ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

বেতন আর ছুটি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ে বিক্ষোভ

  • আপডেট সময় : ১১:২৩:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : বেতন বাড়ানোর দাবিতে তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচী শুরু করেছে ‘স্যামসাং ইলেকট্রনিকস’-এর কর্মীরা।
গতকাল সোমবার শুরু হওয়া বিক্ষোভের পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে স্যামসাং কর্মীদের ইউনিয়ন ‘এনএসইইউ’, যেখানে নিজস্ব পণ্যের চাহিদা পূরণে ক্রমশই ব্যর্থ হচ্ছে দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিটি। ‘ন্যাশনাল স্যামসাং ইলেকট্রনিক ইউনিয়ন (এনএসইইউ)’র সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার, যা দক্ষিণ কোরিয়ায় কোম্পানিটির সামগ্রিক কর্মশক্তির প্রায় এক চতুর্থাংশ। এদিকে, বেতনের পাশাপাশি নিজেদের বার্ষিক ছুটি একদিন বাড়ানোর এমনকি কর্মীদের বোনাস ব্যবস্থাও পাল্টানোর দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বিশ্লেষকদের মতে, বিক্ষোভে কর্মীদের কম উপস্থিতি ও কোম্পানির স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থা চালু করার মানে দাঁড়ায়, বিশ্বের বৃহত্তম মেমরি চিপ নির্মাতা কোম্পানিটির ওপর এ বিক্ষোভের তেমন বড় প্রভাব পড়বে না। তবে এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এ মূহুর্তে চিপ শিল্পের বিভিন্ন কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আপন করে নেওয়ায় কর্মীদের মধ্যে কোম্পানির প্রতি ভরসা কমে আসতে পারে। ইউনিয়নের প্রথম পদক্ষেপ এসেছিল গত মাসে, যখন কর্মীরা নিজেদের বার্ষিক ছুটিকে সমন্বিত করে গন ওয়াকআউট কর্মসূচী দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে স্যামসাং বলেছে, এর ফলে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে সোমবারের বিক্ষোভ কর্মসূচী নিয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি কোম্পানিটি।
এদিকে, ইউনিয়ন গত মাসের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মীদের সংখ্যা প্রকাশ না করলেও বলেছে, এ সপ্তাহের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ছয় হাজার পাঁচশ ৪০ জন কর্মী, যাদের বেশিরভাগই কোম্পানির পণ্য উৎপাদন কারখানা সংশ্লিষ্ট। তারা আরও বলেছে, কোম্পানির স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থা ও যন্ত্রপাতি মনিটর করা কর্মীরাও এবারের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন যাতে কোম্পানির কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে। ইউনিয়ন মুখপাত্রদের দাবি, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের দক্ষিণের শহর হাওয়াসেংয়ে অবস্থিত স্যামসাংয়ের সদর দপ্তরের কাছাকাছি প্রায় তিন হাজার কর্মী একটি র‌্যালিতে অংশ নিয়েছিলেন, তাও বৃষ্টির মধ্যে। ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট সান উয়ু-মক কম উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে রয়টার্সকে বলেছেন, পাঁচ বছর পুরোনো এ ইউনিয়ন সদস্যদের এ বিষয়ে শেখানোর মতো যথেষ্ট সময় পায়নি।
“শ্রমিক ইউনিয়ন নিয়ে যথেষ্ট জ্ঞানার্জনের সুযোগ না হলেও, অংশগ্রহণ কম হয়েছে, এমন মনে হয়নি। কারণ অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় আমাদের ইউনিয়নটি এখনও অনেক তরুণ,” বলেন তিনি। ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি হিউন-কুক বলেছেন, স্যামসাং নিজেদের প্রস্তাবনা উন্নত না করলে সামনে আরও বিক্ষোভ হতে পারে। “স্যামসাংয়ের প্রস্তাবে বেতন কাঠামো ও বার্ষিক ছুটির বিভিন্ন শর্ত শিথিল করা হয়েছে বটে, তবে তা এখনও ইউনিয়নের দাবি থেকে অনেক দূরে,” রয়টার্সকে বলেন লি। এমনকি কোম্পানির বোনাস ব্যবস্থাতেও সমতা আনার দাবি করেছেন ইউনিয়ন মুখপাত্ররা। তারা বলেছেন, ‘র‌্যাঙ্ক-অ্যান্ড-ফাইল’ কর্মীদের বোনাস হিসাব করা হয় মুনাফা থেকে মূলধনের খরচ বাদ দিয়ে। তবে, নির্বাহী কর্মীদের ক্ষেত্রে সে হিসাব হয় ব্যক্তিগত লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ভিত্তিতে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বেতন আর ছুটি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ১১:২৩:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : বেতন বাড়ানোর দাবিতে তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচী শুরু করেছে ‘স্যামসাং ইলেকট্রনিকস’-এর কর্মীরা।
গতকাল সোমবার শুরু হওয়া বিক্ষোভের পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে স্যামসাং কর্মীদের ইউনিয়ন ‘এনএসইইউ’, যেখানে নিজস্ব পণ্যের চাহিদা পূরণে ক্রমশই ব্যর্থ হচ্ছে দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিটি। ‘ন্যাশনাল স্যামসাং ইলেকট্রনিক ইউনিয়ন (এনএসইইউ)’র সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার, যা দক্ষিণ কোরিয়ায় কোম্পানিটির সামগ্রিক কর্মশক্তির প্রায় এক চতুর্থাংশ। এদিকে, বেতনের পাশাপাশি নিজেদের বার্ষিক ছুটি একদিন বাড়ানোর এমনকি কর্মীদের বোনাস ব্যবস্থাও পাল্টানোর দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বিশ্লেষকদের মতে, বিক্ষোভে কর্মীদের কম উপস্থিতি ও কোম্পানির স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থা চালু করার মানে দাঁড়ায়, বিশ্বের বৃহত্তম মেমরি চিপ নির্মাতা কোম্পানিটির ওপর এ বিক্ষোভের তেমন বড় প্রভাব পড়বে না। তবে এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এ মূহুর্তে চিপ শিল্পের বিভিন্ন কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আপন করে নেওয়ায় কর্মীদের মধ্যে কোম্পানির প্রতি ভরসা কমে আসতে পারে। ইউনিয়নের প্রথম পদক্ষেপ এসেছিল গত মাসে, যখন কর্মীরা নিজেদের বার্ষিক ছুটিকে সমন্বিত করে গন ওয়াকআউট কর্মসূচী দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে স্যামসাং বলেছে, এর ফলে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে সোমবারের বিক্ষোভ কর্মসূচী নিয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি কোম্পানিটি।
এদিকে, ইউনিয়ন গত মাসের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মীদের সংখ্যা প্রকাশ না করলেও বলেছে, এ সপ্তাহের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ছয় হাজার পাঁচশ ৪০ জন কর্মী, যাদের বেশিরভাগই কোম্পানির পণ্য উৎপাদন কারখানা সংশ্লিষ্ট। তারা আরও বলেছে, কোম্পানির স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থা ও যন্ত্রপাতি মনিটর করা কর্মীরাও এবারের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন যাতে কোম্পানির কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে। ইউনিয়ন মুখপাত্রদের দাবি, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের দক্ষিণের শহর হাওয়াসেংয়ে অবস্থিত স্যামসাংয়ের সদর দপ্তরের কাছাকাছি প্রায় তিন হাজার কর্মী একটি র‌্যালিতে অংশ নিয়েছিলেন, তাও বৃষ্টির মধ্যে। ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট সান উয়ু-মক কম উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে রয়টার্সকে বলেছেন, পাঁচ বছর পুরোনো এ ইউনিয়ন সদস্যদের এ বিষয়ে শেখানোর মতো যথেষ্ট সময় পায়নি।
“শ্রমিক ইউনিয়ন নিয়ে যথেষ্ট জ্ঞানার্জনের সুযোগ না হলেও, অংশগ্রহণ কম হয়েছে, এমন মনে হয়নি। কারণ অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় আমাদের ইউনিয়নটি এখনও অনেক তরুণ,” বলেন তিনি। ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি হিউন-কুক বলেছেন, স্যামসাং নিজেদের প্রস্তাবনা উন্নত না করলে সামনে আরও বিক্ষোভ হতে পারে। “স্যামসাংয়ের প্রস্তাবে বেতন কাঠামো ও বার্ষিক ছুটির বিভিন্ন শর্ত শিথিল করা হয়েছে বটে, তবে তা এখনও ইউনিয়নের দাবি থেকে অনেক দূরে,” রয়টার্সকে বলেন লি। এমনকি কোম্পানির বোনাস ব্যবস্থাতেও সমতা আনার দাবি করেছেন ইউনিয়ন মুখপাত্ররা। তারা বলেছেন, ‘র‌্যাঙ্ক-অ্যান্ড-ফাইল’ কর্মীদের বোনাস হিসাব করা হয় মুনাফা থেকে মূলধনের খরচ বাদ দিয়ে। তবে, নির্বাহী কর্মীদের ক্ষেত্রে সে হিসাব হয় ব্যক্তিগত লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ভিত্তিতে।