ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

বিশ বছর বয়সে কখনো ভাত খাননি লালমনিরহাটের রাব্বি

  • আপডেট সময় : ০৭:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রাব্বি ইসলাম -ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রাব্বি ইসলাম (২০) জন্মের পর থেকে ভাত খান না। তাঁর যখন ছয় মাস বয়স, তখন তাঁর মুখে ভাত দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মুখে নেননি। ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করলে বমি করে ফেলতেন। জোর করে ভাত খাওয়ালে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এ জন্য হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছিল তাঁকে। এর পর থেকে তিনি আর কখনো ভাত খাননি।

রাব্বি ইসলামের বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর গ্রামে। রাব্বির বাবা রমজান আলী ঝালমুড়ি বিক্রি করেন, মা ফরিদা বেগম গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাব্বি দ্বিতীয়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করছেন। রাব্বি শুধু ভাত নয়; বিরিয়ানি, পায়েস ও শাকসবজি খেতে পারেন না। এসব মুখে দিলেই তাঁর বমি আসে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত তিনি মায়ের বুকের দুধ ও গরুর দুধ খেতেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুটির পাশাপাশি নুডলস, ডিম, মুড়ি ও ফলমূল খেতে শুরু করেন। এখন বাড়িতে রান্না করা নুডলস, মাছ, মাংসের তরকারি তাঁর প্রধান খাবার।

ভাত খেতে না পারার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার জীবনে কোনো দিন ভাত খাইনি। ভাতের গন্ধ আমি সহ্য করতে পারি না। ভাত দেখলে কেমন বমি আসে। এখন বেশির ভাগ সময় নুডলস খাই ও এর সঙ্গে অন্যান্য খাবার খাই। তিন বেলার খাবার তালিকায় প্রায় দুই বেলা নুডলস থাকে। নুডলস আমার পচ্ছন্দের খাবার, খেতেও ভালো লাগে। আমি ভাত না খেয়েও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি।’

রাব্বির মা ফরিদা বেগম বলেন, জন্মের ছয় মাস বয়সে ছেলের মুখে যখন ভাত দেন, তখন সে বমি করে ফেলে দেয়। এরপর যতবার ভাত খাওয়াতে চেয়েছেন, সে কান্নাকাটি করত, বমি করত। অনেক চিকিৎসক দেখিয়েছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাঁদের সামান্য আয়ের সংসার। ভাতের বদলে অন্য কিছুর আয়োজন করলে খরচ বেড়ে যায়। তারপরও অন্য কিছু খাইয়ে ছেলেকে বড় করেছেন। রাব্বির বাবা রমজান আলীও একই কথা বলেন। রাব্বির প্রতিবেশী হামিদুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকে রাব্বিকে দেখছেন তিনি। তাঁকে কখনো ভাত খেতে দেখেননি তিনি।

এ বিষয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও পাটগ্রাম উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হারুন মিয়া বলেন, ‘রাব্বি ইসলাম নামের এক যুবক জন্মের পর থেকে ভাত খান না, এমনটা শুনেছি।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, এই ধরনের খাদ্যাভ্যাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। যে কেউ যেকোনো ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হতে পারেন। ভাত না খেয়েও যদি কেউ প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর অন্য খাবার খান, তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। সূত্র: প্রআ অনলাইন।

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ বছর বয়সে কখনো ভাত খাননি লালমনিরহাটের রাব্বি

আপডেট সময় : ০৭:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রাব্বি ইসলাম (২০) জন্মের পর থেকে ভাত খান না। তাঁর যখন ছয় মাস বয়স, তখন তাঁর মুখে ভাত দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মুখে নেননি। ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করলে বমি করে ফেলতেন। জোর করে ভাত খাওয়ালে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এ জন্য হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছিল তাঁকে। এর পর থেকে তিনি আর কখনো ভাত খাননি।

রাব্বি ইসলামের বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর গ্রামে। রাব্বির বাবা রমজান আলী ঝালমুড়ি বিক্রি করেন, মা ফরিদা বেগম গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাব্বি দ্বিতীয়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করছেন। রাব্বি শুধু ভাত নয়; বিরিয়ানি, পায়েস ও শাকসবজি খেতে পারেন না। এসব মুখে দিলেই তাঁর বমি আসে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত তিনি মায়ের বুকের দুধ ও গরুর দুধ খেতেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুটির পাশাপাশি নুডলস, ডিম, মুড়ি ও ফলমূল খেতে শুরু করেন। এখন বাড়িতে রান্না করা নুডলস, মাছ, মাংসের তরকারি তাঁর প্রধান খাবার।

ভাত খেতে না পারার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার জীবনে কোনো দিন ভাত খাইনি। ভাতের গন্ধ আমি সহ্য করতে পারি না। ভাত দেখলে কেমন বমি আসে। এখন বেশির ভাগ সময় নুডলস খাই ও এর সঙ্গে অন্যান্য খাবার খাই। তিন বেলার খাবার তালিকায় প্রায় দুই বেলা নুডলস থাকে। নুডলস আমার পচ্ছন্দের খাবার, খেতেও ভালো লাগে। আমি ভাত না খেয়েও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি।’

রাব্বির মা ফরিদা বেগম বলেন, জন্মের ছয় মাস বয়সে ছেলের মুখে যখন ভাত দেন, তখন সে বমি করে ফেলে দেয়। এরপর যতবার ভাত খাওয়াতে চেয়েছেন, সে কান্নাকাটি করত, বমি করত। অনেক চিকিৎসক দেখিয়েছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাঁদের সামান্য আয়ের সংসার। ভাতের বদলে অন্য কিছুর আয়োজন করলে খরচ বেড়ে যায়। তারপরও অন্য কিছু খাইয়ে ছেলেকে বড় করেছেন। রাব্বির বাবা রমজান আলীও একই কথা বলেন। রাব্বির প্রতিবেশী হামিদুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকে রাব্বিকে দেখছেন তিনি। তাঁকে কখনো ভাত খেতে দেখেননি তিনি।

এ বিষয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও পাটগ্রাম উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হারুন মিয়া বলেন, ‘রাব্বি ইসলাম নামের এক যুবক জন্মের পর থেকে ভাত খান না, এমনটা শুনেছি।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, এই ধরনের খাদ্যাভ্যাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। যে কেউ যেকোনো ধরনের খাবারে অভ্যস্ত হতে পারেন। ভাত না খেয়েও যদি কেউ প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর অন্য খাবার খান, তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। সূত্র: প্রআ অনলাইন।