নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) সকাল ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের বড় ছেলে ব্যারিস্টার এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী এই জানাজার নামাজ পড়ান।
জানাজার নামাজের আগে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের ছোট ছেলে ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী তার প্রয়াত বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের জানাজায় অংশ নেন- সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির শাহজাহান চৌধুরী, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা।
জানাজার নামাজ শেষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর দ্বিতীয় নামাজে জানাজার জন্য মরদেহ তার দীর্ঘদিনের প্রিয় আইনাঙ্গন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ত্যাগ করে।
এর আগে ৪ মে বিকাল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও জামায়াতে ইসলামী সাবেক নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়মিত হন।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।
যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় তিনি ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দল থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর নতুন দল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এম এ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সেল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন। ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। দুই ছেলেও ব্যারিস্টার এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত।