১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি-২০২৫ অনুমোদিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, নীতিমালায় আধুনিক ও যুগোপযোগী তিন স্তরের লাইসেন্স কাঠামো প্রবর্তন করা হয়েছে। গ্রাহকসেবার মান নিশ্চিত করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস এবং মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘নতুন নীতিমালার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অকার্যকর ও মধ্যস্বত্বভোগী নির্ভর লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়েছে। এর বদলে আধুনিক ও যুগোপযোগী তিন স্তরের লাইসেন্স কাঠামো প্রবর্তন করা হয়েছে। এর ফলে সেবার মানোন্নয়ন, কভারেজ বাড়ানো এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ভয়েস কল ও ডেটা আনার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে।’

তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অধীনে ২৬ ধরনের লাইসেন্সে প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে সেবা ও নিয়ন্ত্রণ উভয় ক্ষেত্রেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। নতুন নীতিতে এই মধ্যবর্তী স্তরগুলো সরিয়ে লাইসেন্সকে তিনটি মূল স্তরে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এর সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতের নতুন প্রযুক্তি যেমন এমভিএনও, প্রাইভেট ৫জি, ভয়েস ওভার ওয়াইফাই, ওয়াইফাই সিক্স ও সেভেন চালুর পথ উন্মুক্ত করা হয়েছে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘দ্বিতীয় স্তরে জাতীয় অবকাঠামো খাতকে বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। এখন থেকে টাওয়ার কোম্পানি, ফাইবার নেটওয়ার্ক ও ডেটা সেন্টার একে অপরের খাতে বিনিয়োগ ও ব্যবসা করতে পারবে। ক্লাউড ব্যবসার ক্ষেত্রেও লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ও টাওয়ার খাতে নতুন অপারেটর আসবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে।’

বিশেষ সহকারী জানান, গ্রাহকসেবার মান নিশ্চিত করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস এবং মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার সংযোগ পৌঁছাতে হবে। শহর–গ্রাম, পাহাড়–সমতল ও উপকূল–অঞ্চলভেদে সেবার বৈষম্য কমিয়ে সারা দেশে সমান কভারেজ নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘অতিরিক্ত মধ্যস্বত্বভোগী কমিয়ে দিলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। এর ফলে ভয়েস কল ও ডেটার শুল্ক কাঠামো শিথিল করা বা প্রয়োজন হলে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের কার্যক্ষমতা বাড়ানো হবে, যাতে দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সহায়তা মেলে।’

বিদেশি মালিকানা সীমিত করে অন্তত ১৫ শতাংশ শেয়ার স্থানীয় বাজারে উন্মুক্ত করার বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে। তবে কোম্পানিগুলোকে তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হবে।

২০২৭ সালের মধ্যে বিদ্যমান সব লাইসেন্স নতুন কাঠামোয় মাইগ্রেট করা হবে বলেও জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘নতুন নীতির মাধ্যমে টেলিকম খাতে একচেটিয়াত্ব ও অরাজকতা দূর হবে, প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়ে উঠবে এবং মানসম্মত সেবা পাবে দেশের মানুষ।’

এসি/আপ্র/০৫/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস হবে: বিশেষ সহকারী

আপডেট সময় : ০৭:২১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি-২০২৫ অনুমোদিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, নীতিমালায় আধুনিক ও যুগোপযোগী তিন স্তরের লাইসেন্স কাঠামো প্রবর্তন করা হয়েছে। গ্রাহকসেবার মান নিশ্চিত করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস এবং মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘নতুন নীতিমালার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অকার্যকর ও মধ্যস্বত্বভোগী নির্ভর লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়েছে। এর বদলে আধুনিক ও যুগোপযোগী তিন স্তরের লাইসেন্স কাঠামো প্রবর্তন করা হয়েছে। এর ফলে সেবার মানোন্নয়ন, কভারেজ বাড়ানো এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ভয়েস কল ও ডেটা আনার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে।’

তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অধীনে ২৬ ধরনের লাইসেন্সে প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে সেবা ও নিয়ন্ত্রণ উভয় ক্ষেত্রেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। নতুন নীতিতে এই মধ্যবর্তী স্তরগুলো সরিয়ে লাইসেন্সকে তিনটি মূল স্তরে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এর সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতের নতুন প্রযুক্তি যেমন এমভিএনও, প্রাইভেট ৫জি, ভয়েস ওভার ওয়াইফাই, ওয়াইফাই সিক্স ও সেভেন চালুর পথ উন্মুক্ত করা হয়েছে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘দ্বিতীয় স্তরে জাতীয় অবকাঠামো খাতকে বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। এখন থেকে টাওয়ার কোম্পানি, ফাইবার নেটওয়ার্ক ও ডেটা সেন্টার একে অপরের খাতে বিনিয়োগ ও ব্যবসা করতে পারবে। ক্লাউড ব্যবসার ক্ষেত্রেও লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ও টাওয়ার খাতে নতুন অপারেটর আসবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে।’

বিশেষ সহকারী জানান, গ্রাহকসেবার মান নিশ্চিত করতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস এবং মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার সংযোগ পৌঁছাতে হবে। শহর–গ্রাম, পাহাড়–সমতল ও উপকূল–অঞ্চলভেদে সেবার বৈষম্য কমিয়ে সারা দেশে সমান কভারেজ নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘অতিরিক্ত মধ্যস্বত্বভোগী কমিয়ে দিলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। এর ফলে ভয়েস কল ও ডেটার শুল্ক কাঠামো শিথিল করা বা প্রয়োজন হলে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের কার্যক্ষমতা বাড়ানো হবে, যাতে দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সহায়তা মেলে।’

বিদেশি মালিকানা সীমিত করে অন্তত ১৫ শতাংশ শেয়ার স্থানীয় বাজারে উন্মুক্ত করার বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে। তবে কোম্পানিগুলোকে তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হবে।

২০২৭ সালের মধ্যে বিদ্যমান সব লাইসেন্স নতুন কাঠামোয় মাইগ্রেট করা হবে বলেও জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘নতুন নীতির মাধ্যমে টেলিকম খাতে একচেটিয়াত্ব ও অরাজকতা দূর হবে, প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়ে উঠবে এবং মানসম্মত সেবা পাবে দেশের মানুষ।’

এসি/আপ্র/০৫/০৯/২০২৫