ঢাকা ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

বেশি বয়সে সন্তান ধারণ: যা জানা জরুরি

  • আপডেট সময় : ০১:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

অধ্যাপক ডা. পারভীন ফাতেমা: উচ্চশিক্ষা, দেরিতে বিয়ে এবং ক্যারিয়ারের কারণে নারীদের মধ্যে বেশি বয়সে সন্তান ধারণের প্রবণতা বেড়েছে। কেউ কেউ অর্থনৈতিক কারণ, সন্তান দেখভালের ব্যবস্থা না থাকায় সহজে সন্তান নিতে চান না। শুধু দেশে নয়, বিশ্বের অনেক স্থানেই এ অবস্থা চলছে। অনেকে আবার শখ করে বা সংসারের একাকিত্ব ঘোচাতে বেশি বয়সে বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
কিন্তু দেরিতে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনার পর যখন মা হওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন দেখা যাচ্ছে তারা ইতোমধ্যে বন্ধ্যত্বের শিকার হয়েছেন। চিকিৎসকরাও সে ক্ষেত্রে ডায়াগনসিস করতে বেশ ঝামেলায় পড়ে যান। অনেক সময় এটা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে এই বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যা একটা লম্বা গ্যাপের কারণে, নাকি গাইনোকলোজিক্যাল অন্য কোনো সমস্যার কারণে হচ্ছে। বন্ধ্যত্বের জন্য বয়স খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যত বয়স বাড়বে মেয়েদের শরীরের ডিমের পরিমাণ কমে আসবে। সেই সঙ্গে ডিমের কোয়ালিটি খারাপ হবে। ডিমের পরিমাণ যখন কমবে, তখন স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা আসতে যেমন সমস্যা হবে, অন্যদিকে ডিমের কোয়ালিটি খারাপ হওয়ার কারণে অস্বাভাবিক শিশুর জন্ম বা গর্ভপাতের আশঙ্কা বেড়ে যায়। যত বয়স বাড়ে অনাগত শিশুর ডাউন সিনড্রোম ও অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যে নারী বেশি বয়সে বাচ্চা নিচ্ছেন, তাঁরও অনেক শারীরিক সমস্যা উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করে।
গর্ভাবস্থা যে কোনো বয়সেই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে মায়ের বয়স ৩৫ পার হলে আরও কিছু জটিলতা দেখা দেয়। বেশি বয়সে বাচ্চা নিলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এ ছাড়া গর্ভধারণের সময় রক্তচাপ বাড়তে পারে, থায়রয়েডের সমস্যা দেখা দিতে পারে, একলামসিয়া, প্রি-একলামসিয়া হতে পারে। এমনকি বয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে সিজারিয়ান সেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি সিজারিয়ান ডেলিভারি, মায়ের প্রসব-উত্তর রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। শিশু কম বা বেশি ওজন নিয়ে জন্ম নেয়। কখনও কখনও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকিও বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে বেশি বয়সে গর্ভধারণজনিত জটিলতা বাড়ে, বৈকি কমে না। বিভিন্ন গবেষণাও তাই বলছে। ১৮ থেকে ৩৪ বছর, ৩৫ থেকে ৪০ বছর এবং ৪০ বা তার বেশি বয়সের নারীদের মধ্যে গর্ভাবস্থার জটিলতার তুলনা করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ গর্ভাবস্থায় বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সন্তানের জন্ম-সম্পর্কিত জটিলতা সামান্য বেড়েছে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘ক্ষমতায় থাকতে’ ইউনূস মৌলবাদীদের ‘একখানে করেছেন’: গয়েশ্বর

বেশি বয়সে সন্তান ধারণ: যা জানা জরুরি

আপডেট সময় : ০১:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩

অধ্যাপক ডা. পারভীন ফাতেমা: উচ্চশিক্ষা, দেরিতে বিয়ে এবং ক্যারিয়ারের কারণে নারীদের মধ্যে বেশি বয়সে সন্তান ধারণের প্রবণতা বেড়েছে। কেউ কেউ অর্থনৈতিক কারণ, সন্তান দেখভালের ব্যবস্থা না থাকায় সহজে সন্তান নিতে চান না। শুধু দেশে নয়, বিশ্বের অনেক স্থানেই এ অবস্থা চলছে। অনেকে আবার শখ করে বা সংসারের একাকিত্ব ঘোচাতে বেশি বয়সে বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
কিন্তু দেরিতে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনার পর যখন মা হওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন দেখা যাচ্ছে তারা ইতোমধ্যে বন্ধ্যত্বের শিকার হয়েছেন। চিকিৎসকরাও সে ক্ষেত্রে ডায়াগনসিস করতে বেশ ঝামেলায় পড়ে যান। অনেক সময় এটা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে এই বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যা একটা লম্বা গ্যাপের কারণে, নাকি গাইনোকলোজিক্যাল অন্য কোনো সমস্যার কারণে হচ্ছে। বন্ধ্যত্বের জন্য বয়স খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যত বয়স বাড়বে মেয়েদের শরীরের ডিমের পরিমাণ কমে আসবে। সেই সঙ্গে ডিমের কোয়ালিটি খারাপ হবে। ডিমের পরিমাণ যখন কমবে, তখন স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা আসতে যেমন সমস্যা হবে, অন্যদিকে ডিমের কোয়ালিটি খারাপ হওয়ার কারণে অস্বাভাবিক শিশুর জন্ম বা গর্ভপাতের আশঙ্কা বেড়ে যায়। যত বয়স বাড়ে অনাগত শিশুর ডাউন সিনড্রোম ও অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যে নারী বেশি বয়সে বাচ্চা নিচ্ছেন, তাঁরও অনেক শারীরিক সমস্যা উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করে।
গর্ভাবস্থা যে কোনো বয়সেই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে মায়ের বয়স ৩৫ পার হলে আরও কিছু জটিলতা দেখা দেয়। বেশি বয়সে বাচ্চা নিলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এ ছাড়া গর্ভধারণের সময় রক্তচাপ বাড়তে পারে, থায়রয়েডের সমস্যা দেখা দিতে পারে, একলামসিয়া, প্রি-একলামসিয়া হতে পারে। এমনকি বয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে সিজারিয়ান সেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি সিজারিয়ান ডেলিভারি, মায়ের প্রসব-উত্তর রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। শিশু কম বা বেশি ওজন নিয়ে জন্ম নেয়। কখনও কখনও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকিও বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে বেশি বয়সে গর্ভধারণজনিত জটিলতা বাড়ে, বৈকি কমে না। বিভিন্ন গবেষণাও তাই বলছে। ১৮ থেকে ৩৪ বছর, ৩৫ থেকে ৪০ বছর এবং ৪০ বা তার বেশি বয়সের নারীদের মধ্যে গর্ভাবস্থার জটিলতার তুলনা করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ গর্ভাবস্থায় বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সন্তানের জন্ম-সম্পর্কিত জটিলতা সামান্য বেড়েছে।