ঢাকা ১০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

বীর মেয়েদের জয়যাত্রা

  • আপডেট সময় : ০২:৩২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : সাফজয়ী বাংলার মেয়েরা দেশে ফিরেছেন। বুধবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর পরিকল্পনা মতো তাদের বরণ করে নেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বাফুফের কর্মকর্তারা। এ সময় কেক কেটে তাদের খাওয়ানোর পাশাপাশি ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তিনি ট্রফি উঁচিয়ে বলেছেন, ‘এই ট্রফি বাংলাদেশের ১৬ কোটি বলুন, ১৮ কোটি বলুন, সকল মানুষের।’ এ সময় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বরণ করে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি, ‘সকলকে ধন্যবাদ আমাদের এত সুন্দরভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য। আমরা কৃতজ্ঞ।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যদি চার-পাঁচ বছরের পরিশ্রম দেখেন তাহলে দেখবেন সেটার ফল এখন হাতে আছে।’
নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েই প্রথমবার নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। সাবিনা এসময় সবার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘এখানে যে মন্ত্রী মহোদয় ও আমাদের ফেডারেশনের স্যারেরা আছেন তাদের ধন্যবাদ। সাউথ এশিয়ার ভেতর ভালো অবস্থান করেছি। এখন সামনের দিকে কীভাবে যাওয়া যায়, সেই প্রচেষ্টা থাকবে। অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই বাফুফে প্রেসিডেন্ট সালাউদ্দিন স্যারকে। আমরা আসলে কৃতজ্ঞ সবার কাছে।’
ট্রফি নিয়ে ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়নরা : বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর সাফজয়ী বাংলার মেয়েরা সংবাদমাধ্যমে সংক্ষেপে কথা বলেন। তারপর সাফজয়ীদের নিয়ে দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে ছাদখোলা বাসের শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। এসময় তাদের ঘিরে রাখেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। রাস্তার দুই পাশে সাফজয়ীদের দেখে জনগণ হাত নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। সাবিনারাও হাসিমুখে হাত নেড়ে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখান। খোলা ছাদের বাসে সামনে ট্রফি হাতে ছিলেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তার পাশে সানজিদা, মাশুরা পারভীনরা। চ্যাম্পিয়নদের বাসটি বিমানবন্দর থেকে কাকলী-বনানী পার হয়ে জাহাঙ্গীর গেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আসে। তারপর বিজয় সরণি, তেজগাঁও হয়ে পুনরায় ফ্লাইওভার দিয়ে মৌচাক হয়ে কাকরাইলে। কাকরাইল থেকে ফকিরাপুল-আরামবাগ। তারপর মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে পৌঁছায় বাফুফে ভবনে। সেখানে বাফুফে সভাপতি ও সাফ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন তাদের সংবর্ধনা দেন।
নারী সাফে আগের সব আসরের চ্যাম্পিয়ন ও এবারও ফেভারিট হয়ে আসা ভারতকে গ্রুপ পর্বেই উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। একের পর এক জয় ও প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষেও দাপুটে জয়ে শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ। সেই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাবিনা। ৮ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার তিনি, আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জেতেন তিনিই। বাংলাদেশ নারী ফুটবলের মুখ হয়ে ওঠা এই ফুটবলার আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন, অনেক পরিশ্রম ও পরিকল্পনার ফসল এই জয়। এবার তারা তাকাতে চান আরও উঁচুতে।
“আমাদের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন স্যার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, মন্ত্রী মহোদয়ের সহায়তায় ২০১২ সাল থেকে মহিলা ফুটবল ভালোভাবে চলছে। মেয়েদের পরিশ্রম যদি দেখেন, ৪-৫ বছরের সাফল্য দেখেন, এতেই সব বোঝা যায়।”
“সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমাদের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে সামনের দিকে আরও কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়।”
বিমানবন্দরে সাবিনাদের নিয়ে ছিল কেক কাটার পর্ব। দলের সবার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বাইরে দলকে বরণ করে নিতে অপেক্ষায় ছিল হাজারও জনতার স্রোত। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, ব্যানার। স্লোগানে মুখর ছিল চারপাশ। এক যুগের বেশি সময় ধরে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসা কোচ এবং এই সাফল্যের নেপথ্য কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটনও মুগ্ধ দেশে ফিরে এমন সংবর্ধনা পেয়ে।
“রাজসিক এই আয়োজনে আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের এই পথচলা অনেক দিনের। অনেক পেছন থেকে আমরা উঠে এসেছি, ২০১২ সাল থেকে পরিবর্তনটা শুরু হয়েছিল। সবার অবদানেই আজকের এই সাফল্য।” বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে সাজিয়ে রাখা ছাদখোলা বাসে উঠে যান দলের সবাই। পথজুড়ে দুই পাশে দেখা যায় জনতার ভিড়। নাত নাড়িয়ে গলা ফাটিয়ে তারা অভিবাদন জানান মেয়েদের। ট্রফি উঁচিয়ে, জাতীয় পতাকা উড়িয়ে অভিনন্দনের জবাব দেন সাবিনারা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বীর মেয়েদের জয়যাত্রা

আপডেট সময় : ০২:৩২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

ক্রীড়া প্রতিবেদক : সাফজয়ী বাংলার মেয়েরা দেশে ফিরেছেন। বুধবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর পরিকল্পনা মতো তাদের বরণ করে নেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বাফুফের কর্মকর্তারা। এ সময় কেক কেটে তাদের খাওয়ানোর পাশাপাশি ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তিনি ট্রফি উঁচিয়ে বলেছেন, ‘এই ট্রফি বাংলাদেশের ১৬ কোটি বলুন, ১৮ কোটি বলুন, সকল মানুষের।’ এ সময় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বরণ করে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি, ‘সকলকে ধন্যবাদ আমাদের এত সুন্দরভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য। আমরা কৃতজ্ঞ।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যদি চার-পাঁচ বছরের পরিশ্রম দেখেন তাহলে দেখবেন সেটার ফল এখন হাতে আছে।’
নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েই প্রথমবার নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। সাবিনা এসময় সবার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘এখানে যে মন্ত্রী মহোদয় ও আমাদের ফেডারেশনের স্যারেরা আছেন তাদের ধন্যবাদ। সাউথ এশিয়ার ভেতর ভালো অবস্থান করেছি। এখন সামনের দিকে কীভাবে যাওয়া যায়, সেই প্রচেষ্টা থাকবে। অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই বাফুফে প্রেসিডেন্ট সালাউদ্দিন স্যারকে। আমরা আসলে কৃতজ্ঞ সবার কাছে।’
ট্রফি নিয়ে ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়নরা : বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর সাফজয়ী বাংলার মেয়েরা সংবাদমাধ্যমে সংক্ষেপে কথা বলেন। তারপর সাফজয়ীদের নিয়ে দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে ছাদখোলা বাসের শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। এসময় তাদের ঘিরে রাখেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। রাস্তার দুই পাশে সাফজয়ীদের দেখে জনগণ হাত নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। সাবিনারাও হাসিমুখে হাত নেড়ে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখান। খোলা ছাদের বাসে সামনে ট্রফি হাতে ছিলেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তার পাশে সানজিদা, মাশুরা পারভীনরা। চ্যাম্পিয়নদের বাসটি বিমানবন্দর থেকে কাকলী-বনানী পার হয়ে জাহাঙ্গীর গেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আসে। তারপর বিজয় সরণি, তেজগাঁও হয়ে পুনরায় ফ্লাইওভার দিয়ে মৌচাক হয়ে কাকরাইলে। কাকরাইল থেকে ফকিরাপুল-আরামবাগ। তারপর মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে পৌঁছায় বাফুফে ভবনে। সেখানে বাফুফে সভাপতি ও সাফ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন তাদের সংবর্ধনা দেন।
নারী সাফে আগের সব আসরের চ্যাম্পিয়ন ও এবারও ফেভারিট হয়ে আসা ভারতকে গ্রুপ পর্বেই উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। একের পর এক জয় ও প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষেও দাপুটে জয়ে শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ। সেই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাবিনা। ৮ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার তিনি, আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জেতেন তিনিই। বাংলাদেশ নারী ফুটবলের মুখ হয়ে ওঠা এই ফুটবলার আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন, অনেক পরিশ্রম ও পরিকল্পনার ফসল এই জয়। এবার তারা তাকাতে চান আরও উঁচুতে।
“আমাদের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন স্যার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, মন্ত্রী মহোদয়ের সহায়তায় ২০১২ সাল থেকে মহিলা ফুটবল ভালোভাবে চলছে। মেয়েদের পরিশ্রম যদি দেখেন, ৪-৫ বছরের সাফল্য দেখেন, এতেই সব বোঝা যায়।”
“সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমাদের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে সামনের দিকে আরও কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়।”
বিমানবন্দরে সাবিনাদের নিয়ে ছিল কেক কাটার পর্ব। দলের সবার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বাইরে দলকে বরণ করে নিতে অপেক্ষায় ছিল হাজারও জনতার স্রোত। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, ব্যানার। স্লোগানে মুখর ছিল চারপাশ। এক যুগের বেশি সময় ধরে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসা কোচ এবং এই সাফল্যের নেপথ্য কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটনও মুগ্ধ দেশে ফিরে এমন সংবর্ধনা পেয়ে।
“রাজসিক এই আয়োজনে আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের এই পথচলা অনেক দিনের। অনেক পেছন থেকে আমরা উঠে এসেছি, ২০১২ সাল থেকে পরিবর্তনটা শুরু হয়েছিল। সবার অবদানেই আজকের এই সাফল্য।” বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে সাজিয়ে রাখা ছাদখোলা বাসে উঠে যান দলের সবাই। পথজুড়ে দুই পাশে দেখা যায় জনতার ভিড়। নাত নাড়িয়ে গলা ফাটিয়ে তারা অভিবাদন জানান মেয়েদের। ট্রফি উঁচিয়ে, জাতীয় পতাকা উড়িয়ে অভিনন্দনের জবাব দেন সাবিনারা।