ঢাকা ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

ব্যাংক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ

  • আপডেট সময় : ০৩:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার ব্যাংক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ দেওয়া হলো। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে ব্যাংকগুলোকে সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) এ নির্দেশনা জারি করে দুই খাতে ৪৫ শতাংশ খরচ কমাতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়, সবগুলো ব্যাংককে এ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস, লুব্রিকেন্ট বাবদ বরাদ্দ করা অর্থের ১০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে। আর আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কমাতে হবে আরও ১০ শতাংশ খরচ। তাতে জ্বালানি বাবদ আগামী এক বছরে ব্যাংকগুলোকে ২০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে।
একইভাবে সাশ্রয়ী হতে হবে বিদ্যুৎ খরচের ক্ষেত্রেও। আগামী এক বছরে প্রতিটি ব্যাংককে এ খাতে খরচ ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে। চলতি বছরের বাকি ছয় মাস ও আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসে আনুপাতিক হারে (অর্থাৎ সাড়ে ১২ শতাংশ করে) এ খরচ কমাতে হবে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে ব্যাংকগুলো যে অর্থ সাশ্রয় করবে, তা অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না বলেও নির্দেশনায় জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, এ দুই খাতে খরচ কমানোসংক্রান্ত তথ্য ও দলিলপত্র ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে এ–সংক্রান্ত তথ্য ও দলিলপত্র দেখতে চাইলে তা সরবরাহ করতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে, তা বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনেও প্রকাশ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের ডিসেম্বর ও আগামী বছরের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরতে হবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যানবাহন কেনা বন্ধের নির্দেশ : এদিকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের যানবাহন কেনা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া কোনও প্রকল্প কমিটির সভার সম্মানী বাবদ কোনও অর্থ ব্যয় করা যাবে না। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণের এই নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ইউজিসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাদ্দ দেওয়া বাজেট সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য সরকারের অনুশাসন পালন করে বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সংক্রান্ত এক সভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসারে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেট ব্যয় ও বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা’র (এপিপি) নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা আগামী ৩১ শে জুলাই এপিঠ সফটওয়্যারে আপলোড করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। সভায় জানানো হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রকার যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় আপ্যায়ন ব্যয়, অন্যান্য মনোহারী, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, আসবাবপত্র খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। দেশের অভ্যন্তরে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। পেট্রোল, ওয়েল এবং লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে। এছাড়া উন্নয়ন বাজেট ও নিজস্ব তহবিলের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সব ধরনের প্রকল্প, কর্মসূচি, স্কিমগুলোর ক্ষেত্রে সম্মানী খাতে বরাদ্দ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি), প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি), বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (ডিপিইসি), বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (এসপিইসি) এবং বিভাগীয় বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (ডিএসপিইসি) সভায় সম্মানী বাবদ কোনও অর্থ ব্যয় করা যাবে না। সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, প্রশিক্ষণ যথাসম্ভব ভার্চুয়ালি করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। উল্লিখিত খাতগুলো অব্যয়িত অর্থ অন্য কোনও খাতে স্থানান্তর করা যাবে না।
সভায় ইউজিসি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের সভাপতিত্ব করেন। কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শাহ আলম, বাজেট শাখার উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেজিস্ট্রার, হিসাব বিভাগীয় প্রধান ও প্রকৌশল দফতরের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন সভায়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ব্যাংক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৩:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার ব্যাংক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ দেওয়া হলো। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে ব্যাংকগুলোকে সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) এ নির্দেশনা জারি করে দুই খাতে ৪৫ শতাংশ খরচ কমাতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়, সবগুলো ব্যাংককে এ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস, লুব্রিকেন্ট বাবদ বরাদ্দ করা অর্থের ১০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে। আর আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কমাতে হবে আরও ১০ শতাংশ খরচ। তাতে জ্বালানি বাবদ আগামী এক বছরে ব্যাংকগুলোকে ২০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে।
একইভাবে সাশ্রয়ী হতে হবে বিদ্যুৎ খরচের ক্ষেত্রেও। আগামী এক বছরে প্রতিটি ব্যাংককে এ খাতে খরচ ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে। চলতি বছরের বাকি ছয় মাস ও আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসে আনুপাতিক হারে (অর্থাৎ সাড়ে ১২ শতাংশ করে) এ খরচ কমাতে হবে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে ব্যাংকগুলো যে অর্থ সাশ্রয় করবে, তা অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না বলেও নির্দেশনায় জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, এ দুই খাতে খরচ কমানোসংক্রান্ত তথ্য ও দলিলপত্র ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে এ–সংক্রান্ত তথ্য ও দলিলপত্র দেখতে চাইলে তা সরবরাহ করতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে, তা বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনেও প্রকাশ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের ডিসেম্বর ও আগামী বছরের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরতে হবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যানবাহন কেনা বন্ধের নির্দেশ : এদিকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের যানবাহন কেনা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এছাড়া কোনও প্রকল্প কমিটির সভার সম্মানী বাবদ কোনও অর্থ ব্যয় করা যাবে না। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণের এই নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ইউজিসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাদ্দ দেওয়া বাজেট সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য সরকারের অনুশাসন পালন করে বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সংক্রান্ত এক সভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসারে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেট ব্যয় ও বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা’র (এপিপি) নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা আগামী ৩১ শে জুলাই এপিঠ সফটওয়্যারে আপলোড করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। সভায় জানানো হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রকার যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় আপ্যায়ন ব্যয়, অন্যান্য মনোহারী, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, আসবাবপত্র খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। দেশের অভ্যন্তরে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। পেট্রোল, ওয়েল এবং লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে। এছাড়া উন্নয়ন বাজেট ও নিজস্ব তহবিলের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সব ধরনের প্রকল্প, কর্মসূচি, স্কিমগুলোর ক্ষেত্রে সম্মানী খাতে বরাদ্দ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি), প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি), বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (ডিপিইসি), বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (এসপিইসি) এবং বিভাগীয় বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (ডিএসপিইসি) সভায় সম্মানী বাবদ কোনও অর্থ ব্যয় করা যাবে না। সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, প্রশিক্ষণ যথাসম্ভব ভার্চুয়ালি করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। উল্লিখিত খাতগুলো অব্যয়িত অর্থ অন্য কোনও খাতে স্থানান্তর করা যাবে না।
সভায় ইউজিসি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের সভাপতিত্ব করেন। কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শাহ আলম, বাজেট শাখার উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেজিস্ট্রার, হিসাব বিভাগীয় প্রধান ও প্রকৌশল দফতরের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন সভায়।