ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

বেচাকেনা নেই মিরপুর বেনারসি পল্লিতে’

  • আপডেট সময় : ০৫:৪৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার জমে ওঠেনি মিরপুর বেনারসি পল্লির ঈদের বাজার। ব্যবসায়ীরা বলছেন গত দশ পনেরো বছরে ঈদে এত কম ক্রেতা দেখেননি তারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিরপুর-১০ বেনারসি পল্লিতে সরেজমিনে দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে গুটিকয়েক ক্রেতার আনাগোনা থাকলেও বাকিগুলোয় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। বিক্রি কমে যাওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকার পাশেই বেনারসি পল্লি।

এ শাড়ির বাজারে দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। মূলত বিয়ে-বৌভাতসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে মেয়েদের শাড়ি, লেহেঙ্গা ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত এই বেনারসি পল্লি। তবে এখানে শাড়ির চাহিদাই বেশি; ভিড় জমে ঈদেও। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। রূপ মোহিনী গ্যালারির স্বত্বাধিকারী মো. আজিজুল হক সুমন বলেন, ভেবেছিলাম এবার ঈদে বেশি বেচাকেনা হবে। কারণ ভারত যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। কিন্তু গত ১০-১৫ বছরে ঈদে এত কম ক্রেতা আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমাদের এখানে সাধারণ সময়েই ভালো বেচাকেনা হয়। কিন্তু দুই ঈদ উপলক্ষে যেরকম বেচাকেনা হওয়ার কথা তার ১০০ ভাগের ১০ ভাগও এবার হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর বিয়ের মৌসুম।

এ সময়ে বিক্রিটা ভালো হয়। আগে রোজার শুরু থেকেই ক্রেতাদের আনাগোনা থাকত। কিন্তু এবার এখনও ঈদের বিক্রি শুরু হয়নি। এবারের রমজানে প্রত্যেকটা দোকানের অবস্থাই খুব খারাপ। এমন মন্তব্য করে শাহানা ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী গোলাপী আশরাফ বলেন, যারা আসেন তাদের বাজেটে হয় না। সবাই কম বাজেটের মধ্যে খোঁজেন। অনেকে ১০-১২ টা শাড়ি দেখে চলে যান। মনে হচ্ছে তাদের কাছে টাকা নেই। বিক্রি কমে যাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে গোলাপী বলেন, আগে উপহার দিতে অনেকেই লট ধরে শাড়ি নিয়ে যেতেন।

এবার সেসব ক্রেতাও আসছেন না। বেনারসি পল্লির যাত্রা শুরু স্বাধীনতার পরপরই। সেখানে তাঁত, জামদানি, টাঙ্গাইল ও কাতানসহ অন্যান্য শাড়িও পাওয়া যায়। লেহেঙ্গার পাশাপাশি মেলে বিয়ের অন্যান্য সামগ্রীও। স্বর্ণা জামদানির বিক্রেতা মো. সবুর বলেন, আমাদের বনি-বাট্টা করাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেশের পরিস্থিতির কারণে এমনটা হতে পারে যে, মানুষের হাতে টাকা-পয়সা নাই। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও সুবিধার না। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেনারসি পল্লিতে আসেন ক্রেতারা। তেমনি একজন উত্তর বাড্ডা থেকে আগত শায়লা। তিনি বলেন, জামদানি শাড়ির দাম কেবল বেড়েই যাচ্ছে। গত বছর যে শাড়ি ১০ হাজার টাকায় কিনেছি সেটা এ বছর ১৫ হাজারেও দিচ্ছে না। উপহারের শাড়ি কিনতে আসা একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পরিবারের সবার জন্য শাড়ি কিনব বলে এসেছিলাম। কিন্তু দাম দেখে মনে হচ্ছে খালি হাতেই ফিরতে হবে। রূপসী বেনারসির স্বত্বাধিকারী আফজাল জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখানে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই জামদানি, সিল্ক, কাতান, লিলেন ও টাঙ্গাইলের সুতি শাড়ি পাওয়া যায়। এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকার শাড়িও আছে আমাদের কাছে। তবে আমাদের বেস্টসেলার হচ্ছে জামদানি। কিন্তু এবারের ঈদের বাজার খুব খারাপ। সামনে নববর্ষ। আশা করছি তখন ভালো বিক্রি হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বেচাকেনা নেই মিরপুর বেনারসি পল্লিতে’

আপডেট সময় : ০৫:৪৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার জমে ওঠেনি মিরপুর বেনারসি পল্লির ঈদের বাজার। ব্যবসায়ীরা বলছেন গত দশ পনেরো বছরে ঈদে এত কম ক্রেতা দেখেননি তারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিরপুর-১০ বেনারসি পল্লিতে সরেজমিনে দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে গুটিকয়েক ক্রেতার আনাগোনা থাকলেও বাকিগুলোয় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। বিক্রি কমে যাওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকার পাশেই বেনারসি পল্লি।

এ শাড়ির বাজারে দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। মূলত বিয়ে-বৌভাতসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে মেয়েদের শাড়ি, লেহেঙ্গা ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত এই বেনারসি পল্লি। তবে এখানে শাড়ির চাহিদাই বেশি; ভিড় জমে ঈদেও। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। রূপ মোহিনী গ্যালারির স্বত্বাধিকারী মো. আজিজুল হক সুমন বলেন, ভেবেছিলাম এবার ঈদে বেশি বেচাকেনা হবে। কারণ ভারত যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। কিন্তু গত ১০-১৫ বছরে ঈদে এত কম ক্রেতা আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমাদের এখানে সাধারণ সময়েই ভালো বেচাকেনা হয়। কিন্তু দুই ঈদ উপলক্ষে যেরকম বেচাকেনা হওয়ার কথা তার ১০০ ভাগের ১০ ভাগও এবার হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর বিয়ের মৌসুম।

এ সময়ে বিক্রিটা ভালো হয়। আগে রোজার শুরু থেকেই ক্রেতাদের আনাগোনা থাকত। কিন্তু এবার এখনও ঈদের বিক্রি শুরু হয়নি। এবারের রমজানে প্রত্যেকটা দোকানের অবস্থাই খুব খারাপ। এমন মন্তব্য করে শাহানা ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী গোলাপী আশরাফ বলেন, যারা আসেন তাদের বাজেটে হয় না। সবাই কম বাজেটের মধ্যে খোঁজেন। অনেকে ১০-১২ টা শাড়ি দেখে চলে যান। মনে হচ্ছে তাদের কাছে টাকা নেই। বিক্রি কমে যাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে গোলাপী বলেন, আগে উপহার দিতে অনেকেই লট ধরে শাড়ি নিয়ে যেতেন।

এবার সেসব ক্রেতাও আসছেন না। বেনারসি পল্লির যাত্রা শুরু স্বাধীনতার পরপরই। সেখানে তাঁত, জামদানি, টাঙ্গাইল ও কাতানসহ অন্যান্য শাড়িও পাওয়া যায়। লেহেঙ্গার পাশাপাশি মেলে বিয়ের অন্যান্য সামগ্রীও। স্বর্ণা জামদানির বিক্রেতা মো. সবুর বলেন, আমাদের বনি-বাট্টা করাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেশের পরিস্থিতির কারণে এমনটা হতে পারে যে, মানুষের হাতে টাকা-পয়সা নাই। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও সুবিধার না। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেনারসি পল্লিতে আসেন ক্রেতারা। তেমনি একজন উত্তর বাড্ডা থেকে আগত শায়লা। তিনি বলেন, জামদানি শাড়ির দাম কেবল বেড়েই যাচ্ছে। গত বছর যে শাড়ি ১০ হাজার টাকায় কিনেছি সেটা এ বছর ১৫ হাজারেও দিচ্ছে না। উপহারের শাড়ি কিনতে আসা একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পরিবারের সবার জন্য শাড়ি কিনব বলে এসেছিলাম। কিন্তু দাম দেখে মনে হচ্ছে খালি হাতেই ফিরতে হবে। রূপসী বেনারসির স্বত্বাধিকারী আফজাল জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখানে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই জামদানি, সিল্ক, কাতান, লিলেন ও টাঙ্গাইলের সুতি শাড়ি পাওয়া যায়। এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকার শাড়িও আছে আমাদের কাছে। তবে আমাদের বেস্টসেলার হচ্ছে জামদানি। কিন্তু এবারের ঈদের বাজার খুব খারাপ। সামনে নববর্ষ। আশা করছি তখন ভালো বিক্রি হবে।