ঢাকা ০৩:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

বিয়ে করে ধর্ষণ মামলায় অব্যাহতি পেলেন এসপি মোক্তার

  • আপডেট সময় : ০১:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • ১৩৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের এক নারী পরিদর্শককে ধর্ষণের মামলায় অব্যহতি পেয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেন। মামলার বাদী ওই পরিদর্শককে বিয়ে করায় অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।
গতকাল সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী মোক্তার হোসেনকে অব্যাহতি দেন। ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আফরোজা ফারহানা আহমেদ বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে বিয়ে করে আপস করেছেন আসামি। মামলার বাদী ও আসামি ট্রাইব্যুনালে আপসনামা দাখিল করায় বিচারক আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
অ্যাডভোকেট আফরোজা জানান, পুলিশের নারী পরিদর্শককে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি।
পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই মামলায় আজ (সোমবার) চার্জ গঠনের দিন ছিল। আমরা অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আবেদন করেছিলাম। পরে দেখলাম বাদী আদালতে এসে আপস মীমাংশার আবেদন করেছেন। পরে আদালত পিবিআইয়ের এসপি মোক্তার হোসেনকে এই মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
ট্রাইব্যুনালের একটি সূত্র জানায়, সোমবার মোক্তার হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। ভুক্তভোগী নারী ও মামলার বাদীও হাজির ছিলেন আদালতে। উভয়পক্ষ আদালতকে লিখিতভাবে জানায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তারা (বাদী-বিবাদী) আপস করে বিয়ে করেছেন।
মামলার বাদী জানান, আসামির জামিনে তার আপত্তি নেই। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মোক্তার হোসেনের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আসামির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন কাজী আমজাদ হোসেন। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান।
২০২১ সালের ১৩ আগস্ট পিবিআইয়ের এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ওই নারী পরিদর্শককে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের আদালতে মামলা করেন। পরে আদালত উত্তরা পূর্ব মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। উত্তরা পূর্ব মডেল থানার পরিদর্শক আলমগীর গাজী মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করেন। মামলায় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, মোক্তার হোসেন জাতিসংঘের শান্তি মিশনে পুলিশের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে যান। আর বাদী আগে থেকে মিশনের সদস্য হিসেবে সেখানে কর্মরত ছিলেন।
২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বাদীকে ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন। এই কথা কাউকে না বলার জন্য চাপ দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন কৌশল করে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে সুদান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন। মামলায় ভুক্তভোগী নারী কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, তিনি দেশে ফিরে এসপি মোক্তারের বাসায় গিয়ে বিয়ের কাবিননামা করার তাগিদ দেন। কিন্তু এসপি মোক্তার তাতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাকে মারধর করেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ে করে ধর্ষণ মামলায় অব্যাহতি পেলেন এসপি মোক্তার

আপডেট সময় : ০১:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের এক নারী পরিদর্শককে ধর্ষণের মামলায় অব্যহতি পেয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেন। মামলার বাদী ওই পরিদর্শককে বিয়ে করায় অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।
গতকাল সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী মোক্তার হোসেনকে অব্যাহতি দেন। ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আফরোজা ফারহানা আহমেদ বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে বিয়ে করে আপস করেছেন আসামি। মামলার বাদী ও আসামি ট্রাইব্যুনালে আপসনামা দাখিল করায় বিচারক আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
অ্যাডভোকেট আফরোজা জানান, পুলিশের নারী পরিদর্শককে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি।
পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই মামলায় আজ (সোমবার) চার্জ গঠনের দিন ছিল। আমরা অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আবেদন করেছিলাম। পরে দেখলাম বাদী আদালতে এসে আপস মীমাংশার আবেদন করেছেন। পরে আদালত পিবিআইয়ের এসপি মোক্তার হোসেনকে এই মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
ট্রাইব্যুনালের একটি সূত্র জানায়, সোমবার মোক্তার হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। ভুক্তভোগী নারী ও মামলার বাদীও হাজির ছিলেন আদালতে। উভয়পক্ষ আদালতকে লিখিতভাবে জানায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তারা (বাদী-বিবাদী) আপস করে বিয়ে করেছেন।
মামলার বাদী জানান, আসামির জামিনে তার আপত্তি নেই। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মোক্তার হোসেনের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আসামির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন কাজী আমজাদ হোসেন। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান।
২০২১ সালের ১৩ আগস্ট পিবিআইয়ের এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ওই নারী পরিদর্শককে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের আদালতে মামলা করেন। পরে আদালত উত্তরা পূর্ব মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। উত্তরা পূর্ব মডেল থানার পরিদর্শক আলমগীর গাজী মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করেন। মামলায় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, মোক্তার হোসেন জাতিসংঘের শান্তি মিশনে পুলিশের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে যান। আর বাদী আগে থেকে মিশনের সদস্য হিসেবে সেখানে কর্মরত ছিলেন।
২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বাদীকে ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন। এই কথা কাউকে না বলার জন্য চাপ দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন কৌশল করে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে সুদান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন। মামলায় ভুক্তভোগী নারী কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, তিনি দেশে ফিরে এসপি মোক্তারের বাসায় গিয়ে বিয়ের কাবিননামা করার তাগিদ দেন। কিন্তু এসপি মোক্তার তাতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাকে মারধর করেন।