ঢাকা ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে বেরিয়ে ‘নতুন দল’ আনার ঘোষণা

  • আপডেট সময় : ০৪:১৬:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নতুন দল গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা একদল শিক্ষার্থী। ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করবে নতুন এই ছাত্র সংগঠন। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের এবং ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের আবু বাকের মজুমদার। আব্দুল কাদের এক সময় গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ন আহবায়ক এবং আবু বাকের মজুমদার একই কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। তারা বলছেন, তাদের নতুন সংগঠন শুধু শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করবে, তাদের কার্যক্রম শিক্ষাঙ্গনে সীমাবদ্ধ থাকবে। পাশাপাশি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে না যাওয়া ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলেন। আবু বাকের মজুমদার বলেন, “নতুন এ রাজনৈতিক দল লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করবে না। এ দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার ভিত্তিতে।”

তিনি বলেন, “বিগত ১৬ নম্বর বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের করালগ্রাসে নিমজ্জিত ছিল। দেশের সর্বস্তরে কায়েম করা হয়েছিল কাঠামোগত এবং সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ। যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সকল নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং ফ্যামিবাদের দোসররা ক্রমাগত অধিকার হরণের বৈধতা উৎপাদন করে গেছে। “শিক্ষাঙ্গনে ক্রমাগত সন্ত্রাসবাদ কায়েম, ট্যাগিং সংস্কৃতি, সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ কায়েমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মৌলিক ও শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ, আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লেজুড়বৃত্তিক নীল দলের শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রয়াসে ধ্বংস করা হয়েছে।” সংবাদ সম্মেলনে নতুন দলের মৌলিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন আবু বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, “আদর্শিক বাইনারি সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের বাহিরে গিয়ে মধ্যমপন্থী ছাত্র রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্ররাজনীতি তৈরি এবং পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে অবমূল্যায়ন করা হবে না, এমন দল করব।” মূলধারার রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের যে অনুপস্থিতি, সেটি মাথায় রেখে নারীর রাজনৈতিক মানস বিনির্মাণ, রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নারীবান্ধব করে তোলার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগের সৃষ্টি করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের এ নতুন দল।

‘নতুন ধারার’ ছাত্র রাজনীতি
লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির বাইরে গিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে নতুন ধারা আনার প্রত্যয় জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। আবু বাকের মজুমদার বলেন, “শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে আপসহীন ছাত্ররাজনীতির প্রতিশ্রুতি, বাংলাদেশের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে স্বীকার করে ৪৭, ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৮, ৬৯, ৭১, ৯০ এবং ২৪ এর গণ-আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে ছাত্র রাজনীতি চালু করব। “ফ্যাসিবাদী আমলে সব শিক্ষাপরিসরে পরিকল্পিতভাবে যে রাজনৈতিক অপচর্চা হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার শিক্ষার্থী সংসদ কাঠামোকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। নতুন ছাত্ররাজনীতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী সংসদ কাঠামো পুনর্বহালে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ এবং ছাত্র-নাগরিক সংহতি রক্ষার মধ্য দিয়ে ছাত্র-নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখব।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আইন-বিবেক অনুযায়ী ডিসিদের কাজ করার নির্দেশনা আইন উপদেষ্টার

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে বেরিয়ে ‘নতুন দল’ আনার ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৪:১৬:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নতুন দল গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা একদল শিক্ষার্থী। ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করবে নতুন এই ছাত্র সংগঠন। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের এবং ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের আবু বাকের মজুমদার। আব্দুল কাদের এক সময় গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ন আহবায়ক এবং আবু বাকের মজুমদার একই কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। তারা বলছেন, তাদের নতুন সংগঠন শুধু শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করবে, তাদের কার্যক্রম শিক্ষাঙ্গনে সীমাবদ্ধ থাকবে। পাশাপাশি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে না যাওয়া ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলেন। আবু বাকের মজুমদার বলেন, “নতুন এ রাজনৈতিক দল লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করবে না। এ দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার ভিত্তিতে।”

তিনি বলেন, “বিগত ১৬ নম্বর বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের করালগ্রাসে নিমজ্জিত ছিল। দেশের সর্বস্তরে কায়েম করা হয়েছিল কাঠামোগত এবং সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ। যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সকল নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং ফ্যামিবাদের দোসররা ক্রমাগত অধিকার হরণের বৈধতা উৎপাদন করে গেছে। “শিক্ষাঙ্গনে ক্রমাগত সন্ত্রাসবাদ কায়েম, ট্যাগিং সংস্কৃতি, সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ কায়েমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মৌলিক ও শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ, আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লেজুড়বৃত্তিক নীল দলের শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রয়াসে ধ্বংস করা হয়েছে।” সংবাদ সম্মেলনে নতুন দলের মৌলিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন আবু বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, “আদর্শিক বাইনারি সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের বাহিরে গিয়ে মধ্যমপন্থী ছাত্র রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্ররাজনীতি তৈরি এবং পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে অবমূল্যায়ন করা হবে না, এমন দল করব।” মূলধারার রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের যে অনুপস্থিতি, সেটি মাথায় রেখে নারীর রাজনৈতিক মানস বিনির্মাণ, রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নারীবান্ধব করে তোলার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগের সৃষ্টি করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের এ নতুন দল।

‘নতুন ধারার’ ছাত্র রাজনীতি
লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির বাইরে গিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে নতুন ধারা আনার প্রত্যয় জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। আবু বাকের মজুমদার বলেন, “শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে আপসহীন ছাত্ররাজনীতির প্রতিশ্রুতি, বাংলাদেশের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে স্বীকার করে ৪৭, ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৮, ৬৯, ৭১, ৯০ এবং ২৪ এর গণ-আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে ছাত্র রাজনীতি চালু করব। “ফ্যাসিবাদী আমলে সব শিক্ষাপরিসরে পরিকল্পিতভাবে যে রাজনৈতিক অপচর্চা হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার শিক্ষার্থী সংসদ কাঠামোকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। নতুন ছাত্ররাজনীতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী সংসদ কাঠামো পুনর্বহালে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ এবং ছাত্র-নাগরিক সংহতি রক্ষার মধ্য দিয়ে ছাত্র-নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখব।”