ঢাকা ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

বিয়ের রাতেই ফিরে গেলেন নববধূ

  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বামীর বাড়ি গিয়েছিলেন নববধূ। তবে বরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় বিয়ের রাতেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে। বিয়ের দিনে কনে ও বরের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ তোলা তরুণীর দাবি, বিয়ের আশ্বাসে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গত সোমবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঘটেছে এমন ঘটনা। অভিযুক্ত সেলিম মিয়া (২৪) উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে ইশ্বরপুর গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তারের ছেলে স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। উচখিলা বাজারে মেসার্স সেলিম টেলিকম নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। জানা গেছে, সোমবার সেলিম বিয়ে করেন উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের সাখুয়া মাঝেরচর গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া এক ছাত্রীকে। তিন লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সেলিম বিয়ে করছেন- এমন খবরে প্রথমে কনে ও পরে বরের বাড়িতে গিয়ে হাজির হন এক তরুণী (১৯)। তিনি উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের একটি গ্রামের দিনমজুরের মেয়ে। একটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করার পর ২০১৮ সাল থেকে গাজীপুরের মাওনা এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করে অভাবের সংসারে হাল ধরেছেন এই তরুণী। জানা যায়, এক বছরের বেশি সময় আগে বাড়ির পাশের একটি মসজিদে মাহফিলের সুবাদে প্রতিবেশী বান্ধবীর স্বামীর মাধ্যমে সেলিমের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। এর পর বিয়ের আশ্বাসে মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সেলিম। এক পর্যায়ে তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আগামী জানুয়ারিতে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গত শুক্রবার গর্ভপাত করানো হয়। কিন্তু সোমবার সেলিমের বিয়ের খবর পান ওই তরুণী। পরে এই তরুণী সোমবার সন্ধ্যায় সেলিমের বিয়ের আসরের ঠিকানা নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু ততক্ষণে নববধূ নিয়ে বাড়ি চলে যান সেলিম। তখন নববধূর পরিবারটিকে বিস্তারিত জানিয়ে সেলিমের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন তিনি। এরপর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে তিন পরিবারের লোকজনকে নিয়ে সালিশ বসে। রাত ২টার দিকে নববধূকে তার পরিবারের লোকজন ফিরিয়ে নিয়ে যান। ৫ দিনের সময় দিয়ে সালিশ সমাপ্ত করা হয়। নির্যাতনের শিকার তরুণী জানান, তাকে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করেছে সেলিম। তার গর্ভের ৫ মাসের সন্তানকেও হত্যা করিয়েছে। এখন নতুন করে বিয়ে করে আরও একটি মেয়ের জীবন নষ্ট করতে যাচ্ছিলো। তার চাওয়া, যে ছেলে তার জীবন নষ্ট করেছে তার সঙ্গে তার বিয়ে দেয়া হোক। তা না করলে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।
অভিযুক্ত সেলিমের বাড়িতে ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মা আসমা বেগম বলেন, মেয়ে অনেক কিছু দাবি করলেও তার ছেলে অস্বীকার করছে। ওই সময় মেয়েটির সঙ্গে সেলিমের অন্তরঙ্গ কিছু ছবি দেখানো হলে তিনি এগুলো সাজানো দাবি করেন। তবে সেলিমের বাবা আবদুস সাত্তার বলেন, সমাজের লোকজন বিষয়টি হাতে নিয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাতেই তিনি রাজি। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল কাদের মিয়া বলেন, অভিযুক্তকে ধরতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ের রাতেই ফিরে গেলেন নববধূ

আপডেট সময় : ০১:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বামীর বাড়ি গিয়েছিলেন নববধূ। তবে বরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় বিয়ের রাতেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে। বিয়ের দিনে কনে ও বরের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ তোলা তরুণীর দাবি, বিয়ের আশ্বাসে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গত সোমবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঘটেছে এমন ঘটনা। অভিযুক্ত সেলিম মিয়া (২৪) উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে ইশ্বরপুর গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তারের ছেলে স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। উচখিলা বাজারে মেসার্স সেলিম টেলিকম নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। জানা গেছে, সোমবার সেলিম বিয়ে করেন উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের সাখুয়া মাঝেরচর গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া এক ছাত্রীকে। তিন লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সেলিম বিয়ে করছেন- এমন খবরে প্রথমে কনে ও পরে বরের বাড়িতে গিয়ে হাজির হন এক তরুণী (১৯)। তিনি উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের একটি গ্রামের দিনমজুরের মেয়ে। একটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করার পর ২০১৮ সাল থেকে গাজীপুরের মাওনা এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করে অভাবের সংসারে হাল ধরেছেন এই তরুণী। জানা যায়, এক বছরের বেশি সময় আগে বাড়ির পাশের একটি মসজিদে মাহফিলের সুবাদে প্রতিবেশী বান্ধবীর স্বামীর মাধ্যমে সেলিমের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। এর পর বিয়ের আশ্বাসে মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সেলিম। এক পর্যায়ে তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আগামী জানুয়ারিতে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গত শুক্রবার গর্ভপাত করানো হয়। কিন্তু সোমবার সেলিমের বিয়ের খবর পান ওই তরুণী। পরে এই তরুণী সোমবার সন্ধ্যায় সেলিমের বিয়ের আসরের ঠিকানা নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু ততক্ষণে নববধূ নিয়ে বাড়ি চলে যান সেলিম। তখন নববধূর পরিবারটিকে বিস্তারিত জানিয়ে সেলিমের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন তিনি। এরপর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে তিন পরিবারের লোকজনকে নিয়ে সালিশ বসে। রাত ২টার দিকে নববধূকে তার পরিবারের লোকজন ফিরিয়ে নিয়ে যান। ৫ দিনের সময় দিয়ে সালিশ সমাপ্ত করা হয়। নির্যাতনের শিকার তরুণী জানান, তাকে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করেছে সেলিম। তার গর্ভের ৫ মাসের সন্তানকেও হত্যা করিয়েছে। এখন নতুন করে বিয়ে করে আরও একটি মেয়ের জীবন নষ্ট করতে যাচ্ছিলো। তার চাওয়া, যে ছেলে তার জীবন নষ্ট করেছে তার সঙ্গে তার বিয়ে দেয়া হোক। তা না করলে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।
অভিযুক্ত সেলিমের বাড়িতে ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মা আসমা বেগম বলেন, মেয়ে অনেক কিছু দাবি করলেও তার ছেলে অস্বীকার করছে। ওই সময় মেয়েটির সঙ্গে সেলিমের অন্তরঙ্গ কিছু ছবি দেখানো হলে তিনি এগুলো সাজানো দাবি করেন। তবে সেলিমের বাবা আবদুস সাত্তার বলেন, সমাজের লোকজন বিষয়টি হাতে নিয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাতেই তিনি রাজি। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল কাদের মিয়া বলেন, অভিযুক্তকে ধরতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।