ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ব্যস্ত প্লেনের যাত্রা পথে রয়েছে মহাকাশ বর্জ্যের ভয়

  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বা আইএসএস-এর মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ ব্যস্ত প্লেনের ওড়ার পথে পড়ার যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। আর এ ঝুঁকির পরিমাণ প্রতি চারটি বর্জ্যের মধ্যে একটি বলে উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।

এসব স্পেস জাঙ্কের আসলে কোনো প্লেনকে আঘাত করার ঝুঁকির পরিমাণ খুব কম। তবে ব্যস্ত ফ্লাইটপাথে পড়ার ও এসব প্লেনের পথ ঘুরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য বিঘ্নের কারণ হতে পারে এসব জাঙ্ক– এমন ঝুঁকি রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।

এখানে ২০২২ সালের এক ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরেছেন গবেষকরা, যেখানে দক্ষিণ ইউরোপে ২০ টন ওজনের একটি রকেটের টুকরো ভেঙে পড়ে ও এর ফলে ফ্লাইট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

প্রতি বছরই সমানতালে বাড়ছে ফ্লাইট ও মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ। গত বছর ২৫৮টি সফল রকেট উৎক্ষেপণ হয়েছে মহাকাশযানের, যার মধ্যে রেকর্ড ১২০টি রকেট অনিয়ন্ত্রিতভাবে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে এসেছে এবং এখনও দুই হাজার তিনশটিরও বেশি রকেটের টুকরো রয়েছে কক্ষপথে।

এর মানে হচ্ছে, প্লেন ও মহাকাশযানের মিথস্ক্রিয়ার বিপদ বাড়ছে। গবেষণার লেখকরা সতর্ক করে বলেছেন, মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না মহাকাশ শিল্প, এর বদলে এসব ঝুঁকি প্লেন কোম্পানির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে তারা।

গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর প্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজারটির মধ্যে কেবল একটি মহাকাশযানের ঝুঁকি থাকে যে এটি আসলে প্লেনের সঙ্গে ধাক্কা খেতে পারে। তবে এ ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা যদি একটিও থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা ঝুঁকি নিয়ে আকাশসীমা বন্ধ করে দেবে কি না, যার কোনোটিই আসলে ভালো সিদ্ধান্ত নয়।

‘ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়া’র অধ্যাপক ও এ গবেষণার প্রধান গবেষক ইওয়ান রাইট বলেছেন, “হঠাৎ করে আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে উৎক্ষেপণের পরপরই স্পেসএক্স স্টারশিপের সাম্প্রতিক বিস্ফোরণ।”

“প্লেনের জন্য একটি কিপ আউট জোন তৈরি করেছিল কর্তৃপক্ষ, যার মধ্যে অনেক প্লেনকেই ঘুরতে হয়েছিল বা তাদের ঘুরিয়ে নিতে হয়েছে ফ্লাইটের পথ। আর এটি এমন এক পরিস্থিতি ছিল, যেখানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ কোথায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যও ছিল। তবে তা কক্ষপথ থেকে বায়ুমণ্ডলে পুনরায় অনিয়ন্ত্রিত ধ্বংসাবশেষ প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।”

গবেষকরা বলছেন, মহাকাশ শিল্পের উচিত সেইসব ঝুঁকির উপর কাজ করা, যার মাধ্যমে তাদের এসব মহাকাশযান নিয়ন্ত্রিত উপায়ে পৃথিবীতে ফিরে আসবে। একইসঙ্গে তাদের এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে, নিরাপদে সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে এগুলোকে। তবে এর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে একসঙ্গে বসতে হবে এবং মহাকাশ সংস্থা ও কোম্পানিকে সেই ঝুঁকি নিতে হবে।

‘এয়ারস্পেস ক্লোজার ডিউ টু রিইন্টারর্নিং স্পেস অবজেক্টস’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চলতি বছরের শেষ দিকে নির্বাচন হতে পারে: এনএইচকেকে প্রধান উপদেষ্টা

ব্যস্ত প্লেনের যাত্রা পথে রয়েছে মহাকাশ বর্জ্যের ভয়

আপডেট সময় : ০৬:০৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বা আইএসএস-এর মহাকাশযানের ধ্বংসাবশেষ ব্যস্ত প্লেনের ওড়ার পথে পড়ার যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। আর এ ঝুঁকির পরিমাণ প্রতি চারটি বর্জ্যের মধ্যে একটি বলে উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।

এসব স্পেস জাঙ্কের আসলে কোনো প্লেনকে আঘাত করার ঝুঁকির পরিমাণ খুব কম। তবে ব্যস্ত ফ্লাইটপাথে পড়ার ও এসব প্লেনের পথ ঘুরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য বিঘ্নের কারণ হতে পারে এসব জাঙ্ক– এমন ঝুঁকি রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।

এখানে ২০২২ সালের এক ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরেছেন গবেষকরা, যেখানে দক্ষিণ ইউরোপে ২০ টন ওজনের একটি রকেটের টুকরো ভেঙে পড়ে ও এর ফলে ফ্লাইট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

প্রতি বছরই সমানতালে বাড়ছে ফ্লাইট ও মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ। গত বছর ২৫৮টি সফল রকেট উৎক্ষেপণ হয়েছে মহাকাশযানের, যার মধ্যে রেকর্ড ১২০টি রকেট অনিয়ন্ত্রিতভাবে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে এসেছে এবং এখনও দুই হাজার তিনশটিরও বেশি রকেটের টুকরো রয়েছে কক্ষপথে।

এর মানে হচ্ছে, প্লেন ও মহাকাশযানের মিথস্ক্রিয়ার বিপদ বাড়ছে। গবেষণার লেখকরা সতর্ক করে বলেছেন, মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না মহাকাশ শিল্প, এর বদলে এসব ঝুঁকি প্লেন কোম্পানির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে তারা।

গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর প্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজারটির মধ্যে কেবল একটি মহাকাশযানের ঝুঁকি থাকে যে এটি আসলে প্লেনের সঙ্গে ধাক্কা খেতে পারে। তবে এ ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা যদি একটিও থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা ঝুঁকি নিয়ে আকাশসীমা বন্ধ করে দেবে কি না, যার কোনোটিই আসলে ভালো সিদ্ধান্ত নয়।

‘ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়া’র অধ্যাপক ও এ গবেষণার প্রধান গবেষক ইওয়ান রাইট বলেছেন, “হঠাৎ করে আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে উৎক্ষেপণের পরপরই স্পেসএক্স স্টারশিপের সাম্প্রতিক বিস্ফোরণ।”

“প্লেনের জন্য একটি কিপ আউট জোন তৈরি করেছিল কর্তৃপক্ষ, যার মধ্যে অনেক প্লেনকেই ঘুরতে হয়েছিল বা তাদের ঘুরিয়ে নিতে হয়েছে ফ্লাইটের পথ। আর এটি এমন এক পরিস্থিতি ছিল, যেখানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ কোথায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যও ছিল। তবে তা কক্ষপথ থেকে বায়ুমণ্ডলে পুনরায় অনিয়ন্ত্রিত ধ্বংসাবশেষ প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।”

গবেষকরা বলছেন, মহাকাশ শিল্পের উচিত সেইসব ঝুঁকির উপর কাজ করা, যার মাধ্যমে তাদের এসব মহাকাশযান নিয়ন্ত্রিত উপায়ে পৃথিবীতে ফিরে আসবে। একইসঙ্গে তাদের এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে, নিরাপদে সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে এগুলোকে। তবে এর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে একসঙ্গে বসতে হবে এবং মহাকাশ সংস্থা ও কোম্পানিকে সেই ঝুঁকি নিতে হবে।

‘এয়ারস্পেস ক্লোজার ডিউ টু রিইন্টারর্নিং স্পেস অবজেক্টস’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ।